Thursday, June 8, 2023
spot_img
Homeধর্মভাই-বোনের সম্পর্ক সুন্দর হয় যেভাবে

ভাই-বোনের সম্পর্ক সুন্দর হয় যেভাবে

ভাই-বোনরা হলো একই গাছের বর্ণিল ফল ও ফুলের মতো। সম্পর্কে তারা সবচেয়ে নিকটবর্তী এবং হৃদ্যতায় সবচেয়ে এগিয়ে। শৈশবের জীবনটুকু ভাই-বোনের সঙ্গেই কাটে। ঘর-বাড়ি, বিদ্যালয়, খেলার মাঠ, পড়ার টেবিল ও খাবারের দস্তরখান সব কিছুতেই তারা পরস্পরের সঙ্গী। ভাই-বোনের এই মধুর সম্পর্ক জীবনকে সুন্দর করে। আল্লাহ চান পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও সৌন্দর্য যেন রক্ষা পায়। তিনি বলেছেন, যে আত্মীয়দের সঙ্গে সত্ভাব রক্ষা করবে, আমিও তাঁর সঙ্গে সত্ভাব রক্ষা করব। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭৫০২)

যেভাবে ভাই-বোনের সম্পর্ক সুন্দর হয়

পরিবারে ভাই-বোনের বেড়ে ওঠা ও তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক যেন সুন্দর হয় এ জন্য ইসলাম নিম্নোক্ত নির্দেশনা দিয়ে থাকে।

১. শ্রদ্ধা-স্নেহের ভারসাম্য : যত ঘনিষ্ঠই হোক ভাই-বোনের মধ্যে বড়কে সম্মান ও ছোটকে স্নেহ করতে হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়, যে ছোটকে স্নেহ ও বড়কে সম্মান করে না।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৯১৯)

২. সদ্ব্যবহার : ভাই-বোন ও পরিবারের সদস্যরাই উত্তম আচরণের বেশি দাবি রাখে। সুতরাং ভাই-বোন পরস্পরের সঙ্গে বিনয়, অগ্রাধিকার প্রদান, সেবা, সহযোগিতা ও হৃদ্যতার সম্পর্ক রাখবে। কেননা আল্লাহর নবী (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে সেই উত্তম যে তার পরিবারের কাছে উত্তম। আমি আমার পরিবারের কাছে উত্তম ব্যক্তি।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৩৮৯৫)

৩. অন্যের জন্য ভালো চাওয়া : মুমিন নিজের জন্য যা পছন্দ করে, অন্যের জন্য তাই পছন্দ করে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ ততক্ষণ প্রকৃত মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না সে তার ভাইয়ের জন্য তাই পছন্দ করে, যা সে নিজের জন্য পছন্দ করে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৩)

৪. দুঃখ-সুখের অংশীদার হওয়া : ভাই-বোন পরস্পরের দুঃখ ও সুখের অংশীদার হবে। দুঃখের সময় নিছক সান্ত্বনা দেওয়া পুণ্যের কাজ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যেন পুণ্যের কাজকে অবজ্ঞা না করে। যদিও তা তার ভাইয়ের সঙ্গে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করা হোক।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৬২৬)

৫. সুপরামর্শ দেওয়া : ভাই-বোন পরস্পরের শুধু আপনজন নয়; বরং তারা পরস্পরের ভালো বন্ধুও। বন্ধু হিসেবে তারা কখনো কখনো পরস্পরের পরামর্শ চায়, কখনো তাদের সুপরামর্শ দেওয়ার প্রয়োজন হয়। সুপরামর্শ দেওয়া ভাই-বোনের দায়িত্ব। আল্লাহ বলেন, ‘তোমার পরিবারবর্গকে নামাজের নির্দেশ দাও এবং তাতে অবিচল থাকো।’ (সুরা তাহা, আয়াত : ১৩২)

৬. অন্যায় থেকে বাঁচিয়ে রাখা : ভাই-বোনের কেউ অন্যায় করলে যেমন বাধা দিতে হবে, তেমনি তার প্রতি অন্যায় হলেও প্রতিহত করতে হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমার ভাইকে সাহায্য কোরো, সে অত্যাচারী হোক বা অত্যাচারিত হোক। আনাস (রা.) বললেন, হে আল্লাহর রাসুল, অত্যাচারিতকে সাহায্য করব, তা তো বুঝলাম। কিন্তু অত্যাচারীকে কী করে সাহায্য করব? তিনি বললেন, তুমি তার হাত ধরে তাকে বিরত রাখবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৪৪৪)

৭. সম্পর্ক নষ্টকারী অভ্যাস পরিহার করা : মানুষের কিছু স্বভাব-চরিত্র পারস্পরিক সম্পর্ক নষ্ট করে। এমন স্বভাব-চরিত্র পরিহার করা আবশ্যক। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা (অধিক পরিমাণ) ধারণা করা থেকে বেঁচে থাকো। কেননা ধারণা করা হচ্ছে সবচেয়ে বড় মিথ্যা। কারো দোষ অনুসন্ধান কোরো না, দোষ বের করার জন্য গুপ্তচরবৃত্তি কোরো না, একে অন্যের হিংসা কোরো না, পরস্পরে সম্পর্কচ্ছেদ কোরো না। ভ্রাতৃবন্ধনে আবদ্ধ আল্লাহর বান্দাহ হয়ে যাও।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৭২৪)

আল্লাহ ভাই-বোনের সম্পর্কগুলোকে মধুর করে দিন। আমিন

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments