দেখতে অনেকটা ডিমের মতো। গ্যাস সিলিন্ডারও বলা যেতে পারে। তবে সত্যি সত্যি এটা বুলেটের মতোই। মার্কিন বিমান কোম্পানির সদ্য আনা অট্টো সেলেরা ৫০০এল মডেলের বিমান। নজরকাড়া ডিজাইনের চমকের চেয়েও বড় চমকপ্রদ খবর হচ্ছে ডিজেলচালিত ইঞ্জিনসমৃদ্ধ বিমানটি পরিবেশবান্ধব। জ্বালানি সাশ্রয়ী। এমনকি কার্বন নির্গমনও হবে প্রচলিত বিমানগুলোর তুলনায় অনেক কম।
এক কথায় কার্বন নিঃসরনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে বিমানটি। অট্টো অ্যাভিয়েশন জানিয়েছে, এই বিমানে ভ্রমণ করতে ঘণ্টায় খরচ পড়বে মাত্র ৩২৮ মার্কিন ডলার। যেখানে অন্যান্য বিমানে এই খরচ পড়ে দুই হাজার ১০০ মার্কিন ডলার। আর এর জ্বালানি সাশ্রয় আরও বিস্ময়কর। যেখানে অন্যান্য বিমানে এক গ্যালন জ্বালানিতে ভ্রমণ করা যায় দুই থেকে তিন মাইল, সেখানে এক গ্যালন জ্বালানিতে সেলেরা ৫০০এল চলবে ১৮ থেকে ২৫ মাইল। ভেতরের জায়গার উচ্চতা ৬.২ ইঞ্চি ।
এক ট্রিপে ভ্রমণ করতে পারবেন ছয়জন যাত্রী। ঘণ্টায় ৪৬০ মাইল গতি। টানা চলতে পারবে সাড়ে চার হাজার মাইল। অট্টো অ্যাভিয়েশনের সিইও উইলিয়াম অট্টো জুনিয়র বলেন, ‘এই বিমানের গ্রহণযোগ্যতা অন্যান্য টার্বোপ্রপ বিমানের চেয়ে চার থেকে পাঁচগুণ এবং জেট বিমানের তুলনায় সাত থেকে আট গুণ বেশি। বিমানটির ডিজাইন অন্যান্য বিমানের তুলনায় ৫৯ শতাংশ জ্বালানি ও কার্বন নির্গমন সাশ্রয়ী। ২০৩০ থেকে ২০৫০ সময়ের মধ্যে কার্বনশূন্যতার লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে এ ইঞ্জিন অনেকটাই এগিয়ে নেবে।’
ইঞ্জিনে লেমিনার প্রবাহের ফলে কম শক্তি খরচ হয়। এর পেছনে রয়েছে জার্মান কারিগরি প্রতিষ্ঠান আরইডির তৈরি ভি১২ ডিজেল ইঞ্জিন। নিকটভবিষ্যতে শূন্য কার্বন নির্গমনের প্রয়োজনে এয়ারোডাইনামিক বডির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এ ডিজেল ইঞ্জিন ইলেকট্রিক কিংবা হাইড্রোজেন ইঞ্জিনে পরিণত করা সম্ভব বলেও জানালেন উইলিয়াম অট্টো।
সেলেরা ৫০০এল ২০১৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত পরীক্ষামূলক কার্যক্রমে রয়েছে। এরই মধ্যে ৫০টি পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন সম্পন্ন করেছে এটি। নানারকম পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়েছে এর ইঞ্জিনের ধরন। প্রথম দিকে এটি ঘণ্টায় ১৮০ মাইল গতিতে ১৭ হাজার ফিট উপরে উড়তে পারত। কিন্তু এখন আরও দ্রুতগতিতে প্রায় ৪০ হাজার ফুট উপরে উড়তে পারে। ২০২৫ সালের মধ্যে বিমানটি বাজারজাতের আশা করছেন সিইও। সেই সঙ্গে তিনি আরও জানালেন, বিমানটির দাম ধরা হয়েছে ৫ মিলিয়ন ডলার।