ঝগড়া-বিবাদ অপছন্দনীয় কাজ। পরস্পর ঝগড়া-বিবাদ হলে তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দিতে বলেছে ইসলাম। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং তোমাদের পারস্পরিক সম্পর্ক শুধরে নাও। এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করো, যদি তোমরা প্রকৃত মুমিন হও।
(সুরা : আনফাল, আয়াত : ১)
ঝগড়া মেটানো উত্তম কাজ
প্রিয় নবী (সা.) ঝগড়া-বিবাদ মীমাংসা করাকে সবচেয়ে উত্তম আমল বলে আখ্যায়িত করেছেন। আবু দারদা (রা.) বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমি কি তোমাদের রোজা, নামাজ, সদকার চেয়েও ফজিলতপূর্ণ কাজের কথা বলব না? সাহাবায়ে কিরাম এ কথা শুনে অন্তরে আগ্রহ সৃষ্টি হলো এবং তারা বলেন, হ্যাঁ, অবশ্যই হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! তিনি বলেন, পরস্পরের মধ্যে মীমাংসা করা। আর পরস্পরের মধ্যে ঝগড়া বাধানো ধ্বংসের কারণ। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯১৯)
যেসব কাজ দ্বারা পরস্পরের ঝগড়া-বিবাদ ঘৃণা-বিদ্বেষ ও মনোমালিন্য দূর হয়ে যায় তা করার জন্য উৎসাহ দিয়েছেন। আর তা নামাজ, রোজা ও সদকা থেকে উত্তম বলে ঘোষণা করেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, প্রতিদিন যাতে সূর্য উদয় হয় (অর্থাৎ প্রত্যেক দিন) মানুষের প্রতিটি জোড়ার ওপর একটি করে সদকা আছে। (আর সদকা শুধু সম্পদ ব্যয় করাকেই বলে না; বরং) দুজন মানুষের মধ্যে তোমার মীমাংসা করে দেওয়াটাও সদকা। (মুসলিম, হাদিস : ২২২৫)
যেভাবে নেক আমল নষ্ট হয়
ঝগড়ার মাধ্যমে মানুষ দ্বিন থেকে ধীরে ধীরে দূরে সরে পড়ে। আর অন্তর থেকে সত্যের আলো হ্রাস পেতে থাকে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, তোমরা পরস্পর বিদ্বেষ সৃষ্টি থেকে বিরত থাকবে, কেননা এটাই হলো দ্বিন ধ্বংসকারী বিষয়। (তিরমিজি, হাদিস : ২৫১০)
মীমাংসার জন্য মিথ্যা বলা
মিথ্যা বলা ইসলামে একটি জঘন্যতম পাপ। কিন্তু ঝগড়া মিটিয়ে দেওয়ার জন্য যদি কিছু মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া লাগে সে ক্ষেত্রে ইসলামে ছাড় দেওয়া হয়েছে। উম্মু কুলসুম বিনতে ওকবাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি আল্লাহর রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছেন, ওই ব্যক্তি মিথ্যাচারী নয়, যে মানুষের মধ্যে মীমাংসা করার জন্য ভালো কথা পৌঁছে দেয় কিংবা ভালো কথা বলে। (বুখারি, হাদিস : ২৬৯২)