Saturday, July 27, 2024
spot_img
Homeলাইফস্টাইলবিপাকের সমস্যা থেকে হতে পারে ফ্যাটি লিভার

বিপাকের সমস্যা থেকে হতে পারে ফ্যাটি লিভার

ফ্যাটি লিভার রোগ, এটি হেপাটিক স্টেটোসিস নামেও পরিচিত। এটি এক ধরনের বিপাকীয় সমস্যা, যেখানে লিভারের কোষে অতিরিক্ত চর্বি জমা হয়। এ রোগটি প্রধানত দু’ধরনের হতে পারে- অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ এবং নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ।

* কারণ

নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ-এর কারণগুলো প্রধানত জীবনযাত্রা এবং বিপাকীয় সিনড্রোমের সঙ্গে সম্পর্কিত। মূল কারণগুলো হলো-

▶ দৈহিক স্থূলতা : শরীরে অতিরিক্ত ফ্যাট জমে গেলে লিভারেও ফ্যাট জমা বাড়ে।

▶ টাইপ ২ ডায়াবেটিস : ইনসুলিন রেজিস্টান্সের কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে লিভারে ফ্যাট জমা হতে পারে।

▶ বিপাকীয় সিনড্রোম : উচ্চরক্তচাপ, উচ্চ ট্রাইগ্লিসারাইড, নিম্ন এইচডিএল কোলেস্টেরলসহ অন্যান্য বিপাকীয় সমস্যা।

▶ পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম : নারীদের মধ্যে হরমোনাল অস্বাভাবিকতা, যা ওজন বাড়িয়ে দিতে পারে।

▶ অসামঞ্জস্যপূর্ণ খাদ্যাভ্যাস : উচ্চ-ক্যালরি, উচ্চ-ফ্যাট এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার অতিরিক্ত সেবন করলে।

▶ জেনেটিক কারণ : পারিবারিক ইতিহাসে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ বা অন্যান্য লিভারের রোগ থাকলে এর ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।

* করণীয়

রোগটি প্রতিরোধে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে-

▶ ওজন কমানো : স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন কমানো গুরুত্বপূর্ণ।

▶ খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন : শাকসবজি, ফলমূল, পুরো শস্য এবং লিন প্রোটিনের ওপর ভিত্তি করে একটি ব্যালেন্সড ডায়েট গ্রহণ করা।

▶ ক্যালরি নিয়ন্ত্রণ : প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণ না করা।

▶ নিয়মিত ব্যায়াম : সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট মাঝারি মাত্রার অ্যারোবিক ব্যায়াম করা উচিত। যেমন হাঁটা, সাইক্লিং, সাঁতার ইত্যাদি।

▶ রেজিস্ট্যান্স এক্সারসাইজ : ওজন উত্তোলন বা রেজিস্ট্যান্স ব্যান্ড ব্যবহার।

* ডায়াবেটিস এবং চর্বি নিয়ন্ত্রণ

▶ রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ : ওষুধ, ইনসুলিন বা ডায়েটের মাধ্যমে এটি করা যায়।

▶ লিপিড প্রোফাইল নিয়ন্ত্রণ : ওষুধ বা খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে রক্তের লিপিড নিয়ন্ত্রণ করা।

* জীবনযাত্রার পরিবর্তন

ধূমপান পরিহার করতে হবে। অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন লিভারের ওপর চাপ বাড়ায়। প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করতে হবে।

* চিকিৎসা ও মনিটরিং

নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করা। নিয়মিত লিভার এনজাইম চেক করা। প্রয়োজনে লিভারের অবস্থা নির্ণয়ের জন্য ইমেজিং এবং বায়োপসি করা।

* মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা

মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য মেডিটেশন, যোগব্যায়াম বা অন্য কোনো রিলাক্সেশন টেকনিক ব্যবহার করা।

সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করলে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ-এর ঝুঁকি হ্রাস করা সম্ভব। একজন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর সঙ্গে পরামর্শ করে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য পরিস্থিতি অনুযায়ী সঠিক ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা করা উচিত।

লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, হরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ, এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments