Friday, December 1, 2023
spot_img
Homeকমিউনিটি সংবাদ USAবিচারকের সঙ্গে ট্রাম্পের বাকবিতণ্ডা

বিচারকের সঙ্গে ট্রাম্পের বাকবিতণ্ডা

সোমবার নিউ ইয়র্কে সুপ্রিম কোর্টের আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়ানো যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে বিচারক আর্থার ইঙ্গোরনের সঙ্গে বিতণ্ডায় লিপ্ত হলেন তিনি। তার বক্তব্যের কারণে বিচারক এক পর্যায়ে ট্রাম্পকে বলতে বাধ্য হলেন- এটা কোনো রাজনৈতিক সমাবেশ নয়। অন্যদিকে জবাবে ট্রাম্প বলেছেন, আমার ব্রান্ডের কারণে প্রেসিডেন্ট হয়েছিলাম। বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর দিয়েছে। এতে বলা হয়, ট্রাম্প তার রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় প্রতারণা করেছিলেন বলে মামলা চলমান। সেই মামলায় সোমবার তিনি আদালতে হাজিরা দেন। এ সময় বিচারকের সঙ্গে বার বার কথা কাটাকাটি হয় তার। বিচারক ইঙ্গোরন তাকে প্রশ্নের জবাব সংক্ষিপ্ত করার পরামর্শ দেন। বলেন, অনুগ্রহ করে বক্তব্য না দিয়ে শুধু প্রশ্নের উত্তর দিন।

এক পর্যায়ে তিনি ট্রাম্পের আইনজীবী ক্রিস্টোফার কিসে’কে অনুরোধ করেন তার মক্কেলকে (ট্রাম্প) নিয়ন্ত্রণ করতে। 

কমপক্ষে এক শতাব্দীর মধ্যে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়ানো যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রথম প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। তার বিরুদ্ধে দেয়া সাক্ষ্যকে তিনি খুবই অন্যায্য এবং বিচারককে ডেমোক্রেটদের আনা ‘ক্রেজি ট্রায়াল’ বলে অভিহিত করেন। বলেন, ১৫টি বিভিন্ন দিক থেকে এসব করা হচ্ছে। ৭৭ বছর বয়সী ট্রাম্প এদিন ছিলেন গাঢ় নীল পোশাক পরা। গলায় ছিল টাই। যুক্তরাষ্ট্রের পতাকাযুক্ত ল্যাপেল ছিল। সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টার পর পরই তাকে সাক্ষ্য দেয়ার জন্য শপথ পড়ানো হয়। রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় শত শত কোটি ডলারের সম্পদ বাড়িয়ে দেখিয়ে ব্যাংকের ঋণ এবং ইন্সুরেন্স পাওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত ট্রাম্প, তার বড় ছেলে ডনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র, এরিক ট্রাম্প ও ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের অন্যান্য নির্বাহীরা। 

শপথের অধীনে সাক্ষ্য দেন ট্রাম্প। তার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন। তার কোম্পানির বিরুদ্ধে যে আর্থিক বিবৃতি দেয়া হয়েছে তা প্রতারণাপূর্ণ বলে দাবি করেন তিনি। বলেন, যেসব ডকুমেন্ট দেখানো হয়েছে তা বাস্তব নয়। এসব বিষয়ে ব্যাংকগুলো অধিক মনোযোগ দিয়েছিল। এমনকি তার রিয়েল এস্টেটের সম্পদের মূল্য নির্ধারণে ট্রাম্প ব্রান্ডকে ধরা হয়নি বলেও তিনি দাবি করেন। নিউ ইয়র্কের এটর্নি জেনারেলের অফিসের আইনজীবী কেভিন ওয়ালেসের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, আমার ব্রান্ডের কারণে আমি প্রেসিডেন্ট হয়েছিলাম। 

কাঠগড়ায় দাঁড়ানোর আগে ট্রাম্প আদালতের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ‘নির্বাচনী হস্তক্ষেপে’র নিন্দা জানান তিনি। বলেন, এটা খুব খারাপ একটি অবস্থা। এসব ঘটনা ঘটে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে এবং ব্যানানা রিপাবলিকে। ট্রাম্প সেখানে পৌঁছার আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নিউ ইয়র্কের এটর্নি জেনারেল লেতিতিয়া জেমস। তিনি বলেন, সাবেক এই প্রেসিডেন্ট তার সম্পদের মূল্য ভুলভাবে তুলে ধরেছেন এবং তার মূল্য বাড়িয়ে দেখিয়েছেন। তিনি কাঠগড়ায় আসার আগে আমি নিশ্চিত বিভিন্ন নাম ধরে কথা বলবেন। একে জাদুবিদ্যা বলে অভিহিত করবেন। কিন্তু দিনশেষে একটিই বিষয় তা হলো সত্য। 

লেতিতিয়া কৃষ্ণাঙ্গ। এ জন্য বার বার তাকে বর্ণবাদী বলে আক্রমণ করেন ট্রাম্প। একই সঙ্গে বিচারক ইঙ্গোরনের সঙ্গে তর্কে লিপ্ত হন। বলেন, বিচারক মানসিক ভারসাম্যহীন। ট্রাম্পকে ঘৃণা করা উগ্র বামপন্থি, ডেমোক্রেটের অপারেটিভ। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিচারকের একজন কেরানির বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানোর জন্য ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যে গ্যাগ অর্ডার দিয়েছিলেন বিচারক, তা লঙ্ঘন করার জন্য তাকে ১৫০০০ ডলার জরিমানা করেন বিচারক ইঙ্গোরন। 

ওয়াশিংটন পোস্টের মতে, এর আগে সর্বশেষ প্রকাশ্যে আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট থিওডর রুজভেল্ট। তা সেই ১৯১৫ সালে। তারপর ট্রাম্পের ক্ষেত্রে সেই ঘটনা ঘটছে। এরই মধ্যে দু’বার তিনি আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। উভয় ক্ষেত্রেই রুদ্ধদ্বার শুনানি হয়।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments