আল্লাহ বান্দাকে ভালোবাসেন, ভালোবাসার প্রতিদান দেন। আল্লাহ ভালোবাসেন বান্দার বিশেষ কিছু কাজ, তেমনি অপছন্দ করেন তার কিছু মন্দ কাজকে। সব সৃষ্টির জন্য আল্লাহর দয়া ও ভালোবাসা বিদ্যমান। কিন্তু যারা আল্লাহকে ভালোবাসে, আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করে এবং তাঁর নৈকট্য অর্জনের জন্য ভালো কাজ করে তাদের জন্য আছে আল্লাহর ভালোবাসার বিশেষ স্তর।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা সৎকাজ করো, আল্লাহ সৎকর্মপরায়ণ লোককে ভালোবাসেন। ’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৯৫)
আল্লাহ বান্দাকে ভালোবাসেন এবং বান্দাও আল্লাহকে ভালোবাসে, তবে আল্লাহর ভালোবাসা তাঁর শান ও মর্যাদা অনুযায়ী হয়ে থাকে। আল্লাহর ভালোবাসায় প্রতিদান বা প্রতিফলের কোনো প্রত্যাশা থাকে না। বিপরীতে বান্দা যখন তার সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে আল্লাহকে ভালোবাসে, তখন আল্লাহ তাঁর শান অনুযায়ী তাকে প্রতিদান ও পুরস্কারে ধন্য করেন। কখনো তা প্রকাশ পায় নেতৃত্ব ও বিজয়ের মাধ্যমে। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা! তোমাদের মধ্যে কেউ দ্বিন থেকে ফিরে গেলে নিশ্চয়ই আল্লাহ এমন এক সম্প্রদায় নিয়ে আসবেন যাদের তিনি ভালোবাসবেন এবং যারা তাঁকে ভালোবাসবে; তারা মুমিনদের প্রতি কোমল ও অবিশ্বাসীদের প্রতি কঠোর হবে। ’ (সুরা: মায়েদা, আয়াত : ৫৪)
খায়বারের অভিযানের সময় আলী ইবনে আবি তালিব (রা.) সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেন, ‘আগামীকাল এমন ব্যক্তির হাতে পতাকা তুলে দেব আল্লাহ যার মাধ্যমে বিজয় দান করবেন। যে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে ভালোবাসে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুল তাকে ভালোবাসে। ’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩০০৯)
বান্দা তার আনুগত্য ও নেক আমলের মাধ্যমে আল্লাহর ভালোবাসার যোগ্য হয়। কোরআনের একাধিক আয়াত ও হাদিসে আল্লাহর পছন্দের ও অপছন্দের কাজগুলো বর্ণনা করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাকারীকে ভালোবাসেন এবং যারা পবিত্র থাকে তাদেরকেও ভালোবাসেন। ’ (সুরা: বাকারা, আয়াত : ২২২)
অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের ভালোবাসেন। ’ (সুরা: আলে ইমরান, আয়াত : ১৪৬)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ মুত্তাকি, অমুখাপেক্ষী ও গোপনে ইবাদতকারীকে ভালোবাসেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৯৬৫)
একইভাবে আল্লাহ তাঁর অসন্তুষ্ট হওয়ারও কারণগুলো বলে দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ অত্যাচারীদের ভালোবাসেন না। ’ (সুরা: আলে ইমরান, আয়াত : ১৪০)
অন্য আয়াকে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ বিশ্বাস ভঙ্গকারী পাপীকে ভালোবাসেন না। ’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ১০৭)
আল-মাউসুয়াতুল আকাদিয়া