ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়ার মুদ্রা রুবলের রেকর্ড পতন হয়েছিল। ইউক্রেন অভিযানের প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়ার ওপর চাপিয়ে দেওয়া পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে ডলারের বিপরীতে রুবলের দাম হয়েছিল ১২১.৫। সেই ঘটনা ১৯৯৮ সালে রাশিয়ার অর্থনৈতিক সংকটের স্মৃতি হয়ে করিয়ে দিচ্ছিল।
এমনকি রুবলের এই দরপতন দেখে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বিদ্রুপ করে বলেছিলেন, রুবলের মান পড়ে গিয়ে ‘ধ্বংস্তূপে’ পরিণত হয়েছে।
তবে বাইডেনের কথা এখন ফাঁকা বুলিই মনে হচ্ছে। কারণ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেন অভিযানের আগে রুবলের দর যা ছিল, সেই দরে পৌঁছে গেছে। বুধবার প্রতি ডলারের বিপরীতে রুবলের দাম ছিল ৭৯.৭।
তাই এই বিষয়টি এখন স্পষ্ট যে, রাশিয়ার সরকার আর ধনকুবেরদের ওপর শত বিধিনিষেধের পরও যদি রাশিয়া তেল ও গ্যাস বিক্রি অব্যাহত থাকে তাহলে এসব নিষেধাজ্ঞা অনেকটা ফাঁকা বুলি হিসেবে পরিণত হবে। আর পুতিনের কোষাগারই রুবলে পূর্ণ হয়ে উঠবে।
রাশিয়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিশ্ব অর্থনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন থাকলেও দেশটি এই বছর জ্বালানি রপ্তানি থেকেও প্রায় ৩২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করবে, যা ২০২১ থেকে এক তৃতীয়াংশেরও বেশি বলে ব্লুমবার্গ ইকোনমিকস আশা করছে।
এদিকে, রুবলের এই দ্রুত ঘুরে দাঁড়ানো পুতিনকে রাশিয়ায় একটি বড় বিজয় এনে দেবে। কারণ রুবলের উত্থান-পতন বন্ধ হলে জনগণের মধ্যে স্থিরতা আসবে।
জেনারেলি ইন্স্যুরেন্স অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের একজন জ্যেষ্ঠ উদীয়মান-বাজার কৌশলবিদ গুইলাম ট্রেসকা বলেছেন, নিষেধাজ্ঞার কোনো প্রভাব নেই এটা প্রমাণ করা রাজনীতিবিদদের জন্য সবচেয়ে ভালো জনসংযোগ কৌশল। এছাড়া এটা মুদ্রাস্ফীতির প্রভাবকে সীমিত করতে সাহায্যও করবে।
বিশ্লেষকদের মতে, ইউক্রেন যুদ্ধের ফলাফল যাই হোক না কেন, রুবলের এই উত্থার রাশিয়ায় পুতিনের অবস্থান শক্ত করবে নিঃসন্দেহে।