Friday, March 29, 2024
spot_img
Homeকমিউনিটি সংবাদ USAবাংলাদেশের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবিতে নিউইয়র্কে প্রবাসীদের সমাবেশ

বাংলাদেশের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবিতে নিউইয়র্কে প্রবাসীদের সমাবেশ

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে ৫০ হাজার মানুষসহ বাংলাদেশের মাটিতে ত্রিশ লাখ বাঙালিকে হত্যা ও প্রায় চার লাখ নারীকে নির্যাতন করে পাকিস্তানি বাহিনী। কিন্তু এ গণহত্যার কোনো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মেলেনি এখনো। ২৫ মার্চকে জাতিসংঘে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতির দাবিতে বিশ্বের রাজধানীখ্যাত নিউইয়র্কের টাইম স্কয়ারে এক সমাবেশের আয়োজন করেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশিরা। স্থানীয় সময় শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকালে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

গত জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের অধিবেশনে ৩ নম্বর এজেন্ডায় ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় সংঘটিত পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠীর নৃশংস জেনোসাইড নিয়ে আলোচ্যসূচি থাকলেও ওই অধিবেশনে তা উত্থাপিত হতে পারেনি।

নেদারল্যান্ডসে বসবাসরত বাংলাদেশের প্রবাসী সংগঠন Bangladesh Support Group (BASUG) উদ্যোগটি নিয়েছিল। সময় স্বল্পতার কারণে ইস্যুটি শেষ পর্যন্ত আলোচিত হয়নি। আমরা একাত্তর, প্রজন্ম একাত্তর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রকল্প, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, উত্তর বাংলা জাদুঘরসহ দেশের বেশ কয়েকটি সংগঠন বিষয়টিতে নজর রাখে।

এই সম্মিলিত প্রচেষ্টার অর্জন হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের ৫১ বছর পর জাতিসংঘ বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে। এর ধারাবাহিকতায় ২১ সেপ্টেম্বর থেকে ৭ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ৫১তম অধিবেশনের ৩ নম্বর এজেন্ডায় ইস্যুটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ইআরটিএ, আমরা একাত্তর ও প্রজন্ম একাত্তরের সম্মিলিত আবেদনে এ এজেন্ডা পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়েছে।

শুক্রবার নিউইয়র্কের টাইম স্কয়ারে অনুষ্ঠিত সমাবেশের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ডাকসুর সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহবুব জামান।  চিত্রাংকন পর্বের উদ্বোধন করেন সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ। স্বাগত বক্তব্য দেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের মিথুন আহমেদ। ঘোষণাপত্র পাঠ করেন আশরাফুল হাসান বুলবুল, লুৎফুন্নাহার লতা, সুব্রত বিশ্বাস, মুজাহিদ আনসারী, মিনজাহ আহমেদ শাম্মু, সেমন্তি ওয়াহেদ প্রমুখ।

বক্তব্য রাখেন ডা. ফেরদৌস খন্দকার, শরাফ সরকার, আল আমিন বাবু, তাজুল ইমাম, আব্দুল বাতিন, রেজাউল বারী বকুল, নিনি ওয়াহেদ, ফাহিম রেজা নুর, ওবায়দুল্লাহ মামুনসহ অনেকেই।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাঙালির মুক্তির আন্দোলনের শ্বাসরোধ করতে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে এ দেশের নিরস্ত্র মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামের সেই অভিযানে কালরাতের প্রথম প্রহরে ঢাকায় চালানো হয় গণহত্যা। পাকিস্তানি বাহিনীর সেই নৃশংসতার পর রুখে দাঁড়িয়েছিল বাঙালি, স্বাধীনতার জন্য শুরু হয়েছিল সশস্ত্র সংগ্রাম। নয় মাস যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর এসেছিল স্বাধীনতা।

২০১৭ সালে জাতীয় সংসদে ২৫ মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবস পালনের প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হওয়ার পর থেকে রাষ্ট্রীয়ভাবে এ দিবস পালিত হয়ে আসছে। দিবসটি আন্তর্জাতিকভাবে পালনের দাবি রয়েছে বাংলাদেশের, কিন্তু সেই স্বীকৃতি আজও মেলেনি।

বীর মুক্তিযোদ্ধা তাজুল ইমামের নেতৃত্বে শিল্পীরা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক চিত্র অংকন করেন। সমন্বয়ে ছিলেন- সনজীবন কুমার, জাকির হোসেন বাচ্চু। গণজাগরণ মঞ্চের জাকির আহমেদ রনি, মহিলা পরিষদের সুলেখা পাল, উদীচীর হিরো চৌধুর, প্রোগ্রেসিভ ফোরামের আলীম উদ্দিন, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের লাভলু আনসার ও রাশেদ আহমেদ। 

নতুন প্রজন্মের শিশু-কিশোররা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ গড়ার শপথ গ্রহণ এবং বিশাল ক্যানভাসে লাল-সবুজ রংয়ের হাতের ছাপচিত্র দেয়। সমাবেশে জাতীয় সংগীত পরিবেশনসহ মুক্তিযুদ্ধের সময়ের স্লোগান দেওয়া হয়।

ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, আর্র্টিস ফোরাম, শেখ রাসেল ফাউন্ডেশন, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, জেনোসাইড একাত্তর, গণজাগরণ মঞ্চ, আমরা একাত্তর, প্রগ্রেসিভ ফোরাম, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, একুশে চেতনা পরিষদ, প্রজন্ম একাত্তরসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ১৬টি সংগঠন উক্ত সমাবেশের আয়োজন করে।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments