করোনা মহামারির মধ্যেই দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় বড় ক্ষতির মুখে দেশের কৃষিখাত। প্রায় ২ লাখ ৫৭ হাজার ১৪৮ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টাকার অংকে ক্ষতির পরিমাণ ১৩ হাজার ২৩ কোটি টাকা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনায় মানুষের বেকারত্ব ঘোচাতে কৃষিতে নজর দেয়া জরুরি সেই সঙ্গে বন্যা পরবর্তী ফসল উৎপাদনে চাহিদামতো প্রণোদনা দিতে হবে। কৃষিমন্ত্রী জানান, প্রণোদনার উদ্যোগ ও জমি তৈরির কাজ শুরু হয়েছে।মার্চ মাস থেকে করোনাভাইরাসের কারণে অর্থনৈতিক সংকটে সাধারণ মানুষ। মরার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মত মহামারির মধ্যেই কয়েক দফায় দীর্ঘমেয়াদি বন্যার কবলে পরে দেশ।তিন দফার বন্যায় ৩৭ টি জেলায় ১ হাজার ৩২৩ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ২ লাখ ৫৭ হাজার ১৪৮ হেক্টর জমির ফসল বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ১২ লাখ ৭২ হাজার ১৫১ জন কৃষক।৩২ হাজার ২১৩ হেক্টর জমির ৩৩৪ কোটি টাকার আউশ ধান, ৭০ হাজার ৮২০ হেক্টর জমির ৩৮০ কোটি টাকার আমন ধান এবং ৭ হাজার ৯১৮ হেক্টর জমির আমন বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ২৩৫ কোটি টাকার সবজি এবং ২১১ কোটি টাকার পাটের ক্ষতি হয়েছে।করোনায় কাজ হারিয়ে শহর থেকে গ্রামে ফিরেছেন অনেকে। তাদেরকে কৃষিখাতে যুক্ত করতে পারলে সমস্যা থেকে কিছুটা উত্তরোণ সম্ভব বলে মনে করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ গওহর নঈম ওয়ারা।তিনি বলেন, বিশ্বের সব দেশ যেটা চেষ্টা করছে তাদের দৃষ্টি কৃষির দিকে আনতে। কৃষিই তাদের আবার আগের স্থানে ফিরিয়ে আনতে পারবে। আমাদেরও করোনার পরিস্থির পরবর্তির কর্মসূচি নিতে হবে কৃষিকেন্দ্রীক।তিনি আরও বলেন, জরুরি ভিত্তিতে জমি প্রস্তুত, প্রণোদনা ও সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করা উচিত বলে আমি মনে করি। আমরা যদি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিকে হাজার হাজার কোটি কাটা ঋণ দিতে পারি। তাহলে কৃষককে কেন দিতে পারব না।কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আর্থিক সহায়তার পাশপাশি, বিকল্প বীজতলা তৈরি ও ক্ষতিগ্রস্ত জমিতে বিকল্প ফসলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমাদের কর্মকর্তারা অনেক পরিশ্রম করছে। তারা কৃষকের কাছে যাচ্ছে এবং কৃষকদের বোঝচ্ছে তারা যেন তারাতারি ধান লাগানো শুরু করে। এক কেজি ধানের বীজ বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপরেশন যে দামে বিক্রি করত তার থেকে ২৫ ভাগ কম দামে বিক্রি করছে।এ বছর কৃষকরা ধানের ভালো দাম পাবে বলে আশাবাদি কৃষিমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে ধানে দাম বেশ ভালো। ধানের দাম নিয়ে তেমন কোনও সমস্যা নেই।করোনা পরবর্তী সময় দেশের তরুণ সমাজকে কৃষি কাজে উদ্বুদ্ধ করতে পরিকল্পনা নিয়েছে কৃষি মন্ত্রনালয়।