জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সবশেষ ওয়ানডে ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ দল। অধিনায়ক হিসেবে সেটিই ছিল মাশরাফি বিন মুর্তজার শেষ ম্যাচ। দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবালের কাঁধে তুলে দেয়া হয় ওয়ানডে দলের নেতৃত্ব। সামনে মিশন ছিল পাকিস্তান ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে নয়া অধিনায়কের আর মাঠে নামা হয়নি। আবার কবে তিনি ওয়ানডে খেলবেন তাও এখনো নিশ্চিত নয়। তবে অক্টোবরে দেশের হয়ে টেস্ট খেলার সুযোগ তার সামনে। ৫ মাস গৃহবন্দি থাকার পর রোববার অনুশীলনে ফিরেছেন তামিম ইকবাল।
বিসিবি’র ব্যবস্থাপনায় ব্যক্তিগত অনুশীলনে গতকাল দ্বিতীয় দিনেও মাঠে ঘাম ঝরান তিনি। অনুশীলনের ফাঁকে সংবাদ মাধ্যমকে দেন ভিডিও বার্তাও। ওয়ানডে অধিনায়ক জানিয়েছেন চার মাস তিনি খুব চাপে ছিলেন। এবার তা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর সময় হয়েছে। তামিম বলেন, ‘আসলে এই তিন চার মাস অনেক কঠিন ছিল। হয়তো বা আমরা বাসায় ছিলাম, পরিবারের সঙ্গে ছিলাম, মানসিক একটা চাপের মধ্য দিয়ে গিয়েছি। বাসা থেকে বের হতে পারছিলাম না। নরমালি একটা ট্যুর থেকে এসে ৭-৮ দিনের একটা ছুটি পাই। আমরা অনেক জায়গায় যেতে পারি বা কিছু করতে পারি। এই চার মাস স্বাস্থ্য ইস্যুতে চিন্তিত ছিল পরিবারের সদস্যরা। এই চার মাস অনেক কঠিন ছিল। এখন ফাইনালি যে জিনিসটা আমরা পছন্দ করি, খেলাধুলা সেটা শুরু হয়েছে। যেটা অনেক ভালো ব্যাপার।’
করোনার কারণে বাসায় যে তামিম শুধু শুয়ে-বসে কাটিয়েছেন তা নয়। জিম করেছেন, যতটুকু সম্ভব নিজেকে ফিট রাখার চেষ্টা করেছেন। তবে সেগুলোর সঙ্গে মাঠের তুলনা করতে চান না তিনি। কারণ তার কাছে মাঠের বিষয়টাই ভিন্ন। তাই সোজা জানিয়ে দিয়েছেন মানিয়ে নিতে সময় লাগবে। তামিম বলেন, ‘আসলে অনেকদিন পর অনুশীলন করলাম, প্রায় ৪-৫ মাস পর। ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে যতটা হতাশার হবে মনে করছিলাম আশ্চর্যজনকভাবে অতটা খারাপ মনে হয়নি আমার কাছে। ব্যাটিংটা মোটামুটি ঠিকই আছে। ফিটনেসের দিক থেকেও মোটামুটি ভালো আছে। কিন্তু ট্রেডমিল বলেন, বাসায় যত অ্যাক্টিভিটিজ করি তার চাইতে রোদে বা মাঠে করাটা ভিন্ন ব্যাপার। মানিয়ে নিতে হয়তো আরও সপ্তাহ খানেক লাগবে।’ সেই সঙ্গে তামিম ইতিবাচক। কারণ সামনে একটা লক্ষ্য আছে। শ্রীলঙ্কায় তিন টেস্টের মিশন। তাই সেরা প্রস্তুতি নিতে পারবেন বলেই মনে করেন। তিনি বলেন, ‘যেভাবে নিয়ম মেনে সবকিছু করছি আমরা, আমার কাছে খুবই ইতিবাচক লাগছে। আশা করি এভাবে এগোতে থাকবো। সঙ্গে আমাদের যেহেতু একটা তারিখ আছে, আমরা জানি আমাদের খেলা কখন শুরু হবে তো সবাই সবার মতো প্রস্তুতি নিচ্ছে সেরাটার জন্য।’
সব ঠিক থাকলে মুমিনুল হক সৌরভের নেতৃত্বে সেপ্টেম্বরের শেষদিকে দেশ ছাড়বে বাংলাদেশ দল। তার আগে দেশের মাটিতে কিছুদিনের ক্যাম্প হবে। সেখানেও কিছুটা প্রস্তুতির সুযোগ আছে। তবে মূল ক্যাম্পটা হবে শ্রীলঙ্কায়। কারণ একটাই ক্রিকেটে দারুণভাবে পড়েছে করোনার প্রভাব। দেশ থেকে শ্রীলঙ্কা পর্যন্ত যেতে অন্তত ৩ বার করোনা পরীক্ষা দিতে হবে খেলোয়াড়দের। সেখানে গিয়ে অনুশীলনের বড় একটা অংশ নিজেদের মধ্যেই কাটাতে হবে। বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। তবে এই সফরকে নিজেদের জন্য বড় ও ভালো সুযোগ বলে মনে করছেন তামিম। তিনি বলেন, ‘এই চার মাসে বিসিবিও আমাদের কিছু সেশন ঠিক করে দিয়েছিল। মানসিকভাবে যেন আমরা ভালো অবস্থায় থাকি। ব্যক্তিগতভাবে আমিও দুই-তিনটা সেশন করেছি। এসব আমাকে ভালো সাহায্য করেছে। কিন্তু যেটা বলেছি এই চার মাস কোনোভাবেই সহজ ছিল না। কিন্তু আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে, এখান থেকে বের হয়ে এসে যত তাড়াতাড়ি আমরা মানসিকভাবে ভালো অবস্থায় এসে যাই। কারণ আমাদের একটা বড় ট্যুর আসছে সামনে। আর আমি বিশ্বাস করি যে আমাদের ভালো সুযোগ আছে।’