ইসরাইলের সঙ্গে দুই আরব দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের সঙ্গে বিতর্কিত এক চুক্তির পর একে ‘ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তি’ অভিহিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু তার এই ‘শান্তি চুক্তি’ ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে নজিরবিহীন অশান্তি উসকে দিয়েছে।
নতুন করে সংঘাত শুরু হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ দুটির মধ্যে। চলছে হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান চলাকালেই অধিকৃত গাজা উপত্যকায় মুহুর্মুহু বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। জবাবে ইসরাইলের অভ্যন্তরে পাল্টা রকেট হামলা চালায় ফিলিস্তিন।
ফিলিস্তিনের জমি জবরদখল করে ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ইসরাইলকে বছরের পর বছর ধরে বয়কট করে এসেছে বেশির ভাগ আরব দেশই। তারা বরাবরই বলে এসেছে, ফিলিস্তিনি ইস্যু (দ্বিরাষ্ট্রিক) সমাধান হলেই কেবল তারা ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করবে।
কিন্তু বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক তৎপরতায় সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছে কয়েকটি আরব দেশ। তারই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের উপস্থিতিতে ইসরাইলের সঙ্গে বিতর্কিত এক চুক্তিতে স্বাক্ষর করে আমিরাত ও বাহরাইন।
এ চুক্তিকে ‘মধ্যপ্রাচ্যে নতুন ভোর’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন ট্রাম্প। এটাকে ‘শান্তি চুক্তি’ অভিহিত করে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘এই দিনটি ইতিহাস পরিবর্তনের ক্ষণ, শান্তির নতুন দিগন্তের সূচনা।’
কিন্তু এই চুক্তিকে ‘পিঠে ছুরির মারা’র সঙ্গে তুলনা করে এর কঠোর নিন্দা জানিয়েছে ফিলিস্তিনি।
দেশটির নেতারা বলছেন, ১৯৬৭ সালে আরব-ইসরাইল যুদ্ধের পর দখলকৃত অঞ্চল থেকে ইসরাইলের সরে যাওয়ার মধ্য দিয়েই কেবল মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব। এক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, ‘ইসরাইলের জবরদখল শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই অঞ্চলে শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা ফিরবে না।’
এদিকে আমিরাত ও বাহরাইনের সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ পদক্ষেপ ফিলিস্তিনে ফের বিক্ষোভ-প্রতিবাদ উসকে দিয়েছে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যেই মঙ্গলবার মুখে নীল মাস্ক আর হাতে ফিলিস্তিনি পতাকা নিয়ে পথে পথে নামে হাজার ফিলিস্তিনি জনতা।
অধিকৃত গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরের রামাল্লা, নাবলুস ও হেবরন শহরে বড় বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিক্ষোভের মধ্যেই বুধবার সারারাত গাজায় বিমান হামলা চালায় ইসরাইল। এতে বেশ কিছু ফিলিস্তিনি বাড়িঘর ও সম্পদের ক্ষতি হয়েছে।
ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, গাজা ও খান ইউনুস এলাকার বেশ কিছু জায়গায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। তবে কেউ হতাহত হয়নি। হামলার পর এক বিবৃতিতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে হুশিয়ারি দিয়েছে গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন হামাস কর্তৃপক্ষ।