শৈশবে বাবা-মায়ের কাছেই তিনি অনেক দোয়া মুখস্ত করেন। মাত্র সাত বছর বয়সে পবিত্র কোরআন হিফজ করেন। এরপর দাদার কাছে হাটহাজারী মাদরাসায় সুনামের সঙ্গে পড়াশোনা করেন। তুখোড় মেধাবী হওয়ায় ক্লাসের প্রায় সব কিতাব তার মুখস্ত ছিল। সব ক্লাসেই তিনি প্রথম স্থান অধিকার করতেন। দরসের পাশাপাশি তিনি শায়খুল হাদীস আল্লামা আবদুল কাইয়ূম (রহ.), আল্লামা আবদুল আযীয (রহ.), মুফতী আহমদুল হক (রহ.) প্রমুখের কাছে ব্যক্তিগতভাবে পড়েন। আরবি ব্যাকরণ, মানতিক, ফিকাহ, তাফসিরসহ অনেক শাস্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থগুলো তাঁর নখদর্পণে ছিল। মাত্র ১৪ বছর বয়সে তিনি ফিকাহ্শাস্ত্র, উসুলে ফিকাহ, মানতিক, আকায়েদ, সাহিত্য, গণিতসহ নানা বিষয়ের পাঠ সম্পন্ন করেন। গণিতের অনেক জটিল সমস্যা ও ধাঁধা তিনি সহজেই সমাধান করতে পারতেন।এরপর ১৯৬০ সালে উচ্চশিক্ষার জন্য কারি মুহাম্মাদ ইলয়াছ (রহ.) তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের জামিয়া আশরাফিয়া লাহোর মাদারাসায় পাড়ি জমান। সেখানে তিনি জগদ্বিখ্যাত ইসলামী পণ্ডিত আল্লামা রাসুল খান (রহ.) (মৃত্যু : ১৩৯১ হি.) ও বিশ্ববরেণ্য মুফাসসির আল্লামা মুহাম্মদ ইদরিস কান্দলভি (রহ.) (মৃত্যু : ১৩৯৪ হি.)-এর সরাসরি তত্ত্বাবধানে থেকে দীর্ঘ ছয় বছর শিক্ষা লাভ করেন। সেখানে পড়াশোনা শেষে আল্লামা রসুল খানের (রহ.)-এর কাছে বাইআত অতঃপর খিলাফত লাভ করেন এবং দেশে ফিরে আসেন।
দেশে ফিরে কারি মুহাম্মাদ ইলয়াছ (রহ.) দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসায় শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। সেখানে তিনি উচ্চতর যুক্তিবিদ্যা, দর্শন ও তাফসির শাস্ত্রের গ্রন্থ পড়াতেন। এরপর ১৯৬৮ সালে তিনি খতিবে আজম মাওলানা সিদ্দিক আহমদ (রহ.)-এর অনুরোধে চট্টগ্রামের জামেয়া ইসলামিয়া পটিয়া মাদরাসায় শিক্ষকতা শুরু করেন। সেখানে তিনি দীর্ঘ ১৯ বছর ইসলামী দর্শন ও তাফসির শাস্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থের পাঠদান করান। এ সময় তিনি তাফসির বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর চট্টগ্রাম শহরের জামেয়া দারুল মা‘আরিফ আল-ইসলামিয়ায় মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় শিক্ষকতা করেন। সেখানেও তিনি ইসলামী দর্শন ও তাফসির শাস্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থের পাঠদান করাতেন। পারিবারিক জীবনে তিনি এক কন্যাসন্তান ও দুই নাতি রেখে যান।