বিশ্বনবী (সা.) বলেন, প্রতারণাকারী ও ধোঁকাবাজকারীদের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।’ [ তিরমিজি, হাদিস : ১৩১৫ ]
ধোঁকা, প্রতারণা ইত্যাদি মুমিনের কাজ নয়। এগুলো কপট লোকদের কাজ। যারা আল্লাহ ও তাঁর প্রিয় বান্দাদের প্রতারিত করতে গিয়ে নিজেরাই প্রতারিত হয়। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তারা আল্লাহ ও মুমিনদের প্রতারিত করে, আসলে তারা নিজেদের ছাড়া অন্য কাউকে প্রতারিত করে না; কিন্তু এটা তারা উপলব্ধি করতে পারে না।
’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ৯)
এখানে ঈমানের ব্যাপারে মুনাফিকদের প্রতারণামূলক মিথ্যা ঈমানের দাবির ব্যাপারে আলোচনা করা হয়েছে। ঈমানের ব্যাপারে যেমন মিথ্যা ও প্রতারণার আশ্রয় নেওয়া যাবে না, তেমনি জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রেও ধোঁকা ও প্রতারণার আশ্রয় নেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘প্রতারণামূলক ক্রয়-বিক্রয় করতে এবং কাঁকর নিক্ষেপে ক্রয়-বিক্রয় নির্ধারিত করতে রাসুলুল্লাহ (সা.) নিষেধ করেছেন। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ১২৩০)
প্রতারণা এতটাই ভয়ংকর পাপ যে বিশ্বনবী (সা.) প্রতারকদের তাঁর উম্মতের কাতার থেকে বহিষ্কার করার ঘোষণা দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, কোনো একসময় রাসুলুল্লাহ (সা.) (বাজারে) একটি খাদ্যশস্যের স্তূপ অতিক্রম করে যাচ্ছিলেন। তিনি নিজের হাতকে স্তূপের মধ্যে প্রবেশ করালেন। তিনি তাঁর হাতে ভিজা অনুভব করেন। স্তূপের মালিককে তিনি প্রশ্ন করেন, এ কী? সে বলল, হে আল্লাহর রাসুল, এটা বৃষ্টির পানিতে ভিজে গিয়েছিল। তিনি বলেন, ভিজাগুলো স্তূপের ওপরে রাখলে না কেন, যাতে লোকেরা দেখতে পেত? অতঃপর তিনি বলেন, প্রতারণাকারী ও ধোঁকাবাজকারীদের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৩১৫)
শুধু ব্যবসা-বাণিজ্য নয়, কোনো অবস্থাতেই মুসলমানের জন্য প্রতারণা ও ধোঁকাবাজির আশ্রয় নেওয়া জায়েজ নয়। এগুলো মুসলমানদের কাজ নয়। আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রা.) বলেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে সত্যবাদী এবং সত্যবাদী বলে স্বীকৃত আবুল কাসিম (সা.) আমাদের বলেছেন, (দুধ আটকে রেখে) স্তন ফুলানো পশু বিক্রয় করা একটি প্রতারণা। আর মুসলিম ব্যক্তির জন্য প্রতারণা করা হালাল নয়। ’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২২৪১)
মহান আল্লাহ সবাইকে এই মহাপাপ থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন