এবার প্যানডোরা পেপারসে আরও তিন বাংলাদেশির নাম উঠে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস (আইসিআইজে) এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
বিদেশে গোপন বিনিয়োগের তথ্য প্রকাশ করে বিশ্বজুড়ে আলোচনায় আসা প্যানডোরা পেপারসে নতুন করে যে তিন বাংলাদেশির নাম এসেছে, তারা হলেন-রাজধানীর বারিধারা ডিওএইচএসের নর্দান রোডের বাসিন্দা এস হেদায়েত উল্লাহ ও এস রুমি সাফিউল্লাহ এবং সিলেটের শাহজালাল উপশহরের শাহিদা বেগম শান্তি।
এর আগেও আট বাংলাদেশির নাম প্রকাশ করেছিল সংস্থাটি। উল্লেখ করা যেতে পারে, আইসিআইজে পানামা ও প্যারাডাইস পেপারসে যেসব ব্যক্তির নাম প্রকাশ করেছিল, তাদের মধ্যে রয়েছেন ৮২ বাংলাদেশি। প্যানডোরা পেপারসে আরও তিন বাংলাদেশির নাম আসার পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সচিব সাঈদ মাহমুদ খান বলেছেন, প্যানডোরা পেপারসে নাম আসা তিন বাংলাদেশির বিষয়েও অনুসন্ধান করা হবে। তাদের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্যানডোরা ও পানামা পেপারসে বাংলাদেশিদের নাম আসা দেশের অর্থনীতির জন্য মোটেও ভালো খবর নয়। তবে এটা ঠিক, প্যানডোরা ও পানামা পেপারসে নাম এলেই কেউ বেআইনি কাজে জড়িত বলে নিশ্চিত হওয়া যায় না। বিদেশে অর্থ ও সম্পদ রাখতে চাওয়ার পেছনে বৈধ কারণও থাকতে পারে। সুতরাং দুদকের সচিব আলোচ্য তিন ব্যক্তির ব্যাপারে অনুসন্ধানের যে কথা বলেছেন, সেটাই প্রতিপালন করতে হবে। অনুসন্ধানে যদি দেখা যায়, আলোচ্য ব্যক্তিত্রয় অবৈধভাবে বিদেশে বিনিয়োগ করেছেন অথবা অর্থ পাচার করেছেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
তবে আশার কথা, সম্প্রতি মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে গঠিত কেন্দ্রীয় টাস্কফোর্সের সভায় বেশ কিছু ইতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। দেশ থেকে টাকা পাচার বন্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনসহ অন্যান্য আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় টাস্কফোর্স। একই সঙ্গে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন সংশোধন করে আইন লঙ্ঘনের ঘটনায় শাস্তির মাত্রা আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অর্থ পাচারের ঘটনা দক্ষতার সঙ্গে দ্রুত তদন্তের লক্ষ্যে তদন্তকারী সংস্থাগুলোর সক্ষমতা আরও বাড়ানো হবে মর্মেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি, শুধু সিদ্ধান্তই যথেষ্ট নয়, তা বাস্তবায়ন করাটাই মুখ্য কথা। শেষ কথা হলো-অবৈধভাবে বিদেশে বিনিয়োগ অথবা অর্থ পাচারের দোষে দুষ্টদের শাস্তি নিশ্চিত করা এবং ভবিষ্যতে যাতে কেউ এ ধরনের কাজ করতে না পারে, সে লক্ষ্যে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করা-এ দুই লক্ষ্য বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও সরকারকে সদাতৎপর থাকতে হবে।