কয়েক মাস ধরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন হামলার পরিকল্পনা অস্বীকার করে আসছিলেন। অথচ বৃহস্পতিবার তিনি ‘বিশেষ সেনা অভিযান’ চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন ইউক্রেনের তোনবাস এলাকায়।
টেলিভিশনে সম্প্রচারিত বক্তৃতায় তিনি এ ঘোষণা দেওয়ার পর ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভসহ অন্যান্য অঞ্চলেও বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে।
ইউক্রেনের বিচ্ছিন্নতাবাদী নিয়ন্ত্রিত দুটি অঞ্চলের স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার পর সেখানে ‘শান্তি বজায় রাখার’ দোহাই দিয়ে সৈন্য পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন পুতিন।
তার কয়েক দিনের মধ্যেই ইউক্রেনের রাজধানীতে হামলার ঘটনা ঘটে গেল।
গত কয়েক মাসে ইউক্রেন সীমান্তে অন্তত দুই লাখ সেনা মোতায়েন রেখেছে রাশিয়া। এটিকে ইউক্রেনে হামলার জন্য রাশিয়ার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছে পশ্চিমারা।
রুশ সৈন্য কোথায় পাঠানো হচ্ছে এবং কেন?
২০১৪ সালে রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ করেছিল, তখন পুতিন সমর্থিত বিদ্রোহীরা পূর্বাঞ্চলের বড় অংশ দখল করেছিল। তখন থেকেই তারা ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে।
আন্তর্জাতিক শান্তিচুক্তি থাকলেও সংঘাত অব্যাহত রয়েছে। পুতিন বলেছেন, তিনি দুটি বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় সেনা পাঠাচ্ছেন।
পশ্চিমা দেশগুলো মনে করছে, রাশিয়া নতুন করে ৪৪ মিলিয়ন মানুষের দেশ ইউক্রেনে আক্রমণ করছে। ইতোমধ্যেই ইউক্রেনে হামলা শুরু করে দিয়েছে রাশিয়া।
তবে রুশ প্রেসিডেন্ট সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, রাশিয়ার ওপর কেউ কিছু করতে চাইলে ‘তাৎক্ষণিক জবাব’ দেওয়া হবে।
ইউক্রেনের সঙ্গে পুতিনের ঝামেলা কী?
ন্যাটো সামরিক জোট এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ইউক্রেনের ঘনিষ্ঠতার বিরুদ্ধে রাশিয়া বরাবরই প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে আসছে। পুতিন দাবি করেছেন, ইউক্রেন হলো পশ্চিমাদেরে হাতের পুতুল এবং কোনোভাবেই সঠিক দেশ হিসেবে গড়ে উঠতে পারেনি।
তিনি পশ্চিমা দেশগুলো এবং ইউক্রেন থেকে নিশ্চয়তা পেতে চান যে ইউক্রেন কখনো ন্যাটো জোটে যোগে দেবে না।
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের দেশ হিসেবে ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার গভীর সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রয়েছে। ইউক্রেনে রুশ ভাষা ব্যাপকভাবে বলা হয়। তবে রাশিয়া ২০১৪ সালে ইউক্রেনে আক্রমণ করার পর থেকে সেই সম্পর্ক বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
২০১৪ সালের শুরুর দিকে রুশপন্থী প্রেসিডেন্ট ইউক্রেনে ক্ষমতাচ্যুত হলে দেশটিতে আক্রমণ চালায় রাশিয়া। ওই সময় থেকে ১৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
সূত্র : বিবিসি।