ইউরোপের সঙ্গে এরই মধ্যে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তাকে থামানোর একটিই উপায় আছে। তা হলো সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণ। অনলাইন গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক মন্তব্য প্রতিবেদনে এ কথা বলেছেন সিমন তিসডাল। তিনি বলেছেন, পুতিন খাদ্য, জ্বালানি এবং শরণার্থীদেরকে যুদ্ধের হাতিয়ার বানিয়ে নিয়েছেন। তার এসব কর্মকাণ্ডের কারণে পুরো মহাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক যন্ত্রণা। এ জন্য তিনি ইউরোপকে জেগে উঠার আহ্বান জানিয়েছেন এবং কর্ডিটের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে বলে লিখেছেন সিমন তিসডাল। এখানে উল্লেখ্য, কর্ডিট হলো এক রকম ধোয়াহীন পাউডার। নাইট্রোগ্লিসারিন, গানকটন, পেট্রোলিয়াম জাতীয় জিনিসপত্র বিশেষ করে অ্যাসিটন মিশিয়ে বানানো হয় কর্ডিট। ক্ষেপণাস্ত্র থেকে যেভাবে হতাশার তরঙ্গ ছড়িয়ে পড়ে তেমনি ভ্লাদিমির পুতিনের যুদ্ধের উত্তেজনা পশ্চিমমুখী ছড়িয়ে পড়ছে।
এর আঘাত লাগছে বাড়িঘরে, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে। বার্লিন থেকে বার্মিংহাম পর্যন্ত কর্মক্ষেত্রে এর প্রভাব পড়েছে। এর ফলে অস্থিতিশীলতা, জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। আতঙ্ক বাড়ছে। ইউক্রেনের এই যুদ্ধ ইউক্রেনের ভিতরেই সীমাবদ্ধ থাকবে, পশ্চিমাদের দেয়া নিষেধাজ্ঞা এবং অস্ত্র সরবরাহ রাশিয়াকে থামিয়ে দেবে- পশ্চিমাদের এমন ভাবনা সব সময়ই এক কা-জ্ঞানহীন। কিয়েভ গায়ের জোর ব্যবহার করে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। তাদেরকে যারা শাস্তি দিচ্ছে, তাকে তারা শাস্তি দেয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু পুতিনের লক্ষ্য ইউরোপ।
সিমন তিসডাল আরও লিখেছেন, পুতিন সব ক্ষেত্রেই যুদ্ধকালীন শর্ত ব্যবহার করেছে। ইউরোপে ভয়ঙ্কর ও দীর্ঘস্থায়ী ঠাণ্ডা আসন্ন। আছে শীতকালীন দুর্যোগ। এ সময় সেখানে বিদ্যুতের সংকট দেখা দেয়। ফলে ইউরোপে এক টালমাটাল অবস্থা আসন্ন। এসব অপারেশনকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে রাশিয়া। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করছে, চালাচ্ছে সাইবার হামলা, কূটনৈতিক দ্বৈত সংলাপ, পারমাণবিক ব্লাকমেইল চালু করেছে। একই সঙ্গে তারা ইউক্রেনের সাধারন মানুষদের বিরুদ্ধে নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে সামনের মাসগুলোতে ইউরোপের ওপর আরও চাপ বাড়বে। তবে পশ্চিমাদের বিশ্বাস তারা মহাদেশজুড়ে এই উত্তেজনা সহসাই হাওয়ায় উড়িয়ে দেবে।
ইউরোপ বর্তমানে ২০০৮ সালের আর্থিক মন্দার চেয়ে বদ রকমের মৌলিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। এর জন্য পুরোপুরি পুতিন দায়ী নন। কিছুটা দায় ব্রেক্সিট বা করোনা মহামারিরও। পেনশনারদের আতঙ্ক। ক্ষুধার্ত শিশু। সুপারমার্কেটের শেলফগুলো ফাঁকা। জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে অসহনীয়। আয়ে বৈষম্য দেখা দিয়েছে। ধর্মঘট, সড়কে বিক্ষোভ। এসবই শ্রীলঙ্কা-স্টাইনের পতনের ইঙ্গিত করে। সিমন তিসডাল বলেন, আমি বাড়িয়ে বলছি? উত্তরে তিনি বলেন- মোটেও না।