ফাইন্যান্সের ৫১৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ ফাস
ফাস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে ভুয়া কাগুজে প্রতিষ্ঠানকে ৫২৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে পিকে হালদার, ফাস ফাইন্যান্সের সাবেক এমডি রাসেল শাহরিয়ারসহ ১৪ ব্যক্তির নামে ১৩টি মামলা অনুমোদন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এরইমধ্যে ফাস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লি: চেয়ারম্যান, বোর্ড সদস্য, ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ১৪ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিদেশ গমনের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
দুদক প্রধান কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের এই ১৩টি মামলা অনুমোদনের বিষয়ে জানান দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন। দুদক সচিব বলেন, দুদকের অনুমোদিত ১৩ মামলা থেকে গত মঙ্গলবার একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মামলায় ফাস ফাইন্যান্স এর সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রাসেল শাহরিয়ার, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের (আইএলএফএসএল) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পিকে হালদারসহ ১৩ জনকে আসামি করা হয়। মাহবুব হোসেন আরও বলেন, দুদকের দায়ের করা একটি মামলায় ফাস ফাইন্যান্স এর সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রাসেল শাহরিয়ারকে গত মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে চারটায় মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সূত্র জানায়, ১৩টি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ৫২৩ কোটি টাকা ঋণ প্রদানের মাধ্যমে আত্মসাৎ করা হয়েছে। সেগুলো হলো- অ্যান্ড বি ট্রেডিং ৪৪ কোটি টাকা, ন্যাচার এন্টারপ্রাইজ ৪৫ কোটি টাকা, নিউট্রিক্যাল লিমিটেড ৩০ কোটি টাকা, এস,এ এন্টারপ্রাইজকে ৪২ কোটি টাকা, সুখাদা এন্টারপ্রাইজ ৪০ কোটি টাকা, এমটিবি মেরিন ৪০ কোটি টাকা, হাল ইন্টারন্যাশনাল ৪৫ কোটি টাকা, সন্দ্বীপ করপোরেশন ৪০ কোটি টাকা, দিয়া শিপিং কোম্পানি লিমিটেড- ৪৪ কোটি টাকা, মুন এন্টারপ্রাইজ ৩৫ কোটি টাকা, বর্ণ এন্টারপ্রাইজ ৩৮ কোটি টাকা, আরবি লিমিটেড- ৪০ কোটি টাকা ও মেরিন ট্রাস্ট ৪০ কোটি টাকা।
সূত্র আরও জানায়, ফাস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিঃ থেকে ১৩০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগের অনুসন্ধান শেষে প্রাথমিকভাবে ৫২৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন ১৩টি মামলা রুজুর অনুমোদন দেয়া হয়েছে।ভুয়া ও কাগুজে প্রতিষ্ঠান অ্যান্ড বি ট্রেডিং এর নামে জাল রেকর্ডপত্রাদি প্রস্তুত করে তা সঠিক হিসাবে ব্যবহার করে অস্তিত্ববিহীন প্রতিষ্ঠানের মালিক শুভ্রা রানী ঘোষকে ঋণ প্রদান করে ৪৪ কোটি টাকা। আত্মসাৎ ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে গত মঙ্গলবার পিকে হালদারসহ উক্ত প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, পরিচালকবৃন্দ, এম.ডি রাসেল শাহরিয়ারসহ ১৩ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদক কর্তৃক একটি মামলা রুজু করা হয়। পরে ফাস ফাইন্যান্স এর সাবেক এমডি রাসেল শাহরিয়ারকে তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থেকে বিকাল ৪.৩০ টায় গ্রেপ্তার করেন। মো. রাসেল শাহরিয়ার উক্ত প্রতিষ্ঠানের এমডি থাকা অবস্থায় ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে তার একক স্বাক্ষরেই প্রায় ৫০০ কোটি টাকা ঋণ প্রস্তাব বোর্ডে উপস্থাপন করে ঋণ অনুমোদন করান এবং তা পিকে হালদারের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কোম্পানিতে স্থানান্তর করেন। তাকে রিমান্ডে নিয়ে আরও তথ্য উদ্ধারের জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি ১২টি মামলা গতকাল রুজু হয় এবং ১২টি মামলায় ৪৭৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ভুয়া ও কাগুজে প্রতিষ্ঠান অ্যান্ড বি ট্রেডিংয়ের নামে জাল রেকর্ডপত্রাদি প্রস্তুত করে তা সঠিক হিসাবে ব্যবহার করে উক্ত অস্তিত্ববিহীন প্রতিষ্ঠানের মালিক শুভ্রা রানী ষোষকে ঋণ প্রদান করে ৪৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও মানিলন্ডারিং করেন।