শৈশবে নিজ কক্ষের গোটা দেয়ালজুড়ে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ছবি টাঙিয়ে রাখতেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। পর্তুগিজ সুপারস্টারের ভক্ত এমবাপ্পে ছোটবেলা থেকেই রিয়াল মাদ্রিদের সমর্থক। লস ব্লাঙ্কোদের সাদা জার্সি গায়ে চড়ানোর স্বপ্ন দেখতেন শিশুকাল থেকেই। সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেয়ার অল্প দূরত্বে ছিল। তবে প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ের (পিএসজি) অর্থের ঝংকারে স্বপ্ন মাটি চাপা দিতে পিছপা হননি ফরাসি তারকা। চুক্তি নবায়ন করেছেন লা প্যারিসিয়ানদের সঙ্গে। এমবাপ্পেকে ধরে রাখতে বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করেছে প্যারিসের ক্লাবটি। যা ফুটবলে ‘ফিনান্সিয়াল ফেয়ার প্লে’র পরিপন্থী। যেকারণে পিএসজি এবং এমবাপ্পের চুক্তি বাতিল করতে আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে স্প্যানিশ লা লিগা।
প্রতিযোগিতার শুরুটা হয়েছে ২০১৭ সালে। মোনাকোর ফরোয়ার্ড কিলিয়ান এমবাপ্পেকে দলে ভেড়াতে লড়াইয়ে নামে রিয়াল মাদ্রিদ ও পিএসজি।
লস ব্লাঙ্কোদের পরাস্ত করে ফরাসি স্টারকে বাগিয়ে নেয় পিএসজি। এরপর প্রায় প্রত্যেক ট্রান্সফার উইন্ডোতে এমবাপ্পেকে ভেড়ানোর চেষ্টা করেছে রিয়াল। সবশেষ গত মৌসুমে দফায় দফায় বিশাল অর্থ প্রস্তাব দিয়েও লা প্যারিসিয়ানদের মন গলাতে পারেনি লা লিগার ক্লাবটি। অবশেষে ফ্রি এজেন্ট এমবাপ্পেকে দলে টানার সুবর্ণ সুযোগ আসে রিয়ালের।
গণমাধ্যমের খবর প্রিয় ক্লাবে যেতে ফরাসি স্টারও সেরে ফেলেছিলেন মৌখিক চুক্তি। কিন্তু পিএসজির লোভনীয় প্রস্তাবে শেষ পর্যন্ত মন বদলে ফেলেন এমবাপ্পে। পিএসজির সঙ্গে তিন বছরের জন্য চুক্তি নবায়ন করেন। শুধু সাইনিং বোনাস হিসেবে ৩০০ মিলিয়ন ইউরো পাবেন এমবাপ্পে। বিশ্বকাপ জয়ী তারকাকে ১০০ মিলিয়ন ইউরো বার্ষিক বেতন দেবে পিএসজি। প্রতি মাসে এমবাপ্পের পারিশ্রমিক ধার্য করা হয়েছে ৮ মিলিয়ন ইউরোরও বেশি। নতুন চুক্তিতে পিএসজি তো বটেই, বিশ্বের সর্বোচ্চ বেতনধারী ফুটবলার হয়ে গেছেন এমবাপ্পে।
শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে লা লিগার প্রতিনিধি আইনজীবী হুয়ান ব্রাঙ্কো বলেন, ‘পিএসজির অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে চ্যালেঞ্জ জানাতে আদালতে যেতে প্রস্তুত আমরা।’
এর আগে এক বিবৃতিতে লা লিগা জানায়, এমবাপ্পের পেছনে পিএসজি যে বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করেছে, তা ফুটবলের বাস্তুতন্ত্র ও স্থিতিশীলতাকে নষ্ট করে। যা ইউরোপীয় ফুটবলের জন্য ক্ষতিকর।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘লা লিগা বুঝতে পারে যে, এই ক্লাবগুলোকে অন্যায়ভাবে অর্থায়ন করা হচ্ছে।’
এদিকে রিয়াল মাদ্রিদ সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজের দাবি, অর্থ নয় রাজনৈতিক চাপের মুখে পিএসজিতে থেকে গেছেন এমবাপ্পে। গত বুধবার এল চিরিঙ্গিতো টিভিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে পেরেজ জানান, এমবাপ্পের এই সিদ্ধান্ত স্বাধীনভাবে আসেনি। পেরেজ বলেন, ‘এমবাপ্পে বিশ্বাসঘাতকতা করেনি। তার স্বপ্ন ছিল রিয়াল মাদ্রিদে খেলার। আমরা গেল আগস্টেই কাজটা সেরে ফেলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তারা তাকে ছাড়েনি।’