ঢাকা ওয়াসার বর্তমান প্রশাসন গত ১৩ বছরে পানির দাম বাড়িয়েছে ১৪ বার! করোনাকালেও দুই বছরে দুবার আবাসিক ও বাণিজ্যিক পানির দাম বাড়ানো হয়েছে। তবে প্রতিবছর পানির দাম বাড়লেও ঢাকা ওয়াসার সরবরাহকৃত পানির গুণগত মান বাড়েনি। সরবরাহ লাইনের পানি সরাসরি পান করার মতো বিশুদ্ধ নয়।
এমনকি কোনো কোনো এলাকায় পানি ফুটিয়েও পান করা যায় না। এটাই যখন বাস্তবতা, তখন ওয়াসার পানির দাম আরেক দফা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন করে পানির দাম ২০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বোর্ড সদস্য প্রকৌশলী তাকসিম এ খান।
অবশ্য সোমবার সংস্থাটির যে বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হয়, সেখানে পানির দাম ৪০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিলেন তিনি, যদিও অধিকাংশ বোর্ড সদস্য তার এ প্রস্তাবে সম্মতি প্রকাশ করেননি।
বস্তুত ঢাকা ওয়াসা যে প্রতিবছরই পানির দাম বাড়িয়ে চলেছে, তার প্রধান কারণ সংস্থাটির সামগ্রিক ব্যর্থতা। কর্তৃপক্ষের অনিয়ম, দুর্নীতি, একনায়কতন্ত্র ও অদক্ষতার কারণে ঢাকা ওয়াসা একটি ব্যর্থ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। ওয়াসা কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতার কারণে একদিকে প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় বেশি হচ্ছে, অন্যদিকে ঘাটতি মেটাতে দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে পানির দাম।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পানির দাম নিয়ে যে স্বেচ্ছাচারিতা চলছে, তার অবসান ঘটাতে হলে ওয়াসার দুর্নীতি দূর করতে হবে প্রথমে। ওয়াসার পানির দাম বাড়ানোর যে পাঁয়তারা চলছে, আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাই। নিজেদের ব্যর্থতার দায় জনগণের ওপর চাপানো হবে-এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। ঢাকা ওয়াসা বোর্ডের উচিত প্রথমে নিজেদের দিকে তাকানো। পানির দাম বাড়ানোর তৎপরতার পরিবর্তে তাদের উচিত পানির গুণগত মান বাড়ানো।
ওয়াসার প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও কর্তৃপক্ষ দক্ষতার পরিচয় দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। সম্ভাব্যতা যাচাই না করেই তারা প্রকল্প গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন করছে। এতে বাড়ছে প্রকল্পের ব্যয় এবং তা বহন করতে জনগণের পকেট কাটা হচ্ছে। ওয়াসা কর্তৃপক্ষকে এ প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আমাদের শেষ কথা, পানির দাম বাড়ানোর প্রস্তাব থেকে সরে আসতে হবে ওয়াসা কর্তৃপক্ষকে।