ইতিহাসে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টে বিচারক হিসেবে একজন নারীকে মনোনীত করা হয়েছে। তিনি হলেন বিচারক আয়েশা মালিক। তিনি ধর্ষিতাদের কুমারিত্ব পরীক্ষা বন্ধ করেছেন। ফলে তাকে এই পদে মনোনীত করাকে নতুন এক যুগের সূচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডেইলি গার্ডিয়ান। দেশটির শীর্ষ বিচারিক কমিশন তাকে মনোনয়ন দেয়। তাকে সুপ্রিম কোর্টে মনোনয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন আইনজীবীরা ও নাগরিক সমাজের কর্মীরা। কারণ, পাকিস্তানে সমঅধিকারের ক্ষেত্রে এই বিচারকের অবদান অপরিসীম।
পাকিস্তানের আইন ও বিচার বিষয়ক পার্লামেন্টারি সেক্রেটারি মালিকা বোখারি তাকে নিয়োগের বিষয়কে গ্লাস সিলিং ভেদ করে উপরে উঠে যাওয়া বলে আখ্যায়িত করেছেন।তিনি টুইটারে লিখেছেন, একজন অত্যন্ত মেধাবী আইনজীবী এবং বিচারক হিসেবে তিনি হতে যাচ্ছেন পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের প্রথম নারী বিচারক। এটা দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত।
৫৫ বছর বয়সী আয়েশা মালিকের মনোয়নকে সমর্থন করেছেন পাকিস্তাােনর প্রধান বিচারপতি গুলজার আহমেদ। এখন বিষয়টি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে পার্লামেন্টারি প্যানেলের কাছে।
তবে এই মনোনয়নের যে বিরোধিতা হয়নি এমন বলা যাবে না। আইনজীবীদের একটি গ্রুপ হুমকি দিয়েছেন যে, আয়েশা মালিককে বিচারক নিয়োগ দেয়া হলে তারা ধর্মঘট করবেন। এর আগে গত বছর তার মনোনয়ন প্রত্যাখ্যান করেছিল ৯ সদস্যের কমিশন। কিন্তু এবার তার পক্ষে ভোট দিয়েছেন ৫ জন বিচারক ও বিপক্ষে চারজন। একদন আইনজীবী এবং বিচারক বলছেন, আইন লঙ্ঘন করে জ্যেষ্ঠদের ডিঙ্গিয়ে তাকে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। বলা হয়েছে, আদালতে সবচেয়ে সিনিয়র যে তিনজন বিচারক আছেন, আয়েশা মালিক তাদের মধ্যে নেই।
ক্যারিয়ারে বেশ কিছু যুগান্তকারী রায় দিয়েছেন আয়েশা মালিক। গত বছর তিনি ধর্ষিত নারীর কুমারিত্ব পরীক্ষা নিষিদ্ধ করেছেন। তিনি তখন রায়ে বলেছিলেন, এটা একটা অমানবিক বিষয়। কুমারিত্ব পরীক্ষা করানো হলে তাতে সন্দেহটা ঘনীভূত হয় ধর্ষিতার ওপর। অন্যদিকে ধর্ষক থাকে এর বাইরে। এটা এক ধরণের যৌন সহিংসতা। তার এই রায় প্রয়োগ করা হয় শুধু পাঞ্জাব প্রদেশে। এ বিষয়ে ডিজিটাল অধিকার বিষয়ক আইনজীবী এবং মানবাধিকারকর্মী নিঘাত দাদ বলেছেন, দায়িত্ব পালনের উপযোগী করে তুলেছেন আয়েশা মালিক। বিচার বিভাগের জন্য এটা একটা ঐতিহাসিক মুহূর্ত।