Friday, June 9, 2023
spot_img
Homeনির্বাচিত কলামপবিত্র শবেবরাত, সমগ্র জাতির জন্য কল্যাণ বয়ে আনুক

পবিত্র শবেবরাত, সমগ্র জাতির জন্য কল্যাণ বয়ে আনুক

আজ পবিত্র শবেবরাত, যা সৌভাগ্যের রজনী হিসাবে পরিচিত। মুসলমানদের কাছে ১৪ শাবান দিবাগত রাত অত্যন্ত বরকতময় ও মহিমান্বিত বলে বিবেচিত। মহান রাব্বুল আলামিন মানবজাতির জন্য তাঁর অসীম রহমতের দরজা খুলে দেন এ রাতে।

শাবান মাসের পরই কৃচ্ছ্রসাধনের মাস রমজান আসে জীবনের সব কালিমা দূর করার ফজিলত নিয়ে। শবেবরাত তাই মুসলমানদের জানান দিয়ে যায় দীর্ঘ এক মাসের সিয়াম সাধনার জন্য প্রস্তুত হওয়ার কথা। এ রাতে মানবসমাজ তথা বিশ্বের সব সৃষ্টির ভাগ্য নির্ধারণ করেন মহান আল্লাহতায়ালা।

তিনি মানুষের জীবন-মৃত্যুর দিনক্ষণ নির্ধারণ এবং রুজি-রোজগার বণ্টন করেন। নাজিল করেন বান্দার প্রতি অশেষ রহমত। বান্দাদের আকুতি, আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণেরও রাত এটি। আল্লাহতায়ালা ক্ষমা প্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করেন এবং বিপদগ্রস্তদের দেখান উত্তরণের পথ। এ কারণেই মুসলমানদের কাছে শবেবরাত বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

মুসলমানরা যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনায় শবেবরাত পালনের জন্য প্রস্তুত হন প্রতিবছর। ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে নেওয়া হয়ে থাকে নানা কর্মসূচি। পবিত্র কুরআনের সূরা দুখানে বলা হয়েছে, ‘শপথ এই সুস্পষ্ট কিতাবের, নিশ্চয়ই আমি এই কিতাবকে বরকতময় রাত্রিতে অবতীর্ণ করিয়াছি। নিশ্চয় আমি সতর্ককারী।

এই রাত্রিতে ফয়সালা করা হয় প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয়, আমার পক্ষ হইতে নির্দেশক্রমে, নিশ্চয় আমি প্রেরণাকারী।’ পবিত্র কুরআনের এই বাণী থেকেও উপলব্ধি করা যায় কেন শবেবরাত মুসলমানদের কাছে এত মহিমাময়। সেই মহিমার রোশনাই জীবনে ও কর্মে অনুপ্রেরণার উৎস হিসাবে প্রয়োগের জন্যই প্রত্যেক মুসলমান এ রাতে ইবাদত-বন্দেগি করে কাটান।

গরিবদের মধ্যে বিতরণ করা হয় হালুয়া-রুটিসহ বিভিন্ন উপাদেয় খাদ্যসামগ্রী। ধনীদের সম্পদের ওপর যে গরিবের হক রয়েছে, তা বারবার উচ্চারিত হয়েছে পবিত্র কুরআনে। এই পবিত্র রাতে আমরা যেন ভুলে না যাই গরিব প্রতিবেশীর কথা। তাদের প্রতি আমাদের কর্তব্য রয়েছে। ইসলাম সাম্যে বিশ্বাসী।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের মুসলমানরাও ভাবগম্ভীর পরিবেশে শবেবরাত পালন করে থাকেন। প্রত্যেক ধর্মপ্রাণ মুসলমান মসজিদে মসজিদে নফল নামাজ আদায়, মিলাদ মাহফিল, দান-খয়রাতের মাধ্যমে মানবজাতির কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।

বিশ্ব দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে করোনা মহামারি মোকাবিলায় ব্যস্ত। তবে স্বস্তির বিষয়, দেশে করোনার ব্যাপকতা এখন কম। বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব মুসলমানের উচিত করোনাভাইরাস থেকে মুক্তিলাভের জন্য আল্লাহতায়ালার দরবারে মোনাজাত করা। মহান আল্লাহ আমাদের এই বালা-মুসিবত থেকে রক্ষা করুন।

ইসলামের শান্তি ও সম্প্রীতির শাশ্বত বাণীর প্রতিফলন ঘটাতে হবে আমাদের চিন্তা ও কর্মে। ইসলামের শিক্ষা থেকে কখনোই যাতে আমরা বিচ্যুত না হই, সে ব্যাপারেও সদা সজাগ থাকতে হবে।

আজকের সৌভাগ্য আর রিজিক বরাদ্দের, জীবন-মৃত্যুর দিনক্ষণ নির্ধারণের রজনীতে আমরা সবরকম গোঁড়ামি ও শিরক থেকে পরিত্রাণ লাভের প্রার্থনা করব মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে। এই রাত সমগ্র জাতির জন্য কল্যাণ বয়ে আনুক, এটাই সর্বান্তকরণে কামনা করি।

পবিত্র এই রজনীর আলোকচ্ছটায় আমাদের অন্তর হোক উদ্ভাসিত, দূর হোক কালিমা, সমৃদ্ধি আসুক সবার ঘরে-এটাই প্রার্থনা।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments