ক্রিকেট অপারেন্স কমিটির প্রধান হিসেবে আর থাকছেন না আকরাম খান। ফেসবুকে এমনই স্ট্যাটাস দেন তার স্ত্রী সাবিনা আকরাম। এরপর গেল দু’দিন থেকে শুরু হয় নানা আলোচনা-সমালোচনা। এমন সময় মুঠোফোন অনেকটা সময় বন্ধও রাখেন আকরাম। পরে তা খুললেও সংবাদমাধ্যমের সঙ্গেও কথা বলেননি। তবে হঠাৎ করেই গতকাল বিকালে তিনি নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে জানান, পারিবারিক কারণেই সরে যাচ্ছেন এই পদ থেকে। যদিও গুঞ্জন রয়েছে টাইগারদের টানা ব্যর্থতার কারণে তাকে এই পদ থেকে সারিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।৬ই অক্টোবর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিবিসি) নির্বাচনে আগামী ৪ বছরের জন্য নির্বাচিত হন ২৩ জন পরিচালক। গঠিত হয় নয়া পরিচালনা পরষদ। কিন্তু পরিচালকদের বিভিন্ন স্ট্যান্ডিং কমিটির দায়িত্ব নতুন করে বণ্টন করা হয়নি এখনো। আগের বোর্ডে যারা ছিলেন তারাই সেই দায়িত্ব পালন করছিলেন। তবে এ মাসেই বিসিবি’র বোর্ড সভা। জানা গেছে, সেখানেই কমিটিগুলোর নয়া প্রধান মনোনীত করবে বিসিবি। যেখানে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আকরামের অপারেন্স বিভাগের পদ নিয়ে। জানা গেছে, সেখানে নতুন কাউকেই দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে। যার অন্যতম দাবিদার হিসেবে শোনা যাচ্ছে খালেদ মাহমুদ সুজন ও কাজী ইনাম আহমেদের নাম। আর সেই কারণেই আগেই পদ ছাড়ার ঘোষণা দিচ্ছেন আকরাম! যদিও গতকাল নিজ বাসায় সংবাদমাধ্যমকে তিনি পারিবারিক কারণ হিসেবেই এমন সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, পারিবারিক কারণেই। যেহেতু আমি এখানে অনেক বছর ছিলাম। এখানে মানসিক ও শারীরিক শক্তির দরকার হয়। সব মিলিয়েই এই বিরতির সিদ্ধান্ত। উনার (নাজমুল হাসান পাপন) সঙ্গে আলাপ করে সিদ্ধান্ত, এখন আমি এ নিয়ে কিছুই বলতে চাই না। উনার পরামর্শ অনুসরণ করবো আমি।’
তবে আকরাম খান চূড়ান্তভাবে তার সরে যাওয়ার বিষয়টি ঘোষণা করেননি। তিনি জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের সঙ্গে আলোচনার পরই তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সরে যাওয়ার বিষয়টি ঘোষণা করবেন। তিনি বলেন, ‘আসলে আমি আজ কথা বলতে চাইনি। আপনারা যেহেতু চলে এসেছেন, কিছু তো বলতেই হবে। আমরা পারিবারিকভাবে একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমার ব্যাপারে। যেহেতু আমি আট বছর ক্রিকেট অপারেশন্সে ছিলাম, তো এটা নিয়ে আমাদের মাননীয় বোর্ড প্রেসিডেন্ট আমার যে গার্ডিয়ান, গত আট বছরে তার থেকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য পেয়েছি কাজের জন্য। যতগুলো খারাপ ভালো সময় গেছে, সব সময় তিনি আমার সঙ্গেই ছিলেন। তো তার সঙ্গে আলাপ করে হয়তো কালকের মধ্যে আমার সিদ্ধান্তটা জানিয়ে দিবো। তার কনসার্ন ছাড়া আমি আপনাদের কিছু বলতে পারবো না। তিনটার দিকে আজ কল করেছিলাম, রিপ্লাই দেননি। হয়তো যেকোনো সময় কল ব্যাক করবেন। কল করলে তার সঙ্গে আলাপ করে নেবো।’
এর আগে তিনি জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক থাকাকালে সেই সময়ের সভাপতি আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেই সময় তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে দায়িত্বে পুনর্বহাল হন। এবার তিনি বিতর্কে জড়িয়েছেন আরেক পরিচালক ও সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজনের সঙ্গে। সম্প্রতি আকরাম খানের ব্যর্থতা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন সুজন। বর্তমানে সুজন জাতীয় দলের টিম ডিরেক্টরের দায়িত্ব পালন করছেন। আছেন জাতীয় দলের সঙ্গে নিউজিল্যান্ড সফরেও। ধারণা করা হচ্ছে ক্রিকেট অপারেন্স কমিটিকে ব্যর্থতা থেকে বের করে আনতে সুজনকেই অপারেশন্সের দায়িত্ব দেয়া হতে পারে। তিনি গেম ডেভেলপমেন্টের চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন। যার হাত ধরেই যুব দল প্রথমবারের মতো দেশের জন্য নিয়ে এসেছেন বিশ্বকাপ জয়ের অর্জন।