২০২১ সালের ৬ই জানুয়ারি ক্যাপিটল হিল হামলার সময় ন্যান্সি পেলোসিকে হত্যার করতে চাওয়া এক নারীকে ২৭ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের আদালত। ফেডারেল প্রসিকিউটররা আদালতের কাছে দাবি করেছেন যে, ওই নারীর হুমকির কারণে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের তৎকালীন ডেমোক্রেট স্পিকারের জীবন ঝুঁকিতে পড়েছিল। দণ্ডপ্রাপ্ত ওই নারীর নাম পলিন বাউয়ার। এ খবর দিয়েছে আরটি।
খবরে জানানো হয়, ৫৫ বছরের পলিন পেনসিলভানিয়ার কেন এলাকায় একটি রেস্তোরাঁর মালিক। তার জন্য ছয় বছরের বেশি কারাদণ্ড দাবি করেছিলেন ফেডারেল প্রসিকিউটররা। ওই মামলার বিচারক ছিলেন ট্রেভর ম্যাকফ্যাডেন। তিনি পলিনকে দোষী সাব্যস্ত করেন এবং দুই বছর তিন মাসের সাজা দেন।
প্রসিকিউটর জেমস পিটারসনের দাবি অনুসারে, পলিন বাউয়ার একটি উত্তেজিত জনতার অংশ ছিলেন। তারাই প্রথম ২০২১ সালের ৬ই জানুয়ারি বিকেলে ক্যাপিটলে প্রবেশ করেছিল। তারা বারবার বলছিল, ‘আইন প্রণেতাদের বের করে আনতে হবে’। ওই সময় পলিনকে চিৎকার করে বলতে শোনা যায় যে, ‘এই আইনপ্রণেতারা সবাই অপরাধী।
তাদেরকে ফাঁসিতে ঝুলাতে হবে। ন্যান্সি পেলোসিকে এখনই বাইরে নিয়ে আসুন। আমরা তাকে ফাঁসি দিতে চাই। তাকে নিয়ে আসুন’! ওই সময় ন্যান্সি পেলোসি ছিলেন মার্কিন হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার।
গত সপ্তাহে আরেক ফেডারেল বিচারক পেলোসির অফিসে বসে ছবি তোলা এক দাঙ্গাকারীকে সাড়ে চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। রিচার্ড বিগো বার্নেট নামের ওই দাঙ্গাকারীকে ৬ই জানুয়ারির অন্যতম প্রধান মুখ বলে অভিহিত করেছে আদালত। তিনি পেলোসির ডেস্কে পা রেখে ছবি তুলেছিলেন।
ক্যাপিটল দাঙ্গার সাথে সম্পর্কিত ফেডারেল অপরাধের জন্য এখন পর্যন্ত এক হাজারেরও বেশি মানুষকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে সবথেকে বেশি শাস্তি পেয়েছেন ওথ কিপার্স মিলিশিয়ার নেতা স্টুয়ার্ট রোডস। তাকে গত সপ্তাহে ‘রাষ্ট্রদ্রোহী ষড়যন্ত্র’-এর জন্য ১৮ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
ঘটনার দিন হাজার হাজার প্রতিবাদকারী মার্কিন ক্যাপিটলে হামলা করেছিল। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের এই অনুসারীরা বিশ্বাস করেন যে, ২০২০ সালের মার্কিন নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপি হয়েছিল। ট্রাম্প নিজেও একাধিকবার এই দাবি করেছেন। ভোটের ফল পাল্টে দিতে ৬ই জানুয়ারি ক্যাপিটলে হামলে পড়েছিল তার সমর্থকরা।
এক পর্যায়ে কিছু বিক্ষোভকারী নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙ্গে ক্যাপিটল ভবনে প্রবেশ করে। এতে কয়েক ঘণ্টার জন্য হাউস ও সিনেটের যৌথ অধিবেশন ব্যাহত হয়। দাঙ্গাকারীদের মধ্যে একজন ছিলেন অ্যাশলি ব্যাবিট, যিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটরা জোর দিয়ে দাবি করে যে, ৬ই জানুয়ারির ওই ঘটনা ছিল মার্কিন সরকারের বিরুদ্ধে একটি ‘অভ্যুত্থান’।