Sunday, March 26, 2023
spot_img
Homeআন্তর্জাতিকনেপালে লেনদেন বন্ধ করে দিয়েছে সমস্ত বিদেশি ব্যাংকগুলো

নেপালে লেনদেন বন্ধ করে দিয়েছে সমস্ত বিদেশি ব্যাংকগুলো

নেপালের অর্থনৈতিক কাঠামো ক্রমশ ভেঙে পড়ছে। সে দেশের অর্থনীতি এতটাই খারাপ যে, সমস্ত ব্যাংক বিদেশি লেনদেন বন্ধ করে দিয়েছে। পরিস্থিতির চাপে পড়ে ভারত, বাংলাদেশ থেকে নেপালে সমস্ত পণ্য রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তা সরাসরি সে দেশের সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় মারাত্মকভাবে প্রভাব ফেলেছে। অনেকেই বলছেন, শ্রীলঙ্কার পথেই এগোচ্ছে নেপালও। আমদানি বন্ধ থাকায় মাথায় হাত পড়েছে নেপালের ব্যবসায়ীদের। এদিকে, এই পরিস্থিতির জেরে ভারতের বাজারেও ব্যাপক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কেননা পশ্চিমবঙ্গ এবং বিহারের বহু এলাকার ব্যবসা অনেকটাই নেপাল নির্ভরতা রয়েছে।
নেপালের অর্থনৈতিক অবস্থা এমনিতেই ততটা স্বচ্ছল নয়। নিজস্ব কোনও সম্পদ না থাকায় ৯০ শতাংশের বেশি প্রয়োজনীয় জিনিসই নেপাল বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করে। ঝাড়ু এবং আদা ছাড়া নেপালের নিজস্ব কোনও সম্পদ নেই বা এর বাইরে কিছু রপ্তানিও করে না।
নেপালের অর্থনীতি মূলত নির্ভর করে বিদেশি মুদ্রা লেনদেনের উপরে। এখানকার সরকারি, বেসরকারি ব্যাংকগুলিও বিদেশি মুদ্রা কারবারেই টিকে রয়েছে। এদিন কাঁকরভিটায় এক ব্যবসায়ী সম্মিলনির অফিসে বসে সেখানকার নেতা উমাশংকর সিং বলছিলেন, নেপালের সিংহভাগ পরিবারের অন্তত দুজন বিদেশে থাকে। বেশিরভাগই কুয়েত, দুবাই বা আরব আমিরশাহিতে বিভিন্ন কাজে যুক্ত। এছাড়া আমেরিকা, কানাডাতেও নেপালের কিছু ছেলেমেয়ে কাজ করে। বিদেশে কাজ করে সেখানকার উপার্জন করা মুদ্রা দেশে এনে তাঁরা ভাঙাতেন। এই বিদেশি মুদ্রার উপরই নেপালের অর্থনীতি অনেকটা নির্ভরশীল ছিল।
বিশ্বজুড়ে করোনা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পরে ২০২০ সালের এপ্রিল, মে মাস থেকেই লকডাউন এবং বিভিন্ন কারণে কাজ হারিয়ে দেশে ফিরেছেন নেপালের ছেলেমেয়েরা। করোনা পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হলেও এখনও সেই দেশগুলি আর এই কর্মীদের সবাইকে ফেরাতে রাজি হচ্ছে না। যার জেরে নেপালে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে বিদেশি মুদ্রার জোগান প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। গত এক দেড় বছরে এভাবেই নেপালের অর্থনৈতিক অবস্থা ভেঙে পড়ার মুখে।
নেপালের এই উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সেদেশের সরকার বেশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে। ইতিমধ্যেই নেপালের অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রক নেপাল রাষ্ট্র ব্যাংক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ব্যাংকের বিদেশি লেনদেন বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। আর এই নির্দেশের পরেই নেপাল সরকার ভারত, বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন দেশ থেকে পণ্য আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে। সেই তালিকায় চাল, চিনি, চকোলেট, জুতো, সিমেন্ট এবং সিমেন্ট তৈরির উপকরণ, জামাকাপড়, খেলার সামগ্রী, শাকসবজি, চিকিৎসা ও সার্জিক্যাল সরঞ্জাম, বৈদ্যুতিক সামগ্রী রয়েছে। নেপালের সরকারি সূত্রের খবর অনুযায়ী, ৯০ শতাংশ ধান এবং চালই ভারত এবং বাংলাদেশ থেকে আমদানি করে তারা। দেশের নয়া নির্দেশিকার জেরে দেশে খাবারের আকাল দেখা দেওয়ার আশঙ্কাও তীব্র হচ্ছে।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments