Saturday, July 27, 2024
spot_img
Homeনির্বাচিত কলামনীলক্ষেতের বই মার্কেটে আগুন

নীলক্ষেতের বই মার্কেটে আগুন

মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর নীলক্ষেতের বই মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ ঘটনায় মার্কেটের দোকানগুলোর হাজার হাজার বই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। জানা গেছে, মার্কেটে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকায় দোকানিরা প্রাথমিকভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে পারেননি। এজন্য এক দোকান থেকে অন্য দোকানে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এক ঘণ্টারও বেশি সময় চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। মঙ্গলবার এ এলাকার দোকানপাট সাপ্তাহিক ছুটির দিন হিসাবে বন্ধ থাকার কথা থাকলেও ওইদিন এ মার্কেটের বহু দোকানই খোলা ছিল। করোনার কারণে সৃষ্ট ক্ষতি পুষিয়ে নিতেই ব্যবসায়ীরা দোকান খোলা রেখেছিলেন। অগ্নিকাণ্ডে যেসব ব্যবসায়ী ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছেন, তাদের সরকারিভাবে বিশেষ সহায়তা প্রদানের বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত।

দেশে ছোট-বড় কোনো অগ্নিকাণ্ডের পর ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে করণীয় নিয়ে নানা আলোচনা হলেও পরে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় না। কোনো স্থাপনায় অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সেখানে কোনো ত্রুটি থাকলে তা সারানো যে জরুরি, এটি সংশ্লিষ্টরা ভুলে যান।

প্রশ্ন হলো, এসব বিষয় যাদের নিয়মিত তদারক করার কথা, তারা কী করেন? দেশে কত শতাংশ স্থাপনা অগ্নিঝুঁকিতে রয়েছে, এর মধ্যে কত শতাংশ অতি ঝুঁকিপূর্ণ-এসব বারবার আলোচনায় এলেও কর্তৃপক্ষের টনক না নড়ার বিষয়টি দুঃখজনক। দেশে বহুতল ভবনের সংখ্যা বাড়ছে। যেহেতু একটি বহুতল ভবনে অনেক মানুষ বসবাস বা অবস্থান করেন, সেহেতু এ ধরনের ভবনে অগ্নিনির্বাপণের পর্যাপ্ত সুবিধা নিশ্চিত করার বিষয়ে গুরুত্ব প্রদান করা উচিত হলেও বাস্তবে এর ব্যত্যয় ঘটছে।

যে কোনো শিল্পকারখানায় অগ্নিনির্বাপণের পর্যাপ্ত সুবিধা থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু অনেক কলকারখানার ভবন নির্মাণে এসব বিষয় যথাযথ গুরুত্ব পায় না। কর্তৃপক্ষের দুর্বল নজরদারির কারণে শ্রমিকরা ভয়াবহ ঝুঁকি নিয়ে শিল্পকারখানায় কাজ করছেন। কোনো অগ্নিকাণ্ডে সম্পদের যে ক্ষতি হয়, তা একসময় পূরণ করা সম্ভব; কিন্তু কারও জীবনহানি হলে সেই ক্ষতি পূরণ হওয়ার নয়।

প্রতিটি অগ্নিকাণ্ডই মানুষের জন্য সতর্কবার্তা রেখে যায়। অগ্নিকাণ্ড এড়াতে প্রথমেই যে বিষয়টির ওপর নজর দেওয়া দরকার তা হলো, ভবনে পর্যাপ্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা। এক্ষেত্রে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকাই যথেষ্ট নয়, সেসবের ব্যবহার জানা কর্মী এবং তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ থাকাও জরুরি। রাজধানীর অনেক সড়কের অবস্থা এমন যে তা দিয়ে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি দ্রুত পৌঁছাতে পারে না। তার ওপর রয়েছে যানজট। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে অগ্নিনির্বাপণের সামগ্রিক কর্মকাণ্ডে গতি আনতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments