নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন
বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোতে এক মাসেরও কম সময়ে ঘাতকরা অন্তত আটজনকে হত্যা করে সহিংস গ্যাংগুলোর বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস দেখানো ব্যক্তিদের নীরব করে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত নিউইয়র্ক টাইমস-এর এক প্রতিবেদনে এমন মন্তব্য করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে মোহাম্মদ নামের একজন ‘কমিউনিটি অরগানাইজার’ এর শরণার্থী জীবনের করুণ দৃশ্য তুলে ধরা হয়। নিরাপত্তা ঝুঁকির জন্য তার পুরো নাম প্রকাশ করা হয় নি।
মোহাম্মদ বলেছেন, “আমি ভীতিকর এবং হতাশাজনক জীবন যাপন করছি। মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে এসেছিলাম সেখানে আমাকে হত্যা করা হবে এই ভয়ে। কিন্তু এখানেও নিরাপদ জীবনের কোনো নিশ্চয়তা নেই”।
প্রতিবেদনে বলা হয়- গত মাসে শরণার্থী শিবিরে যারা নিহত হয়েছেন তাদের মধ্যে কয়েকজন বাংলাদেশি এবং আন্তর্জাতিক কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করেছিলেন যে তাদের নাম সবচেয়ে বড় জঙ্গি গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি বা ‘এআরএসএ’ এর হিটলিস্টে রয়েছে।
কয়েক দশক ধরে রোহিঙ্গাদের নিপীড়নের প্রতিবাদে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে একের পর এক হামলা চালানো ওই জঙ্গি গোষ্ঠীটি রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে নিজেদের আদেশ চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।
জনাব মোহাম্মদ, যিনি নিজের ‘কমিউনিটি ওয়ার্ক’ এর জন্য এআরএসএ সদস্যদের সাথে বিবাদে জড়িয়ে পড়েছেন, নিজেকে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের জন্য বারবার বাংলাদেশ সরকার এবং জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনারের (ইউএনএইচসিআর) কাছে আবেদন করেছেন।
সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে বন্দুকধারীদের হাতে মুহিব উল্লাহ নিহত হওয়ার পর থেকে জনাব মোহাম্মদ নিজ আশ্রয়স্থল ছেড়ে কোথাও যাননি। এআরএসএ জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কথা বলা একটি ইসলামিক স্কুলের সাথে যুক্ত সাতজনকে গুলি করে এবং ছুরিকাঘাতে হত্যা করার পর তার ভয় আরও তীব্র হয়।
নিহতদের পরিবার তাদের মৃত্যুর জন্য এআরএসএ-কে দায়ী করেছে এবং এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ওই গ্রুপের ব্যক্তিদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এআরএসএ অবশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি করেছে যে তারা ওই হত্যাকাণ্ড চালায়নি।
মোহাম্মদ বলেন, “প্লিজ আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার কোন নিরাপত্তা নেই।”