Sunday, March 26, 2023
spot_img
Homeধর্মনবীপ্রেমে চাই ভারসাম্য ও নিষ্ঠা

নবীপ্রেমে চাই ভারসাম্য ও নিষ্ঠা

রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ভালোবাসা ঈমানের অংশ। নবীজি (সা.)-কে যথাযথভাবে ভালোবাসতে না পারলে ব্যক্তির ঈমান অপূর্ণ থেকে যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে সত্তার হাতে আমার জীবন! তোমাদের কেউ পরিপূর্ণ মুমিন হতে পারবে না যতক্ষণ না আমি তার মা-বাবা ও সন্তান-সন্তুতি থেকে প্রিয় হবো। ’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৪)

তবে প্রাজ্ঞ আলেমরা বলেন, নবীজি (সা.)-এর ভালোবাসার ক্ষেত্রে ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে।

নবীপ্রেমের নামে এমন কিছু করা যাবে না, যা ইসলামী শরিয়ত অনুমোদন করে না, যার মাধ্যমে নবীজি (সা.)-কে আল্লাহর অংশীদার প্রমাণিত করা হয়। আবার তাঁর ভালোবাসা থেকে বিমুখও থাকা যাবে না। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি আপনাকে প্রেরণ করেছি সাক্ষীরূপে, সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে। যাতে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ঈমান আনো এবং রাসুলকে শক্তি জোগাও ও তাঁকে সম্মান করো; সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহর পবিত্র ও মহিমা ঘোষণা করো। ’ (সুরা ফাতহ, আয়াত : ৮-৯)

উল্লিখিত আয়াতদ্বয়ে আল্লাহ রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর দায়িত্ব ও কর্তব্য, তাঁর প্রতি মুমিনের করণীয় এবং তাঁর প্রতি সম্মানের সীমানা চিহ্নিত করেছেন। তা এভাবে যে পৃথিবীর অসংখ্য নবী-রাসুলের মতো তাঁর দায়িত্ব ছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে মানুষ সুসংবাদ ও হুঁশিয়ারি প্রদান করা। নবীজি (সা.)-এর প্রতি মুমিনের দায়িত্ব হলো তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা, তাঁর কাজে সহযোগিতা ও তাঁকে প্রাপ্য সম্মান দান করা। সম্মান ও ভালোবাসার সীমা হলো তাঁকে উপাস্যের স্তরে নিয়ে না যাওয়া। কেননা এই ক্ষেত্রে আল্লাহর কোনো শরিক নেই। আর রাসুলের ভালোবাসা ও আনুগত্য আল্লাহর ভালোবাসা ও আনুগত্যের অধীন। মহান আল্লাহর সতর্ক বার্তা হলো, ‘যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করে, আল্লাহকে ভয় করে ও তাঁর অবাধ্যতা থেকে সাবধান থাকে তারাই সফলকাম। ’ (সুরা নুর, আয়াত : ৫২)

শায়খ আবদুল্লাহ ইবনে বাজ (রহ.) বলেন, ‘রাসুল (সা.)-এর ভালোবাসা বিদআত নয়, তবে প্রকাশ পেতে হবে তাঁর পথ অনুসরণ, তাঁর আদেশ পালন ও নিষেধ পরিহার এবং সর্বদা তাঁর প্রতি দরুদ পাঠের মাধ্যমে। তবে রাসুলের ভালোবাসার নামে এমন কিছু করা যাবে না, শরিয়তে যার কোনো ভিত্তি নেই। কেননা মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘তাদের কি এমন কতগুলো দেবতা আছে, যারা তাদের জন্য বিধান দিয়েছে এমন দ্বিনের, যার অনুমতি আল্লাহ দেননি?’ (সুরা আশ-শুরা, আয়াত : ২১)

বিপরীতে ইসলাম সেসব মানুষেরও নিন্দা করেছে, যারা আল্লাহর রাসুলের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে না, তাঁর প্রতি দরুদ পাঠ করে না এবং তাঁর আনুগত্য করে না। অথচ মহান আল্লাহর ঘোষণা হলো, ‘হে মুমিনরা, তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য কোরো। ’ (সুরা আনফাল, আয়াত : ২০)

মহান আল্লাহ আরো বলেন, ‘আল্লাহ নবীর প্রতি অনুগ্রহ করেন এবং তাঁর ফেরেশতারাও নবীর জন্য অনুগ্রহ প্রার্থনা করে। হে মুমিনরা, তোমরাও নবীর জন্য অনুগ্রহ প্রার্থনা কোরো এবং তাঁকে যথাযথভাবে সালাম জানাও। ’ (সুরা আহজাব, আয়াত : ৫৬)

বিশেষত আল্লাহ সেসব মানুষকে সতর্ক করেছেন যারা সম্মানের নবীজি (সা.)-এর নাম উচ্চারণ করে না। ইরশাদ হয়েছে, ‘রাসুলের আহ্বানকে তোমরা তোমাদের একে অপরের আহ্বানের মতো গণ্য কোরো না। ’ (সুরা নুর, আয়াত : ৬৩)

আল-মাউসুয়াতুল আকাদিয়া

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments