Saturday, July 27, 2024
spot_img
Homeনির্বাচিত কলামনকল ও ভেজাল ওষুধ

নকল ও ভেজাল ওষুধ

নকল, ভেজাল ও মানহীন ওষুধে বাজার সয়লাব হয়ে যাওয়ার খবর প্রায়ই গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়। ফলে রোগ নিরাময়ের আশায় ওষুধ কিনতে গিয়েও মানুষের মনে নানা সংশয় কাজ করে। ওষুধ ভালো না মন্দ, নকল না আসল, তা যাচাই করার ক্ষমতা সাধারণ মানুষের নেই।

ওষুধ (নকল বা ভেজাল ওষুধ) যদি জীবন রক্ষার পরিবর্তে জীবন হরণের কারণ হয়, তাহলে তা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। তাই নকল বা ভেজাল ওষুধের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর বিকল্প নেই। এ রকম অভিযান যে মাঝে মধ্যে চালানো হয় না, তা নয়। অভিযানকালে কিছু নকল বা ভেজাল ওষুধ জব্দ করা হয়, আটক করা হয় এর সঙ্গে জড়িতদের।

এমনই এক অভিযানে এযাবৎকালের সবচেয়ে বেশি নকল ওষুধ জব্দ করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে এ অবৈধ কারবারের সঙ্গে জড়িত চক্রের ১০ সদস্যকে। জব্দ করা সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে দেশি-বিদেশি নামি কোম্পানির মোড়কে বিভিন্ন নকল ওষুধ।

পুলিশ জানিয়েছে, এসব নকল ওষুধ তৈরি করা হতো আটা, ময়দা ও বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ মিশিয়ে। জনপ্রিয় ও বহুল প্রচলিত বেশকিছু ওষুধ নকল করে বাজারজাত করত চক্রটি। কুমিল্লার কাপ্তান বাজারের একটি ইউনানি ওষুধ কারখানায় এসব নকল ওষুধ তৈরি করে গুদামজাত করা হতো ঢাকার সাভারে। সেখান থেকে বিপণনের জন্য নেওয়া হতো রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকায়। উল্লেখ্য, দেশের সর্ববৃহৎ ওষুধ বিপণন কেন্দ্র ঢাকার মিটফোর্ড এলাকার ওষুধ বাজার নকল, ভেজাল, মানহীন ওষুধের কেন্দ্র হয়ে ওঠার খবর ইতঃপূর্বেও গণমাধ্যমে এসেছে। অতীতে ক্ষতিকর ওষুধের বিরুদ্ধে এ মার্কেটে অভিযান চালাতে গিয়ে বাধার সম্মুখীনও হতে হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের। শুধু তা-ই নয়, মিটফোর্ডের ওষুধ ব্যবসায়ীরা মার্কেট বন্ধ করে অবরোধ পালন করেছেন, সারা দেশে ওষুধের দোকানে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন-এমন ঘটনাও অতীতে ঘটেছে। কাজেই নকল ওষুধ প্রস্তুত ও বিপণনকারী চক্রের সঙ্গে কোনো ওষুধ ব্যবসায়ী, প্রভাবশালী মহল ও প্রশাসনের কেউ জড়িত আছে কিনা, তার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত।

অভিযোগ আছে, দেশে সিংহভাগ ওষুধের দোকানেরই নেই লাইসেন্স বা অনুমোদন। এ কারণে সেসব দোকানের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে নকল ও ভেজাল ওষুধ। এতে জনস্বাস্থ্য পড়ছে হুমকির মুখে। ইতঃপূর্বে রাজধানীর কিছু এলাকায় নকল ওষুধ তৈরির কারখানার সন্ধান পাওয়া গেছে। সেসব স্থানেও পাওয়া গেছে নামিদামি ব্র্যান্ডের নকল ওষুধ।

জানা গেছে, এসব ওষুধ বিপণনের জন্য রয়েছে বিশেষ নেটওয়ার্ক। সেই নেটওয়ার্কই সব ধরনের কাজ করে থাকে। অতীতে কয়েকটি ওষুধ কোম্পানির তৈরি প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে অনেক শিশু মারা গেছে।

জানা যায়, সেসব ওষুধ খেয়ে শিশুদের কিডনি বিকল হয়ে গিয়েছিল। কাজেই দেশে নকল ও ভেজাল ওষুধের কারবারিদের নির্মূল করতে হবে যে কোনো উপায়ে। এজন্য ওষুধের বাজারে নিয়মিত অভিযান চালাতে হবে। নকল ওষুধের সব কারখানা খুঁজে বের করতে হবে গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে। এ ধরনের ওষুধের বিক্রেতাদেরও আনতে হবে কঠোর শাস্তির আওতায়।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments