Tuesday, March 28, 2023
spot_img
Homeনির্বাচিত কলামদেশ থেকে অর্থ পাচার কি বন্ধ হবে?

দেশ থেকে অর্থ পাচার কি বন্ধ হবে?

দেশ থেকে অর্থপাচার যেন থামছেই না। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে অঙ্ক শুধু বেড়েই চলছে। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফিন্যানশিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই) এক প্রতিবেদনে বলেছিল, বিদেশে টাকা পাচারে দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয় অবস্থানে বাংলাদেশ। এক নম্বরে আছে ভারত। সংস্থাটি জানায়, কেবল ২০১৫ সালেই বাংলাদেশ থেকে চার প্রক্রিয়ায় এক হাজার ১৫১ কোটি ডলার বা ৯৮ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। আর বিগত ১৬ বছরে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে গেছে অন্তত ১১ লাখ কোটি টাকা। প্রতিষ্ঠানটির দেয়া তথ্যানুযায়ী, ২০০৫ সালে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে ৪২৬ কোটি মার্কিন ডলার। একই ধারায় ২০০৬ সালে ৩৩৭ কোটি, ২০০৭ সালে ৪০৯ কোটি, ২০০৮ সালে ৬৪৪ কোটি, ২০০৯ সালে ৫১০ কোটি, ২০১০ সালে ৫৪০ কোটি, ২০১১ সালে ৫৯২ কোটি, ২০১২ সালে ৭২২ কোটি, ২০১৩ সালে ৯৬৬ কোটি, ২০১৪ সালে ৯১১ কোটি টাকা পাচার হয়। তাছাড়া বিগত বছরগুলোতেও অর্থপাচারের ঘটনা অনেকাংশে বেড়েছে। আগের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে সংস্থাটি জানিয়েছিল, বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে বছরে গড়ে প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যায়। সে হিসাবে ২০১৬ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ছয় বছরে পাচার হয়েছে চার লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা।

মূলত উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের মোট বাণিজ্যিক লেনদেনের প্রায় ২০ দশমিক ৫ শতাংশই কোনো না কোনোভাবেই পাচার হয়ে যাচ্ছে। তার মধ্যে অর্থ পাচারের চারটি প্রধান উপায় চিহ্নিত করেছে জিএফআই। এগুলো হচ্ছে- ১) আমদানি বাণিজ্যে ব্যাপক ওভার-ইনভয়েসিং, ২) রপ্তানি বাণিজ্যে আন্ডার-ইনভয়েসিং, ৩) রপ্তানি আয় দেশে ফেরত না এনে বিদেশে রেখে পাচার এবং ৪) হুন্ডি প্রক্রিয়ায় ব্যাংকঋণ বিদেশে পাচার।

জিএফআই’র তথ্য আস্থায় নিতে রাজি নন সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা। অবশ্য বিশ্লেষকরা বলছেন, অর্থপাচারের প্রকৃত চিত্র কিন্তু আরো ভয়াবহ। বর্তমানে এমন অনেক খাতেই অর্থপাচার হচ্ছে, যা জিএফআই আমলে নেয় নাই। অথচ, এই পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনা এবং পাচার বন্ধ করার বিষয়ে দায়িত্বশীলদের মুখ থেকে মাঝেমধ্যে জোরালো বক্তব্য শোনা গেলেও তা বাস্তবায়ন হতে দেখা যায় না। কার্যত বিষয়টি মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। তাছাড়া প্রতি বছর আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচারের নানান প্রতিবেদন প্রকাশ করলেও সরকারি দল এবং বিরোধী দলের তর্ক-বিতর্কে একে অন্যকে দোষারোপ করা ছাড়া জাতি আর কিছুই দেখতে পায় না। ফলে কিছুদিনের মধ্যেই সব স্তিমিত হয়ে যায়। আর ওদিকে নীরবে চলতে থাকে বাণিজ্যের নামে অর্থপাচারের ধারাবাহিকতা।

বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রতিবেদন বলছে, প্রধানত ১০টি দেশ এই অর্থপাচারের বড় গন্তব্যস্থল। দেশগুলো হলো: সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত, অস্ট্রেলিয়া, হংকং ও থাইল্যান্ড। আর পাচার চলছে মূলত বাণিজ্য কারসাজি ও হুন্ডির মাধ্যমে। তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিগত ১৬ বছরে বিদেশে যে পরিমাণ অর্থপাচারের কথা বলা হচ্ছে, তা সর্বশেষ দুই অর্থবছরের মোট বাজেটের সমপরিমাণ। চলতি অর্থবছরের বাজেটের আকার ছয় লাখ তিন হাজার ৬৮১ কোটি এবং আগের অর্থবছরে বাজেট ছিল পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া পাচারের এই অর্থ দেশের বর্তমান জিডিপির ৩১ শতাংশ। বর্তমানে দেশে জিডিপির আকার ৪০৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ১ ডলারের বিপরীতে ৮৫ টাকা হারে। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার না হলে দেশে বর্তমানে জিডিপির আকার ছাড়িয়ে যেত প্রায় পাঁচ’শত বিলিয়ন ডলারে।

অনেকে তুলনা করে বলছেন, পাচারের এই টাকা দিয়ে কয়েকটি পদ্মাসেতু বানানো যেত। সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্পের অন্যতম অংশ মেট্রো রেলই বা কতগুলো বানানো সম্ভব ছিল, এ হিসাবও কষছেন কেউ কেউ। উল্লেখ্য, পদ্মা সেতুর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকা এবং মেট্রো রেল প্রকল্পের ব্যয় ২২ হাজার কোটি টাকা। ফলে পাচারের এই অর্থ দিয়ে দেশের বড় বড় মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন করা যেত খুব সহজেই।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলছে, বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচারে যে তথ্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো প্রকাশ করছে, সেটাও আংশিক। বাস্তবে পরিমাণ আরো অনেক বেশি। অনেক বিদেশি বাংলাদেশে কাজ করেন। তাঁরা আয়ের বড় একটা অংশ অবৈধভাবে বিদেশে পাঠান। এটাও অর্থপাচার। এই তথ্য কিন্তু বৈশ্বিক সংস্থাগুলো উল্লেখ করে না। তারা শুধু বাণিজ্যের আড়ালে অর্থপাচারের তথ্য দেয়। তবে যারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করা গেলে অর্থপাচার প্রতিরোধ ও অর্থ ফেরত আনা যেত। এখানে সদিচ্ছার ঘাটতি আছে। কিন্তু আইনে যে ঘাটতি নেই তা ২০০৭ সালে দেখা গেছে। তখন সিঙ্গাপুর থেকে পাচার করা কিছু অর্থ ফেরত আনা হয়েছিল।

সংশ্লিষ্টদের মতে, আইনি জটিলতা, তদন্তে দীর্ঘসূত্রতা, আদালতে আসামিপক্ষের সময়ক্ষেপণ, সমন্বয়ের অভাব এবং উচ্চ আদালতে স্থগিতাদেশ থাকাসহ নানা জটিলতার কারণে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনা যাচ্ছে না। অর্থপাচারের অভিযোগ খতিয়ে দেখে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার আছে দুদকের। অর্থপাচার, স্থানান্তর ও রূপান্তরকে ‘শাস্তিযোগ্য অপরাধ’ গণ্য করে ২০১২ সালে প্রথমে ‘মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন’ প্রণীত হয়। এরপর ২০১৫ সালের ২৬ নভেম্বর সরকার এটি সংশোধন করে গেজেট প্রকাশের পর থেকে দুদকসহ মোট পাঁচটি সংস্থা মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায়। সংশোধিত আইনে দায়িত্ব পাওয়া অন্য চারটি সংস্থা হলো: অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। প্রশাসন ও সরকারি কোনো সংস্থাকে মামলার বিষয়ে সহায়তা করে বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট’। এরপর থেকে পাঁচটি তদন্ত সংস্থা অর্থপাচারের অভিযোগে মামলা দায়ের ও তদন্ত করে আসলেও অর্থপাচারের ৯৫ শতাংশ মামলাই নিষ্পত্তি হয় না। মোট মামলার তিন-চতুর্থাংশই এখনও পারেনি নিম্ন আদালতের গণ্ডি পেরোতে। সুপ্রিমকোর্ট ও দুদকের তথ্য বলছে, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে শত শত মামলার বিচার চলছে বছরকে বছর ধরে।এর মধ্যে হাইকোর্টের আদেশে কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে প্রায় শতাধিক আলোচিত মামলা।

এদিকে, ১ কোটি ২০ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশির দেশে রেমিট্যান্স প্রেরণে হুন্ডি পদ্ধতির ব্যাপক ব্যবহার সাম্প্রতিককালে হুন্ডি প্রক্রিয়ায় ব্যাংকঋণের টাকা পাচার নাটকীয় হারে বেড়েছে। দেশের বৃহৎ শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীরা ব্যাংকঋণকে একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ফেলায় খেলাপি ঋণের সিংহভাগই বিদেশে পাচার হয়ে গেছে, তাই এসব খেলাপি ঋণ কখনো ব্যাংকগুলোতে আর ফেরত আনা যাবে না। যাঁরা ‘রাঘববোয়াল ঋণখেলাপিদের’ দমন করার দায়িত্বপ্রাপ্ত, তাঁরাই গোষ্ঠীপ্রীতির কারণে উল্টোপাল্টা নীতি নিয়ে খেলাপি ঋণ সমস্যাকে কার্পেটের তলায় লুকিয়ে ফেলছেন। এ জন্যই দেশের ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ প্রকৃতপক্ষে তিন লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেলেও নানা কায়দাকানুনের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ক্ল্যাসিফায়েড ঋণের সর্বশেষ প্রকাশিত পরিমাণকে ১ লক্ষ ১৬৮ কোটি টাকা দেখানো হচ্ছে।

এখানে মনে রাখতে হবে, দেশে খেলাপি ঋণগ্রহীতাদের অধিকাংশই ‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’। ফলে তাঁদের ঋণ ফেরত দেয়া বা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। এ ধরনের ঋণগ্রহীতারা ব্যাংকঋণের উল্লেখযোগ্য অর্থ বিদেশে পাচার করে দিয়েছেন বা দিচ্ছেন। বিদেশে তাঁরা এরই মধ্যে ঘরবাড়ি-ব্যবসাপাতি কিনে অভিবাসন নিয়ে ফেলেছেন। তাঁদের স্ত্রী-পুত্র-কন্যারা বিদেশে বসবাস করছেন, তাঁরা নিজেরাও বিদেশে যাওয়া, দেশে আসা চালিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে দেশে-বিদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য বা চাকরি বজায় রেখে অর্থ পাচার করে যাচ্ছেন। ভবিষ্যতে খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য কিংবা দুর্নীতি দমনের জন্য সরকার যদি সত্যি সত্যিই কোন ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নেয় তবে তাঁরা তখন দেশ ত্যাগ করে চলে যাবেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্য ও হাইকোর্টের রুল বিলম্বে হলেও সমস্যাটিকে জনগণের মনোযোগের কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে। বিশ্লেষকদের মতে, দুদক যদি সত্যিকারভাবে অর্থ পাচার মোকাবিলা করতে চায়, তাহলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দেশের দূতাবাস বা হাইকমিশনকে পত্র দিয়ে পাচারকারীদের তথ্য সংগ্রহের এবং আইনি প্রক্রিয়ার যে প্রয়াস চালাচ্ছে, তা বদলাতে হবে। কারণ বাংলাদেশের অর্থ পাচারকারী শত শত দুর্নীতিবাজ সিভিল আমলা, প্রকৌশলী, সামরিক অফিসার, ব্যাংকার, রাজনীতিবিদ এবং গার্মেন্ট মালিক ব্যবসায়ী-শিল্পপতি’ প্রধানত যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, ইউরোপের অন্যান্য দেশ, মধ্যপ্রাচ্য, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ভারতে অর্থ পাচার করে সেসব দেশের দ্বৈত নাগরিকত্ব, গ্রিন কার্ড, পারমানেন্ট রেসিডেন্টশিপ বাগিয়ে ফেলেছে। ফলে বিদেশি আইনে তাদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব নয়।

জাতীয় সামনে বিদেশে অর্থ পাচারকারী এই সাহেবদের দেশের আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর সদিচ্ছা বা সামর্থ্য সরকারের আছে কি না অথবা পাচারকৃত অর্থ দেশে আদৌ ফেরত আনা যাবে কি না, সেটা প্রশ্নবিদ্ধ হলেও যথাযথ অগ্রাধিকার সহকারে এদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে সরকারিভাবে প্রকাশ করলে বিশেষজ্ঞদের মতে, নিচের পদক্ষেপগুলো গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে:

১. যেসব চাকরিরত সিভিল আমলা, প্রকৌশলী, সামরিক অফিসার এবং অন্যান্য ধরনের সরকারি কর্মকর্তার নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে, অবিলম্বে তাঁদের সাময়িক বরখাস্ত করে তাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা দায়ের করা যাবে এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁদের চাকরিচ্যুতি, জেল-জরিমানা এবং সম্পত্তি ক্রোকের মতো দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা যাবে।

২. যেসব ব্যাংকঋণ গ্রহীতার নাম তালিকায় থাকবে, তাঁদের অবিলম্বে সব ব্যাংকের কালো তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে ব্যাংকঋণ থেকে স্থায়ীভাবে অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে। তাঁরা ঋণখেলাপি হলে তাঁদের ঋণ পুনঃ তফসিলীকরণের সুযোগ রদ করতে হবে। তাঁদের বিরুদ্ধে অর্থঋণ আদালত কিংবা উচ্চতর আদালতে ঋণখেলাপের মামলা চলমান থাকলে একটি ‘ঋণখেলাপি বিচার ট্রাইব্যুনাল’ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ওই মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির মাধ্যমে তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিবিধান করতে হবে।

৩. ‘রাইট-অফ’ করা খেলাপি ঋণগ্রহীতাদের নাম ঋণ পাচারকারীর তালিকায় থাকলে উক্ত ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে অবিলম্বে তাঁদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে হবে।

৪. ব্যাংকমালিকের বা ব্যাংকের পরিচালকের নাম তালিকায় থাকলে তাঁদের ওই মালিকানা বা পরিচালনা বোর্ড থেকে অবিলম্বে অপসারণ করে ট্রাইব্যুনালের বিচারে সোপর্দ করা যাবে।

৫. যেসব রাজনীতিবিদের নাম অর্থ পাচারকারীর তালিকায় থাকবে, তাঁদের মন্ত্রিসভা এবং দলীয় নেতৃত্ব থেকে অপসারণ করা যাবে। সংসদ সদস্যদের নাম তালিকায় থাকলে, তাঁদের সদস্যপদ স্থগিত করে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে হবে। তালিকায় নাম থাকলে অবসরে যাওয়া সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুদক মামলা দায়ের করতে সহজ হবে।


সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের হালনাগাদ প্রতিবেদনের সংক্রান্ত তথ্যে জানা যায়, দেশে রেমিট্যান্সের পরিমান দিন দিন বাড়ছে, যা গুরুত্বের সঙ্গে বিশ্লেষণের মতো। চলতি বছরের মার্চে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন শুধু যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশিরা। পরিমাণে তা ৩০ কোটি ৮৮ লাখ (৩০৮.৮২ মিলিয়ন) ডলার। যুক্তরাষ্ট্র থেকে একক মাসে আগে কখনো এ পরিমাণ রেমিট্যান্স আসেনি। অন্য সময় হলে বাংলাদেশের প্রবাসী আয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সেকেন্ড পজিশনের তেমন নিউজভ্যালু থাকত না। তথ্যমূল্যের দিক থেকে তা হতো একটি সাদামাটা সংবাদ। কিন্তু সময়-পরিস্থিতিও বিবেচ্য বিষয়। বাংলাদেশ প্রশ্নে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নানা কারণে যারপরনাই প্রাসঙ্গিক। যে কারণে রেমিট্যান্সের ঘটনাটির মধ্যে অনেক উপাদান পাচ্ছেন এ বিষয়ক অভিজ্ঞরা।

পাচার করা অবৈধ টাকা এবার বৈধ পথে ফিরে আসতে শুরু করেছে কি না? এমন রসাত্মক প্রশ্নের মাঝে আমলে নেওয়ার উপাদানও কম নয়। কারণ বিশ্বের নানা প্রান্তে সেকেন্ড বা থার্ড হোম বিজনেসে কিছুটা ছেদ পড়েছে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে। এতে যুক্তরাষ্ট্রে টাকা রাখায় ঝুঁকি ভর করেছে। বাধ্য হয়ে কারো কারো দেশের চোরাই টাকার কিছু কিছু দেশে পাঠানো ছাড়া গতি নেই।

লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments