২০২০ সালের মে মাসে সীমান্তে উত্তেজনাকর অবস্থার পর সৃষ্ট অচলাবস্থার মধ্যে প্রায় দেড় বছর পর শেষ পর্যন্ত নয়াদিল্লিতে দূত পাঠিয়েছে চীন। শুক্রবার রাষ্ট্রদূত সু ফেইহং (৬০) এবং তার স্ত্রী তান ইউসিউ নয়াদিল্লিতে পৌঁছেন। জানান, অতীতের পৃষ্ঠা উল্টে একসঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত চীন। আহ্বান জানিয়েছেন আলোচনার মাধ্যমে পারস্পরিক সুনির্দিষ্ট ইস্যুগুলোর গ্রহণযোগ্য সমাধান বের করার ওপর। সু ফেইহং এর আগে আফগানিস্তানে এবং রোমানিয়ায় চীনের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ভারতে চীনের ১৭তম রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দিয়েছেন।
২০২২ সালের মার্চ মাস থেকে বেইজিংয়ে ভারতের ফুলটাইম রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন প্রদীপ কুমার রাওয়াত। সু ফেইহং বলেছেন, নয়াদিল্লিতে তার নিয়োগকে তিনি সম্মানজনক এক মিশন এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নত ও অগ্রগামী করার জন্য একটি পবিত্র দায়িত্ব হিসেবে দেখেন। তিনি বলেন, দুই দেশের জনগণের মধ্যে গভীর বোঝাপড়া এবং বন্ধুত্বকে আরও গাঢ় করতে আমার সর্বোত্তম চেষ্টা করবো। বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা সহযোগিতা করবো। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে উন্নত করবো এবং সামনে এগিয়ে নেবো।
তবে সুনির্দিষ্ট ইস্যু বলতে তিনি কোন সব ইস্যুকে বুঝিয়েছেন তা পরিষ্কার করেননি।
ওদিকে সম্প্রতি নিউজউইক ম্যাগাজিনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, চীনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ ও উল্লেখযোগ্য। এক্ষেত্রে তিনি ভারত সরকারের পক্ষ থেকে সমর্থন ও সহযোগিতা দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। তবে তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, ভারতের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন এবং সার্বিক অর্থনীতিকে বিস্তৃত করা হবে। তা পররাষ্ট্রনীতিতে বড় রসদ যোগাবে বৈশ্বিক প্রভাব বিস্তারে এবং অর্থনৈতিক ফ্রন্টে চীনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। অনলাইন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও বার্তা সংস্থা পিটিআই এ খবর দিয়েছে। এতে বলা হয়, জয়শঙ্কর বলেছেন, ভারত-চীন বাণিজ্যিক সম্পর্ক সত্ত্বেও বেইজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা নির্ভর করে এখন পূর্ব লাদাখ সীমান্তের ওপর।
জয়শঙ্কর আরও বলেন, আমাদের আস্থাশীল হওয়া প্রয়োজন। আমি পরিষ্কার করে বলছি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এখন প্রতিযোগিতামূলক। চীনের মতো একটি প্রতিবেশী আছে আমার। আমাকে প্রতিযোগিতা করা শিখতে হবে। তিনি আরও বলেন, চীন কিন্তু কোনোকিছুতে থেমে থাকছে না। যদি আমি দেশের ভেতরে আমার শক্তি বৃদ্ধি না করি, আমাদের পররাষ্ট্রনীতি হবে আমাদের অভ্যন্তরীণ নীতির মতো।