Friday, September 29, 2023
spot_img
Homeনির্বাচিত কলামদুর্যোগ নিয়ে গোলটেবিল

দুর্যোগ নিয়ে গোলটেবিল

জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস-২০২২ উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার যুগান্তর কার্যালয়ে এক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান এবং সভাপতিত্ব করেন একই মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান।

অনুষ্ঠানে বক্তারা দুর্যোগ ও দুর্যোগ প্রতিরোধে প্রস্তুতি বিষয়ে চিন্তা উদ্রেককারী নানা বক্তব্য রেখেছেন। বক্তারা বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে রোল মডেল হিসাবে নিজেদের অবস্থান তৈরি করে নিয়েছে।

তবে মানবসৃষ্ট দুর্যোগ ও ভূমিকম্প মোকাবিলার প্রস্তুতির ক্ষেত্রে এখনো অনেক ঘাটতি রয়েছে।

তারা আরও বলেন, মাটির নিচে সেবা সংস্থাগুলোর সরবরাহ লাইন কোথায় কীভাবে রয়েছে, সেটির কোনো ম্যাপিং নেই। তাদের মতে, বেজমেন্ট লাইনের ডেটা সংগ্রহ করতে হবে, অন্যথায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা কঠিন হয়ে পড়বে।

বক্তারা প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা বাড়ানোর ওপরও গুরুত্বারোপ করেন। প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, ভূমিকম্প এক বড় দুর্যোগ, এই দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড প্রণয়ন করা হয়েছে। এই কোড অনুযায়ী, সাড়ে সাত রিখটার স্কেলকে স্ট্যান্ডার্ড ধরে এখন থেকে ভবন নির্মিত হবে।

তিনি বলেন, আগুনের ঝুঁকি হ্রাসে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগকে সহনীয় করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী আমাদের ডেল্টা প্ল্যান দিয়েছেন। এর ফলে সব দুর্যোগে সহনীয় রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে যাবে।

বলার অপেক্ষা রাখে না, দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের কী করণীয়, সে প্রসঙ্গে গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা যা বলেছেন, তা আশাপ্রদ। তবে এটাও ঠিক, প্রস্তুতির শেষ বলে কিছু নেই। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। প্রতিটি দুর্যোগই আমাদের সামনে নতুন প্রেক্ষাপট নিয়ে হাজির হয়। প্রতিটি দুর্যোগের ধরন ও মাত্রা হয় ভিন্ন ভিন্ন। তাই সব ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের যে প্রস্তুতি, তা সময়ে সময়ে আপডেট করতে হবে। দ্বিতীয় কথা, রোহিঙ্গা সংকট মানবসৃষ্ট এক বড় দুর্যোগ। এ দুর্যোগ দেশের জন্য বহুমাত্রিক সংকট তৈরি করেছে। দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে এ দুর্যোগ কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা নিতে হবে।

তবে দুর্যোগ মোকাবিলায় সবচেয়ে যা জরুরি তা হলো, জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা। বিপদাপন্ন মানুষের মধ্যে যদি দুর্যোগের ঝুঁকি ও ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা যায় এবং একইসঙ্গে তাদের সক্ষমতা বাড়ানো যায়, তাহলে তাদের দুর্দশা অনেকাংশে লাঘব করা সম্ভব। আরও একটি বিষয় উল্লেখ করার মতো। দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের দেশে বাণিজ্যিক-করপোরেট সংস্থার অংশগ্রহণ তথা অবদান নেই বললেই চলে। বিশ্বের অনেক দেশে এ ধরনের কাজে বাণিজ্যিক-করপোরেট সংস্থার অংশগ্রহণ ও অবদান নিয়মিত ব্যাপার হলেও এ দেশে তেমনটা নয়। দুর্যোগ মোকাবিলায় তাদেরকেও অংশীদার হতে হবে। আমরা আশা করতে চাই, প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট-উভয় ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ দিনে দিনে আরও সক্ষম হয়ে উঠবে।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments