প্রায় দু’বছর পর যুক্তরাষ্ট্রে পরিবারের সদস্য, বন্ধুবান্ধবের মুখ দেখতে পারছেন অন্য দেশে বসবাস করা তাদের স্বজনরা। সোমবারই বাইরে থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণকারীদের প্রবেশ শুরু হয়েছে। ফলে দীর্ঘ এ সময়ের ব্যবধানে ওইসব পরিবারে খুশির হিল্লোল বয়ে যাচ্ছে। করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধ করার জন্য যেসব মানুষ যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক নন, তাদের জন্য সেখানে প্রবেশে বিধিনিষেধ ছিল। কিন্তু তা তুলে নেয়ার পর ভ্রমণকারীরা যেন রুদ্ধশ্বাসে ছুটছেন। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। যুক্তরাষ্ট্রে ব্যতিক্রমী এই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রথম আরোপ করা হয়েছিল ২০২০ সালের শুরুতে। এর ফলে চীন, ভারত ও ইউরোপের বেশির ভাগ স্থানের ৩৩ টি দেশের আকাশপথে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল।
মেক্সিকো ও কানাডা থেকে স্থলপথে প্রবেশে ছিল বিধিনিষেধ। অনাকাঙ্খিত এই নিষেধাজ্ঞার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের পর্যটন খাতে বিশাল আঘাত লেগেছে। তবে বিয়ে, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া বা নতুন শিশুর জন্মের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পেরেছেন ঘনিষ্ঠজনরা।
সব নিষেধাজ্ঞা সোমবার তুলে নেয়া হয়েছে ভ্রমণকারীদের ওপর থেকে। যারা করোনা ভাইরাসের টিকা নেয়ার সরকারি ডকুমেন্টভিত্তিক প্রমাণ দিতে পেরেছেন এবং সম্প্রতি ভাইরাল পরীক্ষায় নেগেটিভ ফল পেয়েছেন, তাদেরকে যুক্তরাষ্ট্রে আকাশপথে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। প্যারিসভিত্তিক জেটসেট ভয়েজার ট্রাভেল এজেন্সি উত্তর আমেরিকায় ফ্লাইট পরিচালনা করে। এর কর্মকর্তা জেরোমি থোম্যান বলেছেন, ২০১৯ সালের অক্টোবরে পরিস্থিতি যেমন ছিল, এখন আমরা একেবারে নিষ্ক্রিয় অবস্থা থেকে সেই অবস্থায় ফিরে গিয়েছি। শুরুতেই লন্ডন, প্যারিস বা অন্য স্থান থেকে ছেড়ে যাওয়া আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের কিছু আসন খালি থাকতে পারে। তবে সামনে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে যাত্রীর সংখ্যা অনেক বেশি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে সোমবার সকালে বৃটিশ এয়ারওয়েজের নিউ ইয়র্কগামী প্রথম ফ্লাইটে আরোহন করার কথা বিন্দিয়া প্যাটেলের। দক্ষিণ লন্ডনের বিন্দিয়া এই সুযোগ পেয়ে যারপরনাই খুশিতে আত্মহারা। কারণ, দু’বছর পরে অবশেষে তিনি প্রথমবারের মতো ভাতিজার মুখ দেখতে পাবেন। তিনি বলেন, আনন্দে আমি যেন কান্নায় ফেটে পড়ছি।
প্রথমদিকে যাত্রীদের প্রচ- ভিড় হতে পারে বলে মনে করছে বিমান সংস্থাগুলো। তারা বলেছে, আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের জন্য তারা টিকা বিষয়ক ডকুমেন্ট চেক করবে। ওদিকে সোমবার থেকে মেক্সিকো এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিরাজমান প্রায় ২ হাজার মাইল সীমান্ত নতুন করে চালু হচ্ছে। এই সুযোগে সীমান্ত অতিক্রম করে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে সেখানে আশ্রয় প্রার্থনা সহজ হবে- এই আশায় মেক্সিকো সীমান্ত সঙ্গে লাগোয়া তিজুয়ানার মতো শহরে জড়ো হয়েছেন কয়েক হাজার অভিবাসী। এসব সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সময় টিকা বিষয়ক ডকুমেন্ট চাওয়ার কথা ইউএস কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশন কর্মকর্তাদের। তবে এমন শর্তের বাইরে থাকবে ১৮ বছরের কম বয়সীরা।