Thursday, March 28, 2024
spot_img
Homeধর্মদায়িত্ব গ্রহণের পর অবহেলা নয়

দায়িত্ব গ্রহণের পর অবহেলা নয়

ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিতে নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তির ওপর অর্পিত দায়িত্ব তাঁর জন্য পবিত্র আমানত। চুক্তি অনুযায়ী শরিয়ত অনুমোদিত এমন দায়িত্ব পালনে ব্যক্তি বাধ্য এবং তা মুমিনের ঈমানি দায়িত্ব। (আল-মাউসুআতুল ফিকহিয়্যা আল-কুয়েতিয়্যা : ৪৪/৬৩)

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে আদর্শ শ্রমিকের দুটি বিশেষ গুণের কথা উল্লেখ করেছেন। তা হালো, আমানতদার ও শক্তি-সামর্থ্যের অধিকারী হওয়া। ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমার মজুর হিসেবে উত্তম হবে সেই ব্যক্তি, যে শক্তিশালী, বিশ্বস্ত।’ (সুরা কাসাস, আয়াত : ২৬)

অন্য আয়াতে আল্লাহ অর্পিত দায়িত্ব ও অঙ্গীকার পূরণে তাগিদ দিয়ে বলেন, ‘যারা নিজেদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে।’ (সুরা মুমিনুন, আয়াত : ৮)

আল্লামা ইবনে কাসির (রহ.) এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, ‘যাদের কাছে কিছু আমানত রাখা হলে তা সে যথাযথ ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দেয় এবং যারা চুক্তিবদ্ধ হলে ও অঙ্গীকার করলে তা পূরণ করে।’

নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তির জন্য সেবাপ্রদান কোনো ঐচ্ছিক বিষয় নয়। কেননা ইসলামী শরিয়ত পেশাগত দায়িত্বকে ‘আমানত’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে এবং আল্লাহ তা যথাযথ ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছেন আমানত তার হকদারের কাছে পৌঁছে দিতে এবং তোমরা যখন মানুষের মধ্যে বিচার করবে, তখন ন্যায়পরায়ণতার সঙ্গে বিচার করবে।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ৫৮)

বিশেষত যারা রাষ্ট্রীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত তাদের সেবাপ্রদানের বিষয়টি মোটেই ঐচ্ছিক নয়। সেলজুক শাসক মালিক শাহের প্রধানমন্ত্রী নিজামুল মুলক বাগদাদে পৌঁছানোর পর আবু সাদ ইবনে আবি উমামা তাকে বলেন, ‘সদরুল ইসলাম! আপনি জানেন, মানুষের মধ্যে কেউ কেউ (নিয়োগপ্রাপ্ত নয় এমন) দায়িত্বপালনে ইচ্ছাধীন। তারা ইচ্ছা করলে মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে পারে আবার নাও রাখতে পারে। কিন্তু যারা দায়িত্বের জন্য নির্বাচিত, মানুষের জীবনোপকরণ যাদের হাতে অর্পিত দায়িত্বপালন তাদের ইচ্ছাধীন নয়। কেননা যে প্রকৃতার্থে মানুষের ‘আমির’ (দায়িত্বপ্রাপ্ত) সে একজন ‘আজির’ (শ্রমিক)। সে নিজেকে বিক্রি করেছে এবং বিনিময় গ্রহণ করেছে। সুতরাং দিনের কোনো অংশ নিজের ইচ্ছামতো ব্যয় করতে পারবে না, এই সময় সে নফল নামাজ আদায় করবে না, রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব ছেড়ে মসজিদে ইতিকাফ করবে না। কেননা এসব কাজ নফল আর দায়িত্ব পালন অত্যাবশ্যক ও ফরজ।’ (শামসুদ্দিন মুহাম্মদ ইবনে আহমদ জাহবি, তারিখুল ইসলাম : ৩৫/১৫০-৫১)

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments