ফিরোজাবাদের জামে মসজিদ
মসজিদে একটা বড় বাউলি রয়েছে। যার বয়স মসজিদের জন্মের সময়ের বা দুর্গের পত্তনের সময়ের হবে। বাউলিতে পানি উত্তোলন আপাতত বন্ধ রয়েছে, সেখানে সংস্কারকাজ চলমান রয়েছে। সেই সময় বাউলি কোটলার বাসিন্দাদের পানির চাহিদা পূর্ণ করত। বাউলিতে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষেধ। ফিরোজ শাহ কোটলার আশপাশের এলাকায় বেশ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে।
দিল্লি সালতানাতের আমলে ইন্দো-ইসলামিক স্থাপত্যরীতি অনুসরণ করে নির্মিত এই মসজিদে নেই কোনো সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা। আসলে মসজিদটি এমন অবস্থায় রয়েছে যে তার মিহরাব, মিনার, খিলানের বর্ণনা দেওয়া কঠিন। তবে কোটলার ধ্বংসপ্রায় দালানের অংশবিশেষ দেখে এর স্থাপত্যরীতি সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যেতে পারে। বর্তমানে মসজিদের কোনো মিনার অবশিষ্ট না থাকলেও ধ্বংসপ্রায় মিহরাব বিদ্যমান। মেঝেতে কোয়ার্টজ পাথরের ওপরে চুনের প্রলেপ লক্ষ করলাম। এ ছাড়া ছাদ না থাকলেও তিনটি ধ্বংসপ্রাপ্ত দেয়াল রয়েছে। মসজিদে ঢোকার সংস্কারহীন প্রধান ফটক এখনো কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেও তা অবহেলিত বোঝা যায়। ফটকটিতে একটি খিলান ও ধ্বংসপ্রায় গম্বুজ অবশিষ্ট রয়েছে, যা ইসলামী স্থাপত্যচিহ্ন বহন করছে।
তুঘলক শাসকদের অধীনে স্থাপত্য বিভাগ ও নির্মাণ বিভাগ আলাদা ছিল। তুঘলক সাম্রাজ্যের তৃতীয় সুলতান ফিরোজ শাহ তুঘলক (শাসনকাল ১৩৫১-১৩৮৮) বহু ইমারত নির্মাণ করেছিলেন। তাঁর সময়ে নির্মিত ইমারতগুলোর স্থাপত্যকলার বৈশিষ্ট্যগুলো ইসলামী স্থাপত্যকলায় দেখা যায় অথবা ইসলামী স্থাপত্যকলার বৈশিষ্ট্য থেকে আলাদাও হতে পারে। এই সময়ে ইন্দো-ইসলামী স্থাপত্যে ভারতীয় স্থাপত্যের কিছু উপাদান যুক্ত হয়। যেমন উঁচু স্তম্ভমূলের ব্যবহার, ইমারতের কোনা ছাড়াও স্তম্ভ; স্তম্ভের ওপরে ও ছাদে ঢালাইয়ের ব্যবহার।