Thursday, June 1, 2023
spot_img
Homeআন্তর্জাতিকতুরস্ক-চীন এত নিষেধাজ্ঞার পরও রাশিয়াকে বিপদে পড়তে দেয়নি?

তুরস্ক-চীন এত নিষেধাজ্ঞার পরও রাশিয়াকে বিপদে পড়তে দেয়নি?

গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেন হামলার পর থেকে ইইউ অন্তত দশবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। রাশিয়া থেকে আমদানি ও রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। সমুদ্রপথে রাশিয়া থেকে তেল আসছে না। রাশিয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পরেই একের পর এক নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তবু ইউরোপের জিনিস রাশিয়া পৌঁছাচ্ছে।

তেল, গ্যাস ও পেট্রো পদার্থের দামের সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও ২০২২ সালে রাশিয়ার অর্থনীতির ওপর যতটা চাপ আসবে বলা হয়েছিল, তা হয়নি।

ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্সের প্রধান অর্থনীতিবিদ রবিন ব্রুকস বলেছেন, রাশিয়ার ওপর ইইউ যখন নিষেধাজ্ঞা জারি করল, তখন তেলের ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি। কারণ তখন ভয় ছিল, এই কাজ করলে বিশ্বজুড়ে তেলের দাম অনেকটাই বেড়ে যাবে। তার চাপ সামলাতে গিয়ে বিপাকে পড়বে দেশগুলো।

ব্রুকস জানিয়েছেন, এর মানে এই নয় যে, নিষেধাজ্ঞা কাজ করেনি। কিন্তু এটিও ঘটনা, তেল বিক্রি করে রাশিয়ার হাতে প্রচুর অর্থ জমা হয়েছে।

ব্রাসেলসের থিংক ট্যাংক ব্রুগেলসের মারিয়া ডেমের্টজিস বলেছেন, এখন তাই নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি তা কীভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে, তার ওপরে জোর দেওয়া হচ্ছে।

জার্মান অর্থ মন্ত্রণালয় ফেব্রুয়ারিতে একটি পেপার প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, ইইউ থেকে জিনিস তৃতীয় কোনো দেশে যাচ্ছে। সেখান থেকে জিনিসগুলো রাশিয়ায় পৌঁছে যাচ্ছে। জার্মানির অর্থমন্ত্রী এই পেপার প্রকাশ করে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, উচ্চপ্রযুক্তির জিনিস রাশিয়ার সামরিক ক্ষেত্রে কাজে লাগতে পারে।

ইইউ-র বর্তমান নিষেধাজ্ঞা অনুসারে, রাশিয়াকে কোনো প্রযুক্তি হস্তান্তর করা যাবে না। সেমি কন্ডাকটর, ইলেকট্রনিক ও ইলেকট্রিক্যাল জিনিস রাশিয়ায় পঠানো যায় না। ড্রোন, এনক্রিপশন টুলসও সেখানো পাঠানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আছে।

কোনো সরকারি নথি নেই, তবু সন্দেহ আছে। মারিয়া বলেন, যেসব দেশ রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি, তাদের ওপরই সন্দেহ গিয়ে পড়ছে। তার মতে, এ ক্ষেত্রে দুটি প্রধান দেশ হলো চীন ও তুরস্ক।

ইউরোপীয় ব্যাংক ফর রিকনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ডেভলপমেন্টের প্রধান অর্থনীতিবিদ জ্যাভোরসিক এ তালিকায় আরও তিনটি দেশের নাম যোগ করেছেন- কাজাখস্তান, কিরঘিজস্তান ও আর্মেনিয়া।

অনলাইন সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, যদি ইইউ থেকে রাশিয়ায় রপ্তানির বিষয়টি দেখা হয়, তা হলে তা ৬০ শতাংশ কমেছে। কিন্তু একই সঙ্গে কিরঘিজস্তান, কাজাখস্তান, আর্মেনিয়ায় রপ্তানি অনেকটা বেড়েছে। এই দেশগুলো বেলারুশ ও রাশিয়ার সঙ্গে একসঙ্গে ইউরেশিয়ান কাস্টমস ইউনিনে আছে। তাই একবার এসব দেশে কোনো জিনিস পৌঁছে গেলে, তার ওপর আর নজর রাখা সম্ভব নয়। যে জিনিসগুলি সরাসরি রাশিয়া যেত, তা এখন এসব দেশের মাধ্যমে যাচ্ছে।

জার্মানির অর্থ মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, তারা ইইউ কমিশনের সঙ্গে একযোগে কাজ করছে। জার্মানি তার বাণিজ্যিক সহযোগী দেশগুলোর ওপর কড়া নজর রাখছে। দেখা হচ্ছে, এখান থেকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো জিনিস রাশিয়ায় যাচ্ছে কিনা।

এ ছাড়া কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যেমন তুরস্কের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে যাওয়ার অভিযোগ ছিল। তারাও এখন সম্ভবত তা বন্ধ করেছে। ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্র যৌথ বিবৃতি জারি করে বলেছে, নিষেধাজ্ঞা আরও কড়াভাবে রূপায়ণ করা হবে। সূত্র: ডয়চে ভেলে

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments