Monday, March 20, 2023
spot_img
Homeনির্বাচিত কলামডিজিটাল নিরাপত্তা জোরদারের তাগিদ

ডিজিটাল নিরাপত্তা জোরদারের তাগিদ

বৃহস্পতিবার গণভবনে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ টাস্কফোর্স’র তৃতীয় সভায় দেওয়া ভাষণে ডিজিটাল নিরাপত্তা জোরদারের তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নতুন প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন, উৎকর্ষ এবং এর বিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নিরাপত্তার সমস্যাও বাড়বে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, প্রযুক্তি যেমন আমাদের জন্য সুযোগ তৈরি করে, এটি আবার সমস্যাও সৃষ্টি করতে পারে।

বস্তুত পৃথিবীর বয়স যত বাড়ছে, বিপুল সম্ভাবনার দুয়ারও খুলে যাচ্ছে আমাদের সামনে; আর এটি সম্ভব হচ্ছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অভূতপূর্ব অগ্রগতি ঘটায়। এ অগ্রগতির অন্যতম ফসল ইন্টারনেট, এতে কোনো সন্দেহ নেই। বলার অপেক্ষা রাখে না, ইন্টারনেট এখন মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইন্টারনেটে কী আছে, সে প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চাইতে কী নেই-তার উত্তর দেওয়া বরং সহজ। বস্তুত এ যুগে ইন্টারনেটকে উপেক্ষা করা এখন প্রায় অসম্ভব।

সংবাদ, তথ্য, যোগাযোগ, কেনাকাটা, ব্যবসা-বাণিজ্য, সোশ্যাল নেটওয়ার্ক, বিনোদন ও ব্যাংক লেনদেন থেকে শুরু করে একান্ত গোপনীয় ব্যক্তিগত তথ্য-সবকিছুই এখন হাতের মুঠোয় থাকা স্মার্টফোনসহ কম্পিউটার ও অন্যান্য ডিজিটাল ডিভাইসে স্থান পাচ্ছে। ফলে একে কেন্দ্র করে নানা ধরনের অপরাধও পর্যায়ক্রমে বাড়ছে। দেশেও ক্রমান্বয়ে পর্নোগ্রাফি, ফেসবুক-ইমেইল অ্যাকাউন্ট ছাড়াও ব্যাংক ও মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট হ্যাকড করে অর্থ চুরিসহ নানা অপরাধ বাড়ছে।

এ অবস্থায় এ সংক্রান্ত অপরাধ রোধে সচেতনতাই হতে পারে সবচেয়ে বড় রক্ষাকবচ। ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ভঙ্গের মাধ্যমে মানুষের জীবন বিষিয়ে তোলার পাশাপাশি আর্থিক খাতে সাইবার ক্রাইম কত বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে, ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেমসের নিউইয়র্ক শাখায় থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরির ঘটনায় তা স্পষ্ট হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা বাংলাদেশের জন্য শিক্ষণীয় বিষয় ছিল, এতে কোনো সন্দেহ নেই। প্রযুক্তির কল্যাণে বিশ্ব এখন একটি গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত হয়েছে। চাইলেও আমরা এর বাইরে থাকতে পারব না। আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির ভালো দিকের পাশাপাশি অনেক মন্দ দিকও রয়েছে। মন্দ দিকগুলো মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি সচেতনতা বাড়ানোরও উদ্যোগ নিতে হবে, যা প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে উল্লেখ করেছেন।

বিজ্ঞান আশীর্বাদ, না অভিশাপ-এ বিতর্ক বহুদিনের। বস্তুত প্রতিটি আবিষ্কারের রয়েছে দুটি দিক-ভালো ও মন্দ। মানুষ কোন দিকটি গ্রহণ করছে, এটাই হচ্ছে প্রশ্ন। এক্ষেত্রে প্রতিটি মানুষের নিজস্ব বিবেচনাবোধ ও সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই।

মানুষের ইচ্ছা ও ব্যবহারের ওপর যেহেতু বিজ্ঞানের শুভ-অশুভ বিষয় নির্ভর করে, তাই বিজ্ঞানকে দোষারোপ না করে বরং আমাদের সজাগ ও সচেতন থাকতে হবে, যাতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অপব্যবহারের ঘটনা আমাদের জীবনে না ঘটে। দেশে ব্যক্তি এবং সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে ডিজিটাল প্রতারণা রোধে আইনি ব্যবস্থার পাশাপাশি ব্যাপক জনসচেতনতা গড়ে তোলা অপরিহার্য।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments