Friday, March 24, 2023
spot_img
Homeনির্বাচিত কলামডলারের অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধি

ডলারের অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধি

ছয় দিনের ব্যবধানে ডলারের বিপরীতে টাকার আরও এক দফা অবমূল্যায়ন হয়েছে। আন্তঃব্যাংক লেনদেনে সোমবার ডলারের দাম বেড়েছে ৪০ পয়সা। ফলে এদিন আন্তঃব্যাংকে প্রতি ডলারের দাম ৮৭ টাকা ৫০ পয়সা থেকে বেড়ে ৮৭ টাকা ৯০ পয়সা হয়েছে।

ব্যাংগুলো আমদানির জন্য ডলার বিক্রি করছে ৮৮ টাকা দরে। এ নিয়ে চলতি মে মাসেই তিন দফা ডলারের দাম বেড়েছে; চলতি অর্থবছরে এ পর্যন্ত বেড়েছে ৩ টাকা ১০ পয়সা। টাকার অবমূল্যায়নের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন আমদানিকারকরা। আমদানিকৃত পণ্যের দামও বেড়ে যাচ্ছে। এতে মূল্যস্ফীতির ওপর পড়ছে বাড়তি চাপ। অব্যাহত ডলারের দামবৃদ্ধির কারণে বেসরকারি উদ্যোক্তারা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছেন।

সম্প্রতি চাহিদা বাড়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বেড়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিভিন্ন পণ্যের দাম দফায় দফায় বাড়ছে। দেশে আমদানি ব্যয় বাড়লেও সে তুলনায় রপ্তানি আয় বাড়েনি। এ অবস্থায় দেশে আমদানি ব্যয় কমানোর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। ভোগ্যপণ্যের ক্ষেত্রে দ্রুততম সময়ে আমদানি ব্যয় কমানোর কাজটি কঠিন হলেও বিলাসি পণ্যে আমদানি ব্যয় কমানো সম্ভব। এ সময়ে আমদানিনির্ভর নতুন বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করার বিষয়টিও বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে। রপ্তানি আয় এবং রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানোর জন্য স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। সাম্প্রতিক সময়ে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে। আমাদের প্রবাসী শ্রমিকদের দক্ষতা বাড়িয়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানো সম্ভব। দীর্ঘমেয়াদে প্রবাসী বাংলাদেশিদের শ্রমনির্ভর কাজের পরিবর্তে মেধানির্ভর কাজে অংশগ্রহণে গুরুত্ব দিতে হবে। প্রবাসীরা যাতে হুন্ডির পরিবর্তে ব্যাংক চ্যানেলে অর্থ প্রেরণে বেশি আগ্রহী হন সে জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।

মূলত রেমিট্যান্স হ্রাস এবং আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির কারণে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমছে। কাজেই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দুর্নীতির মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থ বিদেশে পাচার করে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডারে পড়ে নেতিবাচক প্রভাব। দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষ চিকিৎসার জন্য বিদেশে যায়। এ প্রবণতা রোধেও পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। আমদানিকৃত পণ্যের দাম বাড়লে অনেকেই ভোগ্যপণ্য কম ক্রয়ে বাধ্য হন। তাই আমদানিনির্ভরতা কমাতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। ডলারের দামবৃদ্ধির পেছনে কোনো সিন্ডিকেট কাজ করছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments