যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছেন কলামনিস্ট ই জ্যাঁ ক্যারোল। এমন অভিযোগ আনার পর ট্রাম্প বলেছেন, ক্যারোল তার যোগ্যই নন। ফলে তিনি মানহানি মামলা করেছেন। তিনি বলেছেন, ১৯৯০ এর দশকে ম্যানহাটানের একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে তাকে যৌন নির্যাতন করেন ট্রাম্প। এ জন্য ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মানহানী মামলা করেছেন ক্যারোল। তবে এই মামলায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পক্ষ নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের আইন মন্ত্রণালয়। তারা এই মধ্যে আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছে। প্রেসিডেন্টের আইনগত বিষয় দেখাশোনা করে বিশেষ করে তার প্রাইভেট আইনজীবীরা।
ক্যারোল তার মামলায় বলেছেন, তার দাবিকে প্রেসিডেন্ট প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, সে (ক্যারোল) আমার উপযোগী নয়। এতে তার মানহানী হয়েছে বলে দাবি করে মামলায় আর্জি তুলেছেন ক্যারোল। ট্রাম্পের সমালোচকরা বলেন, প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার মেয়াদে ট্রাম্প আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমঝোতা করেছেন। অথচ আইন মন্ত্রণালয়ের নিরপেক্ষভাবে হোয়াইট হাউজের দায়িত্ব পালন করার কথা। এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলায় নিজেই প্রতিনিধিত্ব করছেন ট্রাম্প। এতে তাকে সহযোগিতা করছেন তার ব্যক্তিগত আইনজীবী মার্ক কাসোউটজ। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ক্যারোল মামলা করেন ২০১৯ সালের নভেম্বরে।
কি বলছে আইন মন্ত্রণালয়
আইন মন্ত্রণালয়ের আইনজীবীরা মঙ্গলবার আদালতে যুক্তি উপস্থাপন করেছেন যে, সরকারের এটর্নিদের মাধ্যমে নিজের পক্ষাবলম্বন করতে পারেন ট্রাম্প। কারণ, প্রেসিডেন্ট ক্যারোলের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। আর তিনি এখন প্রেসিডেন্ট। এর ফলে এই মামলাটি রাজ্যের আদালত থেকে একটি ফেডারেল আদালতে স্থানান্তরিত হতে পারে। এক্ষেত্রে সরকারের আইনজীবীরা ফেডারেল টর্ট ক্লেইমস অ্যাক্টের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, এই আইনের অধীনে মার্কিন সরকারের কর্মকর্তারা মামলা থেকে দায়মুক্তি পেতে পারেন।
তবে ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসের আইন বিষয়ক প্রফেসর স্টিভ ভøাদেক সিএনএনকে বলেছেন, এভাবে আইন মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেখ খুব বেশি অস্বাভাবিক। আইনের বিশ্লেষকরা বলছেন, আইন মন্ত্রণালয়ের এমন কোর্ট ফাইলিংয়ের ফলে এই মামলাটির কার্যত মৃত্যু ঘটতে পারে। কারণ, মানহানির জন্য ফেডারেল সরকারের বিরুদ্ধে বিচার করা যায় না। এক মাস আগে রাজ্যের একটি আদালত ঘোষণা দেয় যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মানহানি মামলা থেকে আইনগত দায়মুক্তি পেতে পারেন না। এরপরই এমন উদ্যোগ নিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।
কি বললেন ক্যারোল
ইলি ম্যাগাজিনের একজন পরামর্শ বিষয়ক কলামনিস্ট মিস ক্যারোল। তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, এই কর্মকান্ড এটাই প্রদর্শন করে যে, ট্রাম্প সম্ভাব্য যেকোন কিছুই করতে পারেন। তিনি ব্যবহার করতে পারেন ফেডারেল সরকার পূর্ণ ক্ষমতা। আমার মামলা সামনে এগিয়ে যাওয়া আটকে দিতে পারেন।
মিস ক্যারোলের আইনজীবী দল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতি অনুরোধ করেছেন ডিএনএ নমুনা দিতে। যা দিয়ে ক্যারোলের কালো একটি পোশাকে লেগে থাকা ‘জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল’ যাচাই করা যায়। ক্যারোলকে ধর্ষণ করার সময় তিনি ওই কালো পোশাকটি পরে ছিলেন। ক্যারোলের আইনজীবী রবার্তা এ কাপলান মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে বলেছেন- আইন মন্ত্রণালয়ের এমন হস্তক্ষেপ হতাশার।