বছর চার আগের ঘটনা। ফিওন হুসেনের বয়স তখন মাত্র ১৮ বছর। সবে কলেজে উঠেছেন। সমবয়সী বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে পড়াশোনা আর আড্ডাতেই দিন পার হয়ে যায়। তাঁর বাবা কাজ করেন একটি কৃষি খামারে। ফিওনের পড়াশোনার বিষয়বস্তুও ছিল কৃষি। বাবার মৃত্যুর পর হঠাৎ করেই খামারের পুরো দায়িত্ব এসে পড়ে ফিওনের কাঁধে। বাবার অসুস্থতার আগ পর্যন্ত কৃষিকাজের সঙ্গে সরাসরি কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না তাঁর। তবে এবার আর এড়িয়ে যেতে পারলেন না ফিওন। খামারের দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র চার বছরের মধ্যেই সাফল্য পেয়েছেন তিনি। এখন ওয়েলসের ডেনবিঘে ফিওনের ১৮০ একর খামারে আছে ৭০টি গরু ও ৩০টি ভেড়া। তাঁর দিন শুরু হয় খামারে গাভির দুধ সংগ্রহের মধ্য দিয়ে।
ফিওন বলেন, ‘আমার জন্য কৃষিকাজ অনেক কঠিন ছিল। ছোট থেকে বাবার খামারে সেভাবে আমার জড়িত থাকা হয়ে ওঠেনি। যখন দায়িত্ব চলে আসে তখন বুঝতে পারিনি কিভাবে শুরু করব। ধীরে ধীরে আমি শিখতে শুরু করি এবং এখনো শিখে যাচ্ছি।’

এত পরিশ্রমের মধ্যেও ফিওন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের জন্য আলাদাভাবে সময় রাখেন। টুইটারে ফিওনের আট হাজারের বেশি অনুসারী। দৈনন্দিন জীবনে খামারে ঘটে যাওয়া টুকরো ঘটনা শেয়ার করেন সেখানে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করি। সেখানে ছবি পোস্ট করি এবং দৈনন্দিন জীবনের খুঁটিনাটি শেয়ার করি। এর মাধ্যমে এমন অনেক মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে যাঁরা কৃষিতে আগ্রহী। অনেক বড় মানের খামারির সঙ্গেও আমার যোগাযোগ হয়েছে। তাঁদের অভিজ্ঞতা আমার অনেক কাজে আসে। দীর্ঘদিন একা একা কাজ করেছি। এখন সামাজিক মাধ্যম আমার একাকিত্ব দূর করতে সাহায্য করে।’ নতুন খামারিদের উদ্দেশে ফিওন বলেন, ‘আমরা যাঁরা কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত তাঁরা দিনে ২৪ ঘণ্টা ও সপ্তাহে সাত দিনই কাজ করি। ফলে আমাদের মধ্যে একাকিত্ব খুবই বেশি। আবার সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার না করলে পুরো দুনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে হয়।’
ফিওনের বয়স এখন ২২ বছর। এরই মধ্যে তিনি খামারের সব দায়িত্ব ভালোভাবেই বুঝে নিয়েছেন। তাঁর মতে, ‘এখনকার যুবকদের কৃষিতে ক্যারিয়ার গ্রহণ করা উচিত।’ তবে জীবনের সব পদক্ষেপ মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রেখেই নেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।