Tuesday, April 16, 2024
spot_img
Homeনির্বাচিত কলামজেনারেল কামার বাজওয়ার বোধদয়: জেনারেল মুনির কি রাজনীতি নিরপেক্ষ থাকতে পারবেন?

জেনারেল কামার বাজওয়ার বোধদয়: জেনারেল মুনির কি রাজনীতি নিরপেক্ষ থাকতে পারবেন?

মোবায়েদুর রহমান

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া আজ ২৯ নভেম্বর থেকে অবসরে যাচ্ছেন। অবশ্য সরকারি চাকরিতে যেটিকে আমরা অবসর বলি সেটি আসলে পূর্ণ অবসর নয়। এটি হলো লিভ প্রিপারেটরি টু রিটায়ারমেন্ট। অর্থাৎ অবসরপূর্ব ছুটি। সরকারি চাকরিতে অবসর গ্রহণ করার ঠিক ১ বছর আগে এই ছুটি দেওয়া হয়। এই ছুটিতে থাকাকালে সংশ্লিষ্ট অফিসার বা কর্মচারী চাকরিতে থাকাকালীন বেতনভাতাসহ যত রকমের সুবিধা পেতেন, তার সব কিছুই পাবেন। জেনারেল বাজওয়াও এলপিআরে গেছেন। তার জায়গায় পাকিস্তানের নতুন সেনাপ্রধান নিয়োগ করা হয়েছে জেনারেল আসিম মুনিরকে। পাকিস্তানের সেনাপ্রধান অবসরে গেলেন, কি কোন ব্যক্তিকে নতুন সেনাপ্রধান নিয়োগ করা হলো, সেটি আমাদের অর্থাৎ বাংলাদেশিদের জন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার নয়। তারপরেও এই বিষয়টির ওপর আলোচনা করছি। যারা দেশ-বিদেশের বিস্তারিত খবর জানার চেষ্টা করেন তারা দেখেছেন যে, জেনারেল বাজওয়ার অবসর এবং জেনারেল মুনিরের নিয়োগের ওপর আমেরিকার সবচেয়ে বিখ্যাত দুটি দৈনিক পত্রিকা পরদিনই ঢাউস সাইজের রাজনৈতিক ভাষ্য প্রকাশ করেছে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে, এই অবসর এবং এই নিয়োগ আর ১০টি অবসর এবং নিয়োগের মতো নয়। এখন জেনারেল বাজওয়া অতীত। জেনারেল আসিম মুনির এখন কী করেন, সেটি দেখার জন্য সারা বিশ^ বিশেষ করে আমেরিকা এবং পশ্চিমা দুনিয়া তাকিয়ে আছে। কেন এই অবসর এবং নিয়োগ বিশ^ব্যাপী এমন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠলো? তার কারণ হলো এই যে, পাকিস্তানের ৭৫ বছরের জীবনে জেনারেল কামার বাজওয়াই একমাত্র সেনাপ্রধান যিনি তার বিদায়ী ভাষণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা বলেছেন। আর সেইসব কথার সাথে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে আছে রাজনীতি।

বিদায়ী অনুষ্ঠানে জেনারেল বাজওয়া দ্ব্যর্থহীন ভাষায় স্বীকার করেন যে, গত সাত দশকে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করেছে। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন যে, এই হস্তক্ষেপ ছিল অসাংবিধানিক। একই সাথে তিনি বলেন যে, রাজনীতিকরাও ভুল করেছেন এবং দাম্ভিক আচরণ করেছেন। তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ গত বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। এরপর সামরিক বাহিনী বিষয়টি নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে আলোচনা করে এবং সেনাবাহিনীকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। দেশবাসীর উদ্দেশ্যে সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, আমি আপনাদের এই মর্মে আশ^স্ত করতে চাই যে, আমরা এই সিদ্ধান্ত কঠোরভাবে মেনে চলছি এবং এটি আমরা অব্যাহত রাখবো। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের ভুলের কারণে দেশ সমস্যার মধ্যে পড়েছে। এসব ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়াটা জরুরি।

গত ২৪ নভেম্বর দৈনিক প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে বেশ ফলাও করে জেনারেল বাজওয়ার বক্তব্য প্রকাশ করা হয়। খবরটির শিরোনাম ছিল, ‘পূর্ব পাকিস্তান হাতছাড়া হওয়া সামরিক নয়, রাজনৈতিক ব্যর্থতা: পাকিস্তানের বিদায়ী সেনাপ্রধান’। খবরে বলা হয়, ‘পাকিস্তানের বিদায়ী সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া বলেছেন, পূর্ব পাকিস্তান (বাংলাদেশ) হাতছাড়া হওয়া সামরিক নয়, রাজনৈতিক ব্যর্থতা ছিল। গত ২৩ নভেম্বর বুধবার সামরিক বাহিনীর জেনারেল হেডকোয়ার্টার্সে এক অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। খবর পাকিস্তানের ইংরেজি দৈনিক ডনের। আগামী সপ্তাহে অবসরে যাচ্ছেন জেনারেল বাজওয়া। দায়িত্ব হস্তান্তরের আগে সেনাপ্রধান হিসেবে সম্ভবত এটিই হতে পারে জনসমক্ষে তাঁর শেষ বক্তৃতা প্রদান। একাত্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে পাকিস্তান সেনাপ্রধান বলেন, তিনি এমন একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চান, যা পাকিস্তানের মানুষ সাধারণত এড়িয়ে যান। আর বিষয়টি হলো ১৯৭১ সালে সাবেক পূর্ব পাকিস্তানে (বাংলাদেশ) সেনাদের (পশ্চিম পাকিস্তানের) আত্মসমর্পণ। জেনারেল বাজওয়া বলেন, ‘আমি একটা তথ্য সংশোধন করে দিতে চাই। প্রথমত, পূর্ব পাকিস্তান (বাংলাদেশ) হাতছাড়া হওয়া সামরিক নয়, ছিল রাজনৈতিক ব্যর্থতা। লড়াইরত সেনার সংখ্যা ৯২ হাজার ছিল না, বরং এ সংখ্যা ছিল মাত্র ৩৪ হাজার। বাকিরা ছিলেন সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের লোকজন।’ পাকিস্তানের ইংরেজি দৈনিক ডনের উদ্ধৃতি দিয়ে দৈনিক প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে যা ছাপা হয়েছে সেটিই আমরা পুনর্মুদ্রিত করে দিলাম। শুধু তাই নয়, এরপরে আরেকটি প্যারাগ্রাফ ছিল যেটি আমরা উদ্ধৃত করা থেকে বিরত থেকেছি।

॥দুই॥
১৯৭১ সালে ঢাকার পতন সম্পর্কে জেনারেল বাজওয়া কি বলেছেন সেটি নিয়ে আমাদের কোনো মাথাব্যাথা নাই। আমার ধারণা, বর্তমান পাকিস্তানের সেনাবাহিনী, আমলাতন্ত্র এবং জনগণকে এ্যাড্রেস করে তিনি এই বক্তব্য দিয়েছেন। আমরা যেটা নিয়ে কথা বলবো, সেটি হলো পাকিস্তানের অভ্যস্তরীণ রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ। এই হস্তক্ষেপ ছিল অবৈধ, অনভিপ্রেত এবং অবাঞ্ছিত। আমরা পাক সেনাবাহিনীর অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ অত্যন্ত সংক্ষেপে বর্ণনা করবো। আরো দেখাবো, প্রাসাদ ষড়যন্ত্র কীভাবে পাকিস্তানের সর্বনাশ করেছে। এই প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের নেপথ্য মদদদাতা ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এই প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের প্রধান দুই নায়ক ছিল সামরিক বাহিনী এবং বেসামরিক আমলাতন্ত্র। পাকিস্তানের প্রাসাদ ষড়যন্ত্র সম্পর্কে ১৫/১৬ বছর পূর্বে আমি একাধিক কলাম ইনকিলাবে লিখেছি। আজ সেই কথাগুলোই এই মুহূর্তে পাকিস্তানের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতা ইমরান খানের মুখ দিয়েও বেরিয়ে আসছে। বস্তুত পাকিস্তানের ২২ কোটি মানুষের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ, আরো স্পষ্টভাবে বলতে গেলে পাঞ্জাব, সিন্ধু এবং খাইবারপাখতুন খোয়ার (উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ) সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ইমরান খানের নেতৃত্বে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে মার্কিন এবং সামরিক হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে বুলন্দ আওয়াজ তুলেছে।

পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন লিয়াকত আলী খান। দেশটির প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহকে খেতাব দেওয়া হয়েছিল কায়েদে আজম। দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন লিয়াকত আলী খান। তাকে খেতাব দেওয়া হয়েছিল কায়েদে মিল্লাত। ১৯৫১ সালের ১৬ অক্টোবর এক জনসভায় ভাষণ দেওয়ার সময় অত্যন্ত নিকট থেকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে আততায়ীর গুলিতে লিয়াকত আলী খান নিহত হন। তার হত্যাকাণ্ডের কোনো সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি। কিন্তু সেই সময় একটি কথা চাউর হয় যে, আমেরিকা যাতে ইরানের তেল পায় সেজন্য লিয়াকত আলী খান যেন ইরানের কাছে তদবির করেন। উল্লেখ্য, লিয়াকত আলী খানের সাথে ইরানের খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। লিয়াকত মার্কিন অনুরোধ শুধুমাত্র ফিরিয়েই দেননি, তিনি আমেরিকাকে পাকিস্তান থেকে সামরিক ঘাঁটি উঠিয়ে নিতে বলেন। লিয়াকতের এই ভূমিকায় ক্রুব্ধ হয়ে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ লিয়াকতকে নির্মূল করার জন্য আফগানিস্তান থেকে সৈয়দ আকবর নামক এক ব্যক্তিকে নিয়োগ করে। তার গুলিতেই লিয়াকত আলী খান নিহত হন।

১৯৭৮ সালে জুলফিকার আলী ভুট্টোর বেসামরিক সরকারকে উৎখাত করে সামরিক শাসন জারি করেন জেনারেল জিয়াউল হক। ১০ বছর তিনি ক্ষমতায় ছিলেন। ১৯৮৮ সালের ৭ আগস্ট বাহওয়ালপুর থেকে প্রেসিডেন্ট জেনারেল জিয়াউল হক বিমানযোগে রাজধানী ইসলামাবাদ ফিরছিলেন। ঐ বিমানে তার সফরসঙ্গী ছিলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্নল্ড রাফেল এবং মার্কিন সামরিক উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হার্বার্ট এম ওয়াসম। ঐ বিমানটি মধ্য আকাশে থাকার সময় রহস্যজনকভাবে বিষ্ফোরণ ঘটে এবং প্রেসিডেন্ট জিয়াউল হকসহ বিমানের ৩১ জন যাত্রীই নিহত হন। পাকিস্তানের বিশিষ্ট কলামিস্ট এবং এক সময় পাকিস্তানের ফেডারেল সরকারের মন্ত্রী মোশাহিদ হোসাইন এই বিমান দূর্ঘটনাকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি অংশের সহযোগিতায় সিআইয়ের ষড়যন্ত্রের ফল বলে আখ্যায়িত করেন।

॥তিন॥
১৯৬৯ সালে পাকিস্তানের উভয় অঞ্চলে গণঅভ্যুত্থান সংঘঠিত হয়। পশ্চিম অঞ্চলে গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন পিপলস পার্টির প্রতিষ্ঠাতা জুলফিকার আলী ভুট্টো। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন তিনি। ১৯৭৮ সালে ভুট্টোকে হটিয়ে ক্ষমতা কব্জা করেন জেনারেল জিয়াউল হক। এরপর ভুট্টোর বিরুদ্ধে এক ব্যক্তির হত্যার হুকুমদাতা হিসাবে আদালতের কাঠগড়ায় তুলে জিয়াউল হকের অঙ্গুলি হেলনে ভুট্টোকে ফাঁসি কাষ্ঠে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়।

জুলফিকার আলী ভুট্টোর কন্যা বেনজির ভুট্টো। আমেরিকার হার্ভার্ড এবং ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড থেকে উচ্চ শিক্ষা লাভ করেন তিনি। তিনি ৩ বার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন। কিন্তু কোনো বারই মেয়াদ পুরো করতে পারেননি। তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকাকালে ২০০৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর এক নির্বাচনী জনসভায় আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত হন প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো।

পাকিস্তানের আরেক সামরিক শাসক হলেন জেনারেল পারভেজ মোশাররফ। নওয়াজ শরীফের তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রিত্বকালে বিদেশ থেকে নওয়াজ দেশে ফিরলে তাকে আর প্রধানমন্ত্রীর গদিতে বসতে দেওয়া হয়নি। ক্ষমতা কুক্ষিগত করেন জেনারেল পারভেজ মোশাররফ। ২০০৩ সালে প্রেসিডেন্ট থাকাকালে জেনারেল মোশাররফ তার গাড়ি বহর নিয়ে ইসলামাবাদের একটি সেতু অতিক্রম করছিলেন। তার গাড়ি বহর সেতুতে ওঠার মাত্র ৩ মিনিট পূর্বে প্রচন্ডে এক বিষ্ফোরণে সেতুটি উড়ে যায়। ফলে মোশাররফ প্রাণে বেঁচে যান। বলা হয় যে, গাড়িতে জ্যামিং ডিভাইস থাকায় সে যাত্রায় তিনি বেঁচে যান।

সবশেষে এই ২০২২ সালের শেষ প্রান্তে এসে পাকিস্তানের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা ইমরান খানকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার ওপর গুলি করা হয়। ঘটনাচক্রে গুলি তার মাথায় বা বুকে না লেগে পায়ে লেগে যায়। এ যাত্রায় ইমরান বেঁেচ যান। এই ধরণের আরো কাহিনী আছে। বেনজিরের ভাই অর্থাৎ জুলফিকার আলী ভুট্টোর এক ছেলে মমতাজ ভুট্টো করাচিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন। অপর ছেলে শাহ নেওয়াজ ভুট্টোকে ইউরোপের একটি হোটেলে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।

আমরা ফিরে যাচ্ছি জেনারেল কামার বাজওয়ার কথায়। পাকিস্তানের রাজনীতিতে প্রথম সামরিক হস্তক্ষেপ করেন জেনারেল মোহাম্মদ আইয়ুব খান। সালটি ছিল ১৯৫৮ সাল। দ্বিতীয়বার সামরিক হস্তক্ষেপ করেন জেনারেল আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খান। তিনি আইয়ুব খানের নিকট থেকে ক্ষমতা গ্রহণ করেন। জেনারেল জিয়াউল হক এবং পারভেজ মোশাররফের কথা আগেই বলেছি। সামরিক বাহিনী ৩৩ বছর বিভিন্ন সময় পাকিস্তানের ক্ষমতায় ছিল। সামরিক বাহিনী ছাড়াও বেসামরিক আমলাতন্ত্রে গভর্নর জেনারেল গোলাম মোহাম্মদ, সামরিক জেনারেল ইস্কান্দার মির্জা প্রমুখ শাসক বারবার কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক মন্ত্রিসভাকে বরখাস্ত করেছেন।

সবশেষে ১৯৭১ সালে সাবেক পূর্ব পাকিস্তানের ওপর (বর্তমান বাংলাদেশ) নৃশংস ক্র্যাকডাউনের কথা আর নতুন করে বলার প্রয়োজন পড়ে না। মনে হচ্ছে, পাকিস্তান মিলিটারির শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে। তবে জেনারেল বাজওয়া অবসর নেওয়ার সময় এই কথা বললেন। এখন নতুন সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির বাজওয়ার এই কথা কতদূর কাজে প্রমাণ করেন, সেটি দেখার জন্য পাকিস্তানের জনগণ এবং পশ্চিমা বিশ^সহ চীন এমনকি রাশিয়াও অপেক্ষা করবে। আগামী অক্টোবর মাসে পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ’৬৯ এর আগে ও পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বাংলাদেশে যেমন অসাধারণ জনপ্রিয় ছিলেন, ২০২২ সালে পাকিস্তানে ইমরান খানের জনপ্রিয়তা তার সমতুল্য না হলেও অনেকটা কাছাকাছি। জনতার এই নেতাকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়ার পথে যদি সামরিক ও বেসামরিক হস্তক্ষেপ হয়, অথবা নেপথ্য অনুঘটক হিসাবে আমেরিকা যদি কোনো ষড়যন্ত্র করে তাহলে পাকিস্তানের রাজনৈতিক আকাশে দুর্যোগের কালো মেঘ দেখা দেবে।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments