সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী ম্যাগডালেনা অ্যান্ডারসনের লক্ষ্য ২০২২ সালের জুনেই ন্যাটোতে যোগদানের জন্য আবেদন করা। এক গোপন সূত্রের বরাত দিয়ে এ কথা জানিয়েছে সুইডেনের জাতীয় দৈনিক সুইডিশ দগব্লদেত (এসভিডি)। ফিনল্যান্ড পার্লামেন্টে বুধবার নতুন নিরাপত্তা নীতি বিষয়ক বিশ্লেষণটি উপস্থাপন করার পাশাপাশি এ খবর প্রকাশ পায়।
এসভিডির তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৯-৩০ জুন মাদ্রিদে ন্যাটোর সভায় সুইডেনের আবেদন জমা দেওয়ার জন্য পরিকল্পনা করা হয়েছে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পরবর্তী পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে বুধবার ফিনল্যান্ডের পার্লামেন্টে দেশটির নতুন সুরক্ষা নীতির বিশ্লেষণ উপস্থাপন করা হয়। ন্যাটোতে যোগদানের বিষয়টি জাতির সামনে তুলে ধরা এর অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।
ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সানা মারিন বুধবার সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী ম্যাগডালেনা অ্যান্ডারসনের সঙ্গে জরুরি সাক্ষাৎ করতে স্টকহোম সফর করেছেন। বৈঠক শেষে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সানা মারিন বলেন, কয়েক মাস নয়, বরং কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ফিনল্যান্ডের ন্যাটোতে যোগদানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে।
এদিনই দুপুরে ফিনল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেক্কা হাভিস্তো হেলসিঙ্কিতে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তাঁরা নিরাপত্তানীতির বিশ্লেষণের ওপর মন্তব্য করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিশ্লেষণটি নিয়ে ফিনিশ পার্লামেন্টে আলোচনা করা হবে। এর ভিত্তিতে ন্যাটোর সদস্যপদ নিয়ে ফিনল্যান্ড নীতিগত অবস্থান নেবে।
একটি নতুন নিরাপত্তা নীতির বিশ্লেষণ তৈরি করার জন্য সর্বদলীয় একটি কমিটি সুইডেনেও কাজ করছে। বিশ্লেষণটি ৩১ মে-র মধ্যে প্রকাশ করা হবে।
সুইডিশ পার্লামেন্টের প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা উলফ ক্রিস্টারসন এর আগে বলেছিলেন, ন্যাটোর সদস্যপদ লাভের জন্য সুইডিশ আবেদনটি আগামী মাদ্রিদ বৈঠকে জমা দেওয়া উচিত। তার মতে, সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠের সিদ্ধান্তের আলোকেই সুইডেন ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করবে।
সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী ম্যাগডালেনা অ্যান্ডারসন এবং ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সানা মারিনের ন্যাটো বিষয়ে মনোভাব ও বক্তব্য প্রকাশ হওয়ার পর মোটামুটি নিশ্চিত হওয়া গেল যে, আগামী জুনের ২৯-৩০ তারিখেই দেশ দুটি ন্যাটোর সদস্য পদের জন্য আবেদন করতে যাচ্ছে।
১১ এপ্রিল ফিনল্যান্ড এবং সুইডেনকে ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার বিরুদ্ধে সতর্ক করে রাশিয়া বলেছে, এই পদক্ষেপ ইউরোপে স্থিতিশীলতা আনবে না। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সেদিন সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, ’ন্যাটো জোট এখনো এমন একটি হাতিয়ার, যা সংঘর্ষের জন্য তৈরি। ‘ রাশিয়া বিগত মাসগুলোতে সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের বিরুদ্ধে একাধিক হুঁশিয়ারি বার্তা উচ্চারণ করেছে। প্রয়োজনে সামরিক শক্তি ব্যবহারের হুমকি দিয়েছে। উত্তেজনাকর এই পরিস্থিতির মধ্যে দুই স্ক্যান্ডিনেভীয় দেশ রাশিয়ার রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে ন্যাটোর সদস্যপদ লাভের প্রক্রিয়া এগিয়ে নিচ্ছে। এটি নর্ডিক অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়িয়েই তুলবে মনে করা হচ্ছে।