কেবল সম্পদের প্রাচুর্য, সন্তান-সন্ততির আধিক্য ও দীর্ঘ জীবন লাভ মুমিনের কাছে ‘বরকত’ নয়, যদি তা উপকারী ও কল্যাণকর না হয়। এ জন্য মহানবী (সা.) সম্পদ বৃদ্ধির দোয়া না করে প্রাপ্ত সম্পদের কল্যাণ ও সুফল বৃদ্ধির দোয়া করতেন। তিনি বলতেন, আপনি আমাকে যা দিয়েছেন তার মধ্যে আমার জন্য বরকত দিন।
ইসলামী মূল্যবোধ অনুযায়ী ‘বরকত’ হলো ইহকালীন ও পরকালীন জীবনের উত্তম জীবনের সন্ধান লাভ করা। আর সে তা লাভ করে আল্লাহর নৈকট্য, ইবাদত ও প্রার্থনার মাধ্যমে।
মানুষের নেক আমলের মাধ্যমে ব্যক্তি যেমন আল্লাহর বরকত লাভ করে, তেমনি মন্দ কাজে তা নষ্ট হয়। হাদিসে বর্ণিত এমন কিছু আমলের কথা তুলে ধরা হলো—
১. আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা : মহানবী (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি চায় তার জীবিকা প্রশস্ত হোক এবং আয়ু বৃদ্ধি পাক সে যেন আত্মীয়তার বন্ধন অক্ষুণ্ন রাখে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৯৮৬)
২. বেচাকেনায় সততা : রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ক্রেতা-বিক্রেতা পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগ পর্যন্ত তাদের (গ্রহণ ও বর্জনের) ইখতিয়ার রয়েছে।
৪. সালাম দেওয়া : আনাস (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) আমাকে বলেন—হে বৎস! যখন তুমি ঘরে প্রবেশ করো সালাম দাও, তোমার ও তোমার পরিবারের জন্য বরকত হবে। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২৬৯৮)
৫. দান করা : আল্লাহ বলেন, হে আদম সন্তান! তুমি খরচ করো, তোমার জন্য খরচ করা হবে (অর্থাৎ প্রাচুর্য আসবে)। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৩৫২)
৬. মিলেমিশে খাওয়া : রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, তোমরা খাবারে একত্র হও, আল্লাহর নাম স্মরণ করো তাতে তোমাদের জন্য বরকত দেওয়া হবে। (মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস : ৪২৫২)
পাপ জীবনের বরকত নষ্ট করে
নেক কাজে যেমন মানুষের জীবন-জীবিকায় বরকত আসে, তেমনি পাপ কাজ জীবন-জীবিকার বরকত নষ্ট করে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, কেবল দোয়াই ভাগ্য প্রতিহত করে, নেক কাজে আয়ু বাড়ে আর বান্দা পাপের কারণে জীবিকা থেকে বঞ্চিত হয়। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ২২৪১৩)
আল্লাহ আমাদের জীবনকে বরকতময় করুন। আমিন।