২০২২ সালের শেষনাগাদ দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলংকার জিডিপির তুলনায় দেশটির ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ১১৫ শতাংশ; যা এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে ছিল ১০৪ শতাংশ। দেশটির সরকারি তথ্যে এ খবর উঠে এসেছে। শ্রীলংকার সরকারি তথ্যমতে, দেশটির বৈদেশিক ঋণ হ্রাসের পরিবর্তে বাড়ছে।
শ্রীলংকার জিডিপির পরিমাণ ২০২১ সালে ছিল ১৬ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন রুপি। কিন্তু মুদ্রাস্ফীতির কারণে ২০২২ সালে এ জিডিপির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪ দশমিক ১ ট্রিলিয়ন রুপিতে।
দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলংকার নেওয়া মোট ঋণের পরিমাণ ৯৭ বিলিয়ন বা ৯ হাজার ৭০০ কোটি ডলার। এর মধ্যে ৫১ বিলিয়ন বা ৫ হাজার ১০০ কোটি ডলারই বিদেশি উৎস থেকে নেওয়া। এতে জাপান, চীন, ভারত, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক থেকে নেওয়া দ্বিপক্ষীয় ঋণের পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎস থেকে নেওয়া সার্বভৌম ঋণ রয়েছে।
শ্রীলংকার অর্থনৈতিক সংকটের মূল কারণ ‘ঋণ করে ঘি খাওয়া’ নীতি। এই নীতি শ্রীলংকায় নতুন নয়, দীর্ঘদিন ধরেই আছে। প্রকৃতপক্ষে মাহিন্দা রাজাপাকসে ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই তা ছিল। তিনি ক্ষমতায় আসার আগেই শ্রীলংকায় ঋণ জিডিপির অনুপাত ছিল ৮০ শতাংশ।
বিশ্বব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, শ্রীলংকার বিদেশি ঋণ স্বাধীনতার পর থেকে ধীরে ধীরে বেড়েছে। মাহিন্দা রাজাপাকসে যখন প্রথম প্রেসিডেন্ট হন, অর্থাৎ ২০০৫ সালে সেই গ্রাফ হঠাৎ মাথাচাড়া দিয়ে খুব দ্রুত ওপরে উঠে যায়। এরপর আর সেই গ্রাফ নিম্নমুখী হয়নি, কেবল মাথা চাড়া দিয়েছে।
রাজাপাকসেদের শাসনামলের সবচেয়ে ভয়ংকর বিষয় হচ্ছে, আগে দেশের মোট ঋণের পরিমাণ বেশি ছিল, কিন্তু বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ছিল কম। মাহিন্দা বিদেশি ঋণকে অতি দ্রুত ভয়ংকর বিপজ্জনক পর্যায়ে নিয়ে যান। যার ফল এখন দেশটিকে দিতে হচ্ছে।
বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নে শ্রীলংকা বাছবিচারহীনভাবে সার্বভৌম বন্ডের মাধ্যমে ঋণ নিয়েছে। এসব ঋণের সুদহার বেশি, মেয়াদও কম। ওই সব অবকাঠামো লাভজনক হওয়ার আগেই ঋণ পরিশোধ করতে হয়েছে। সেজন্য পুঁজিবাজারে বারবার বন্ড ছাড়তে হয়েছে। আবার অবকাঠামোর অনেকগুলোই লাভজনক হয়নি।