Sunday, December 10, 2023
spot_img
Homeলাইফস্টাইলজরায়ুমুখের ক্যান্সার : যাঁদের ঝুুঁকি বেশি

জরায়ুমুখের ক্যান্সার : যাঁদের ঝুুঁকি বেশি

গ্রামীণ নারী আছিয়া বিবির বয়স ৫৫। সাতটি সন্তানের মা। ১৩ বছর বয়সে বধূ হন। ১৪ বছর বয়সে মা।

বিজ্ঞাপনস্বামী ট্রাকচালক। স্বভাবে তিনি বহুগামী। কিছুদিন থেকে আছিয়া বিবি লক্ষ করছেন, যখন-তখন মাসিকের রাস্তা দিয়ে রক্ত যায়। সঙ্গে ময়লা ময়লা দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব। শরীরের ওজনও দিন দিন কমছে। দুর্বল লাগে। স্বামীর সঙ্গে সহবাসে রক্ত যায় দেখে ওই সব বাদ দিয়েছেন অনেক আগে থেকেই। তবে রোজ রোজ রক্ত গেলে নামাজ-রোজা পালনে সমস্যা হয়, তাই ডাক্তার দেখাতে এসেছেন।

জরায়ুর ক্যান্সারজনিত যত রিস্ক ফ্যাক্টর আছে, তার সবই আছিয়া বিবির আছে। কিন্তু ব্যথা নাই দেখে তিনি এর ভয়াবহতা বুঝতে পারছেন না। ভয়ানক দেরি হয়ে যাওয়ায় চিকিৎসকেরও তেমন কিছু করার নেই।

নারীর জরায়ুর মুখকে সার্ভিক্স বলে। এই জায়গার ক্যান্সারকে সার্ভিক্যাল ক্যান্সার বা জরায়ুমুখের ক্যান্সার বলে। বাংলাদেশে এটা গাইনিকলোজিক্যাল ক্যান্সারজনিত মাতৃমৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ। প্রথম কারণ হলো ব্রেস্ট ক্যান্সার। প্রতি লাখে ২৯.৭ জনের হয়। এর মধ্যে অর্ধেকই মারা যান।

যাঁদের ঝুুঁকি বেশি

–  এইচপিভি নামক ভাইরাস ইনফেকশন-৯৯ শতাংশ

–    কম বয়সে বিয়ে

–    কম বয়সে বাচ্চা নেওয়া, ঘন ঘন বাচ্চা নেওয়া

–    পারসোনাল হাইজিন না মেনে চলা

–    অসচ্ছলতা

–    যৌনবাহিত রোগ

–    স্বামী, ট্রাকচালক বা শিপিং অথবা ডে লেবার

–    বহুগামিতা (স্বামী/স্ত্রী উভয়ের জন্য প্রযোজ্য)

–    প্রথম স্ত্রী সার্ভিক্যাল ক্যান্সারে মারা গেছেন এমন ব্যক্তি

লক্ষণ

–    দুর্গন্ধযুক্ত সাদা স্রাব

–    অনিয়মিত রক্তস্রাব

–    সহবাস-পরবর্তী রক্তস্রাব

–    ৩৫ এবং ৫৫ বছর বয়সে বেশি হয়

চিকিৎসা

প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে শতভাগ চিকিৎসা সম্ভব। প্রাথমিক অবস্থা নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন স্ক্রিনিং পদ্ধতি আছে। তার মধ্যে পেপস স্মেয়ার, ভায়া অন্যতম। তিন বছর অন্তর করতে হয়।

অ্যাডভান্স অবস্থায় ডায়াগনসিস হলে অপারেশন অথবা রেডিওথেরাপি অথবা দুটো দিয়েই চিকিৎসা করা হয়।

প্রতিরোধ

প্রতিরোধক হিসেবে আছে টিকা। সাধারণত ৯ থেকে ১৪ বছরের মেয়েদের দেওয়া হয়। অন্যরাও দিতে পারে।

রিস্ক ফ্যাক্টর এভয়েড করা, জেনিটাল হাইজিন মেইনটেইন করা, ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা, স্বামী-স্ত্রী একে অন্যের প্রতি সৎ থাকলে এই বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।

জরায়ু নারীদের অঙ্গ হলেও এর ক্যান্সারের অন্যতম কারণ এইচপিভি ভাইরাস। এটা কিন্তু পুরুষদের মাধ্যমে ছড়ায়। কাজেই নারী-পুরুষ উভয়কেই সচেতন হতে হবে এর থেকে বাঁচতে।

পরামর্শ দিয়েছেন

ডা. ছাবিকুন নাহার

প্রসূতি ও স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ এবং সার্জন

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ, ঢাকা।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments