- মিজানুর রহমান
জবান। মানুষের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। জিহ্বার ব্যবহার ছাড়া কোনো মানুষই কথা বলতে পারেন না। এ কারণে জিহ্বার অপর নাম জবান। যে জবানি থেকে মানুষের কথা প্রকাশ পায়। হাদিসে পাকে জিহ্বার হেফাজতের ব্যাপারে প্রিয়নবী সা: অনেক উপদেশ দিয়েছেন। কিন্তু চলমান বিশ্বের বেশির ভাগ মারামারী, হানাহানি, গুম ইত্যাদি শুরু হয় জবানের বাড়াবাড়ির দ্বারা। যার শেষ পরিণতি হয় ভয়াবহ। বিপরীতে জবানের হেফাজতে রয়েছে দারুণ সুসংবাদ।
জিহ্বার হেফাজতে প্রিয়নবী সা: ঘোষিত মানুষের নেয়ামত লাভের কিছু বিবরণ তুলে ধরা হলোÑ হজরত হিশাম বিন ওমর রা: থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি গোলামকে থাপ্পড় মারে; তার এ কাজের কাফফারা হলো গোলামটিকে আজাদ করে দেয়া। আর যে ব্যক্তি (শরিয়ত পরিপন্থী কথাবার্তা থেকে) নিজের জিহ্বা হেফাজত করবে; তাকে (জাহান্নামের) আজাব থেকে মুক্তি দেয়া হবে। যে আল্লাহর কাছে নিজের ওজর পেশ করবে; তা কবুল করা হবে।
মুমিনের উচিত হলোÑ সে যেন প্রতিবেশী ও মেহমানকে সম্মান করে, কথা বললে ভালো কথা বলে অন্যথায় চুপ থাকে। হজরত আনাস ইবনে মালেক রা: থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, চারটি গুণ শুধু মুমিনের মধ্যে পাওয়া যায়। আর তা হলোÑ চুপ থাকা, বিনয়ী হওয়া, আল্লাহর জিকির করা, অনিষ্ট কাজের স্বল্পতা।’
উল্লিখিত হাদিসের আলোকে বোঝা যায়, অন্যায় ও ফাহেশা কথাবার্তা থেকে নিজের জবানের হেফাজত করতে পারা মহান আল্লাহ তায়ালার একান্ত অনুগ্রহ।
যারা জবানের বা জিহ্বার যথাযথ হেফাজত করতে পারবে প্রথমত তারা মুমিন হিসেবে পরিগণিত হবে। দ্বিতীয়ত দুনিয়ার যাবতীয় অনিষ্টতা থেকে মুক্ত থাকবে। আর পরকালে থাকবে সীমাহীন সফলতা। হাদিসের বর্ণনায়, ‘প্রকৃত মুসলমান সেই ব্যক্তি; যার হাত ও জিহ্বা থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ।’
আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে দুনিয়ার যাবতীয় বিষয়াদি থেকে নিজেদের জিহ্বা বা জবানের যথাযথ হেফাজত করার তাওফিক দান করুন। জিকির-আজকার, সত্য কথা ও উত্তম বাক্য বিনিময়ের মাধ্যমে জিহ্বার যথাযথ হক আদায় করার তাওফিক দান করুন।
আর যদি তা অসম্ভব হয় তবে অযথা কথা না বলে নীরবে জিকির বা প্রয়োজনীয় কথা বলে সময় অতিবাহিত করা। ফলে দুনিয়া ও আখিরাত উভয়ই লাভবান হবে। আল্লাহ তায়ালা আমল করার তৌফিক দান করুন। আমীন।
লেখক : গবেষক, অনুবাদক