Monday, March 27, 2023
spot_img
Homeলাইফস্টাইলচিনিতে প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র কণা : ক্যান্সারের ঝুঁকি

চিনিতে প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র কণা : ক্যান্সারের ঝুঁকি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গবেষণা
এ যেন সাদার মধ্যেই কালো! ধবধবে হলেই সাদা হয় না প্রবাদের মতো। বাংলাদেশের বাজারে নামিদামি ৫টি ব্র্যান্ড ও খোলা বাজারের দুটি চিনিতে মিলেছে ক্ষতিকর মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব। বাজারের সাদা চিনির ওপর গবেষণা করে এমন তথ্য পেয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। গবেষকরা বলছেন, শুধু চিনি গ্রহণের মাধ্যমেই বছরে ১০.২ টন মাইক্রোপ্লাস্টিকের কণা বাংলাদেশের মানুষের দেহে প্রবেশ করছে। প্লাস্টিকের কণা গ্রহণের ক্ষতিকর প্রভাবের মধ্যে ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধি রোগের ঝুঁকি রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে এ গবেষণায় সহযোগিতা করেন অধ্যাপক খবির উদ্দিন, স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন, নয়ন হোসেন খান এবং ব্রাজিলের গবেষক মালাফ্যায়া গুলহাম।
ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বাজারের চিনিতে কখন বা কোন প্রক্রিয়ায় এসব ক্ষতিকর কণা যুক্ত হয় সেটা আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। তবে এটি আমদানি, প্যাকেজিং ও প্রসেসিংয়ের সময় মাইক্রোপ্লাস্টিকের কণা যুক্ত হতে পারে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বহুল প্রচলিত ও নামি-দামি ব্যান্ডের ৫টি চিনি ও খোলা বাজার থেকে দুটি নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়। এগুলোর সবই সাদা চিনি ছিল ও ঢাকার সুপার শপ থেকে সংগ্রহ করা হয়। তবে ব্র্যান্ডগুলোর নাম প্রকাশ করেনি গবেষক দল। এক প্রশ্নের জবাবে এই গবেষক দলের প্রধান বলেন, ব্র্যান্ডের চিনি ও খোলা বাজারের চিনির মধ্যে ক্ষতিকর মাইক্রোপ্লাস্টিক কণার তেমন কোনো পার্থক্য পাওয়া যায়নি। সব নমুনাতেই প্রায় সমান মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। নানা রঙ ও নানা সেপের প্লাস্টিক কণা পাওয়া গেছে। প্রতি কেজিতে অন্তত ৩৪৪ এর বেশি কণা মিলেছে।
মাইক্রোপ্লাস্টিক কণার মানবদেহে ক্ষতির বিষয়ে এই গবেষক বলেন, মানুষের শরীরে মাইক্রোপ্লাস্টিকের কণা কি ক্ষতি করে তা বিশ্বের কোথাও এখনো গবেষণা হয়নি। তবে প্লাস্টিক তৈরিতে যে রাসায়নিক উপাদান ব্যবহৃত হয় তা মানবদের জন্য ক্ষতিকর। তাই মাইক্রোপ্লাস্টিকের কণার গ্রহণের ফলে ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধির ঝুঁকি রয়েছে। এসব ঝুঁকি এড়াতে এই গবেষকের পরামর্শ হলো- যেহেতু এসব খাদ্যসামগ্রী আমরা সরাসরি খেয়ে থাকি তাই বাজারে আসার আগে এগুলো পরীক্ষা নিরীক্ষার আওতায় নিয়ে আসা। বিএসটিআইয়ের অধীনে নতুন নতুন ক্ষতিকর দূষণের বিষয়গুলো পরীক্ষার আওতায় নিয়ে আসাও দরকার।
উল্লেখ্য, গবেষণাটি স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিনের থিসিসের অন্তর্ভক্ত। গবেষণাটি এখনো প্রকাশিত হয়নি। তবে প্রকাশনার জন্য জনপ্রিয় সায়েন্স জার্নাল ‘সায়েন্স অব দ্য টোটাল এনভায়রনমেন্ট’ কর্তৃক গৃহীত হয়েছে।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments