সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নিন
প্রতিবছর শীতকালে রাজধানীসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সংকট তীব্র আকার ধারণ করে, যা বহুল আলোচিত। এতে একদিকে ব্যাহত হচ্ছে শিল্প উৎপাদন, অন্যদিকে বাসাবাড়িতে রান্নাবান্নায়ও চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এখন পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে, রাজধানীর প্রায় প্রতিটি বাসায় ভোগান্তিতে শুরু হচ্ছে মানুষের প্রতিটি সকাল। অনেক এলাকায় গ্যাসের চাপ কম থাকায় সারাদিন চুলা জ্বলে মিটমিট করে। এজন্য সকালের নাশতা তো দূরের কথা, দুপুরের খাবারও সময়মতো চুলায় উঠানো সম্ভব হচ্ছে না। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শিক্ষার্থীসহ কর্মজীবীদের।
তিতাস গ্যাস সূত্রে জানা গেছে, দেশের সর্বত্র ২০ থেকে ৩০ বছর আগে গ্রাহক চাহিদার ভিত্তিতে এলাকাভিত্তিক গ্যাসের বিতরণ যত পাইপ বসানো হয়েছিল, বর্তমানে সেই চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুণ। পর্যায়ক্রমে যোগ হয়েছে ছোট, বড় ও মাঝারি অনেক ধরনের শিল্প-কারখানার চাহিদা। প্রায় প্রতিটি এলাকায় বৈধ-অবৈধ গ্রাহকও বেড়েছে। সব মিলিয়ে প্রতিদিন তিতাস গ্যাসের গ্রাহক চাহিদার চেয়ে সরবরাহের পরিমাণ অন্তত ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট কম। যেহেতু চাহিদার তুলনায় কম গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে, সেহেতু প্রতিটি এলাকায় অবৈধ গ্রাহকদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে।
শীতকালে গ্যাস সরবরাহে নানারকম সংকট সৃষ্টি হবে, এ বিষয়টি কর্তৃপক্ষও জানে। প্রশ্ন হলো, এমন পরিস্থিতিতে সংকট তীব্র আকার ধারণ করার আগেই সমস্যার সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয় না কেন? গ্যাস সংকটের কারণে শিল্প উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার বিষয়টিও বহুল আলোচিত। গ্যাসের ক্রমবর্ধমান চাহিদার প্রেক্ষাপটে সমস্যার সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এ খাতের দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা দূর করতে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া না হলে নতুন করে নানারকম সংকট সৃষ্টি হবে, যা বলাই বাহুল্য। বিদ্যমান সংকট দূর করতে গ্যাসের নতুন উৎসের সন্ধানে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রচুর অনাবিষ্কৃত গ্যাসক্ষেত্র পড়ে থাকলেও অনুসন্ধান কাজে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি নেই। আমাদের সাগর এলাকায় গ্যাস অনুসন্ধানে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে। বাপেক্সকে আরও শক্তিশালী করা হলে আশা করা যায়, এ প্রতিষ্ঠান দেশবাসীকে গ্যাস খাতে বড় ধরনের সুখবর দিতে সক্ষম হবে।