সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে মাইনাস করাই বিগত সেনা সমর্থিত ১/১১ সরকারের মূল উদ্দেশ্য ছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি নেতারা। তারা বলেছেন, তারই ধারাবাহিকতা চলছে। ১/১১ সরকারের ধারাবাহিক আওয়ামী লীগ সরকার একটি পুতুল সরকারে পরিণত হয়েছে। চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে হ্যামিলনের বংশীবাদক আখ্যা দিয়ে আজ বুধবার এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় দলটির নেতারা সব এ কথা। দলটির নেতারা বলেন, দেশে গণতন্ত্র ও গণতন্ত্রের মাতা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হলে এখনই কৌশল ঠিক করতে হবে। ১/১১‘র সরকারের আমলে ২০০৭ সালে ২ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করে। এর পর থেকে এই দিবসটি বিএনপি কারাবন্দী দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। দিবসটি উপলক্ষে বিএনপির উদ্যোগে এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভা হয়। লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আলোচনায় যুক্ত ছিলেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার আধিপাত্যবাদের পুতুল সরকারে পরিণত হয়েছে। তারা শুধুমাত্র তাদেরই এজেন্ডা এখানে বাস্তবায়িত করছে। তাদের সরিয়ে জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠা করাই হবে আমাদের উদ্দেশ্য-লক্ষ্য। এ লক্ষ্যে আসুন সবাই একসাথে কাজ করি। ’
দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় খালেদা জিয়া অবদানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘দেশনেত্রী একজন ক্যারিসমেটিক লিডার। তিনি হ্যামিলনের বংশীবাদক। রোহিঙ্গারা আসার পর লন্ডন থেকে দেশে আসলেন তিনি। আমরা দেশনেত্রীকে বললাম আপনার একবার রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিজিট করা দরকার। রাজি হলেন এবং কক্সবাজারে গেলেন। পথে পথে লক্ষ লক্ষ মানুষ যাওয়ার সময়ে এবং ফেরার সময়েও। আমার বিশ্বাস এই মানুষগুলোকে সংগঠিত করে আমরা যদি রাজপথে নামতে পারি তাহলে গণতন্ত্র বিরোধী এই সরকারকে সরাতে পারব।’
স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘১/১১ ‘র সরকার দেশে বিরাজনীতিকরণের জন্য এসেছিল। দেশে গণতন্ত্রকে হত্যা করা ও মাইনাস টু’র নামে মাইনাস ওয়ান অর্থাৎ বেগম খালেদা জিয়াকে মাইনাস করাই তাদের উদ্দেশ্য। ’
স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘আপনারা যদি ভালোভাবে বিশ্লেষণ করেন তাহলে দেখবেন, মঈনউদ্দিন-ফখরুদ্দিন সরকারের একই ধারাবাহিকতায় আজকে এই সরকার চলছে। এখন যেটা আমাদের করতে হবে বেগম খালেদা জিয়ার সম্পূর্ণ মুক্তি করতে হবে। বেগম জিয়ার মুক্তি মানে গণতন্ত্রের মুক্তি। আসুন ঐক্যবদ্ধভাবে একেবারে ওয়ার্ড থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত কাজ করি। নেত্রীর মুক্তি ও গণতন্ত্রের মুক্তির ব্যবস্থা করি।’
স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এখনো বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে অনেক বেঈমান রয়ে গেছে যারা শেখ হাসিনা ওয়াজেদকে টিকে থাকতে সাহায্য করছে। শুধুমাত্র সরকারের সংস্থা নয়। আমাদের সেদিকেও একটু খেয়াল রাখতে হবে।’
স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘গণতন্ত্রের মাতা ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্র মুক্ত করতে হলে আমাদের এখনই কৌশল ঠিক করতে হবে। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে না পারলে গণতন্ত্র মুক্ত হবে না। ’
স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনীতির ইতিহাস পর্যালোচনা করলে বার বার একটি জিনিস প্রমাণিত হবে সেটা হচ্ছে তার আপোষহীন রাজনীতি। তিনি বাংলাদেশের স্বার্থের বিষয়ে কোনোদিন আপোষ করেননি-এটাই হচ্ছে সত্যি এবং বাংলাদেশের মানুষ এটাই বিশ্বাস করে আজও।’
বিএনপি মহাসচিবের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরীর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন—স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নজরুল ইসলাম খান,সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।