অনিয়ন্ত্রিত ক্রোধ মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রু, যা মানুষকে তার আত্মীয়-স্বজনের ভালোবাসাসহ বহু জিনিস থেকে বঞ্চিত করে দেয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা মানুষকে আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত করে। কিন্তু কেউ যদি মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ক্রোধ সংবরণ করতে পারে, তার জন্য রয়েছে মহাপুরস্কার। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তোমরা দ্রুত অগ্রসর হও তোমাদের রবের পক্ষ থেকে মাগফিরাত ও জান্নাতের দিকে, যার পরিধি আসমানসমূহ ও জমিনের সমান, যা মুত্তাকিদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।
যারা সচ্ছল ও অসচ্ছল অবস্থায় (আল্লাহর পথে) ব্যয় করে এবং যারা ক্রোধ সংবরণকারী এবং মানুষের প্রতি ক্ষমাশীল, আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন। ’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৩৩-১৩৪)
ইবনে উমার (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য বান্দার ক্রোধ সংবরণে যে মহান প্রতিদান রয়েছে তা অন্য কিছু সংবরণে নেই। ’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪১৮৯)
অনেকে মনে করে, কারো দ্বারা আক্রান্ত হয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া ব্যক্তিত্বহীনতার পরিচায়ক। অথচ হাদিসের ভাষ্যমতে, ক্রোধের বশবর্তী হয়ে কাউকে ঘায়েল করতে পারা বীরত্ব নয়; বরং কঠিন ক্রোধ সংবরণ করে ক্ষমা করতে পারাই বীরত্ব। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘প্রকৃত বীর সে নয়, যে কাউকে কুস্তিতে হারিয়ে দেয়। বরং সেই আসল বীর, যে রাগের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। ’ (বুখারি, হাদিস : ৬১১৪)
পবিত্র কোরআনের শিক্ষা হলো, কারো ওপর রাগ হলে তার সঙ্গে রূঢ় আচরণ না করে, তাকে ক্ষমা করে দেওয়া। তার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা, হয়তো এই ভালো ব্যবহারের কারণে একসময় অন্তরঙ্গ বন্ধুতে পরিণত হবে। এই গুণ যারা অর্জন করতে পারে, কোরআনের ভাষায় তাদের মহাভাগ্যবান বলা হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর ভালো ও মন্দ সমান হতে পারে না। মন্দকে প্রতিহত করো তা দ্বারা, যা উত্কৃষ্টতর, ফলে তোমার ও যার মধ্যে শত্রুতা রয়েছে সে যেন হয়ে যাবে তোমার অন্তরঙ্গ বন্ধু। এ গুণ শুধু তারাই লাভ করে, যারা ধৈর্যশীল, এ গুণ শুধু তারাই লাভ করে, যারা মহাভাগ্যবান। ’ (সুরা হা-মিম সাজদা, আয়াত : ৩৪-৩৫)
এটাই ইসলামের শিক্ষা, এ জন্যই ইসলাম শ্রেষ্ঠ ও মানবিক ধর্ম। মহান আল্লাহ সবাইকে খাঁটি মুসলিম হওয়ার তাওফিক দান করুন।