পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘(কোরআন) অবতীর্ণ করা হয়েছে সুস্পষ্ট আরবি ভাষায়। পূর্ববর্তী কিতাবগুলোতে অবশ্যই এর উল্লেখ আছে। ’ (সুরা আশ-শুআরা, আয়াত : ১৯৫-১৯৬)
অন্যত্র বলা হয়েছে, ‘এটা আমিই অবতীর্ণ করেছি আরবি ভাষায় কোরআন, যাতে তোমরা বুঝতে পারো। ’ (সুরা ইউসুফ, আয়াত : ২)
উল্লিখিত আয়াতদ্বয় থেকে বোঝা যায়, কোরআনের মর্মার্থ বুঝতে হবে আরবি ভাষারীতির আলোকেই।
শুধু বাহ্যিক অর্থ অনুসরণ করে কোরআনের প্রকৃতার্থ অনুধাবন করা যাবে না। আমরা যদি আরবি ভাষারীতি অনুসারে কোরআনের অর্থ অনুধাবন না করি, তবে মুসলিমসমাজে মতানৈক্য দেখা দেবে এবং ভুল ব্যাখ্যার কারণে মুসলিম উম্মাহ বিভ্রান্ত হবে। আল্লামা ইবনে জারির তাবারি (রহ.) বলেন, ‘মুহাম্মদ (সা.)-এর ওপর অবতীর্ণ আল্লাহর কিতাবের অর্থ আরবদের ভাষার অনুকূল হওয়া আবশ্যক। কেননা কোরআনের ভাষাকে তাদের উপযোগী করা হয়েছে। তাদের ভাষাকে সব ভাষার ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দেওয়া হয়েছে। ’ (তাফসিরে তাবারি : ১/১২)
ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন, ‘(কোরআনে) যে ভাষার মাধ্যমে সম্বোধন করা হয়েছে তা ভাষাগুলোর মধ্যে পরিপূর্ণ এবং বক্তব্য প্রকাশে সবচেয়ে বেশি সুস্পষ্ট। এর মাধ্যমে আল্লাহ মানুষের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। যেমন ইরশাদ হয়েছে, ‘এটা আমিই অবতীর্ণ করেছি আরবি ভাষায় কোরআন, যাতে তোমরা বুঝতে পারো। ’ (সুরা ইউসুফ, আয়াত : ২; দরউ তাআরুজিল আকলি ওয়ান-নাকলি : ৫/৩৭৩)
পূর্বসূরি আলেমরা কোরআনের ব্যাখ্যায় মানুষকে বিশেষভাবে সতর্ক করেছেন। ইমাম আহমদ (রহ.) বলেন, ‘বেশির ভাগ মানুষ ‘তাবিল’ (ব্যাখ্যা) ও ‘কিয়াস’ (যুক্তি বা অনুমান)-এর ক্ষেত্রে ভুল করে। তারা ব্যাখ্যার ভুল করে কোরআন সুন্নাহর ক্ষেত্রে, আর অনুমানের ভুল করে যুক্তির ক্ষেত্রে। ’ (মাজমুউল ফাতাওয়া : ৩/৬৩)
আল-মাউসুয়াতুল আকাদিয়া
শাহি মসজিদ, দিল্লি, ভারত